bangla golpo love choti. সুজিতবাবু ডিনারের আয়োজন বেশ ভালো করেছিল, শুয়োয়ের মাংস দিয়ে তৈরি বোলোগ্নেজ লাজানিয়া আর রাশিয়ান স্যালাড, শেষ পাতে টিরামসু আর পর্তুগিজ টারটস। এই ধরনের খাবার ঝিনুকের জন্য একেবারে নতুন। বাইরের দেশের খাদ্যের প্রতি ইন্দ্রজিতের একটু দুর্বলতা আছে তাই রিশু ওর সাথে থেকে থেকে বিভিন্ন খাবার খেয়ে অভ্যস্থ হয়ে গেছে। লাজানিয়া খাওয়ার সময়ে মাংসের স্বাদ পেয়েছিল শালিনী আর ঝিনুক, কিন্তু ইচ্ছে করেই সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে ইন্দ্রজিত। শুয়োরের মাংস খাইয়েছে শুনলে হয়ত ওদের মেরে ফেলত দুই রমণী।
ডিনার শেষে বাড়ি ফেরার পালা। হোটেলের ম্যানেজার সুজিত বাবু কিছুতেই টাকা নেবেন না, অনেক জোরাজুরির পরে শুধু মাত্র কাঁকড়ার দাম নেন তিনি। শালিনী আর ইন্দ্রজিত একটা ট্যাক্সি করে চলে যায়। ঝিনুককে সঙ্গে নিয়ে একটা ক্যাবে করে রিশু বাড়ির পথ ধরে। রাত অনেক, পরের দিন সকালে রিশুর ওপিডি, অন্ধকার ট্যাক্সির পেছনের সিটে রিশু আর ঝিনুক। প্রথম বার যখন দিল্লীতে এসেছিল সেদিন ও এমন এক গভীর রাতে ট্যাক্সির পেছনের সিটে রিশু আর ঝিনুক বসেছিল, সেদিন দুইজনের মধ্যে শত যোজনের ব্যাবধান ছিল।
bangla golpo love
এবারে ট্যাক্সিতে ওঠা মাত্রই ওর গা ঘেঁষে বসে ঝিনুক, রিশুও ইচ্ছে করেই সিটের মাঝখানে ঝিনুকের পাশে চলে যায়। পায়ের সাথে পা ছুঁয়ে যায়, ঊরুর সাথে ঊরু, কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে নব বিবাহিত দম্পতী বসে। রিশু ইচ্ছে করেই বাঁ হাত সিটের পেছনে উঠিয়ে দেয়, হাতের তালু আলতো করে স্পর্শ করে থাকে ঝিনুকের বাঁ কাঁধের ওপরে, খুব ইচ্ছে করছিল ওই থাবা কাঁধে চেপে ধরে কাছে টেনে নিতে।
দুই গ্লাস ওয়াইন, দুটো লারজ পেগ হুইস্কি পেটে যাওয়ার পরে ঝিনুকের ধমনীতে মাতন লেগেছে। কোলকাতায় ওদের পার্টিতে যে মদ খেত সেইসবের চেয়ে এই মদের স্বাদ আর নেশা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওদের পার্টির খাদ্যের বহর এর মতন নয়, ওদের খাবার হত চানাচুর পকোড়া আর বেশি হলে চিলি চিকেন অথবা চিকেন তন্দুরি। দামী স্কচ অথবা বিদেশী ওয়াইন কোনদিন খায়নি, লবস্টার ক্রাব লাজানিয়া এইসব আশাতীত। মদের নেশায় ধিরে ধিরে ওর চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। অন্ধকার ট্যাক্সির পেছনের সিটে বসে শরীর ছেড়ে দেয়, এলিয়ে পরে রিশুর কাঁধের ওপরে।bangla golpo love
তন্বী তরুণী স্ত্রীর নধর দেহের চাপ নিজের বুকের ওপরে অনুভব করে হৃদয় তোলপাড় করে ওঠে রিশুর। কাঁধের ওপরে হাত দিয়ে বুকের কাছে চেপে ধরে ঝিনুককে, ভীষণ নরম আর উষ্ণ ওর প্রেয়সী। ওর মুখের নিচেই ঝিনুকের মাথা, ভীষণ ইচ্ছে করে ওই কালো ঘন চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে ভেসে যেতে।
ঝিনুকের শ্বাসে যদিও মদের গন্ধ কিন্তু ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধের সাথে সেই মদের গন্ধ মিশে ওর নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করে মাতাল করে তোলে। একবার ভেবেছিল বলে, অত ড্রিঙ্ক করোনা না বাড়ি ফিরতে হবে, কিন্তু হৃদয়ের কাছে হার মেনে যায় রিশুর মস্তিস্ক, হৃদয় ওকে বাধা দিয়ে বলে, আজকে ওকে ড্রিঙ্ক করতে দাও হয়ত নেশার ফলে ওর বুকের মধ্যে জমানো ব্যাথা বেড়িয়ে আসবে।
সেই সুমিষ্ট তীব্র মাদক ঘ্রাণের টানে ঝিনুকের দিকে ঝুঁকে নিচু গলায় ডাক দেয়, “এই…”
অর্ধনিমীলিত চোখ তুলে রিশুর দিকে তাকিয়ে নেশা ধরানো কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কিইই…”
রিশুর চোখ জোড়া আটকে যায় ঝিনুকের অর্ধনিমীলিত চোখের পাতার ওপরে, নিচু গলায় ওকে বলে, “তুমি দারুন নাচতে পারো।” bangla golpo love
কথাটা কানে যেতেই চোখ তুলে রিশুর দিকে তাকায় ঝিনুক, মদের নেশার চেয়ে বেশি রিশুর গুরু গম্ভির আওয়াজে নেশায় ওর চোখ জোড়া অর্ধ নিমীলিত হয়ে বুকের ওপরে নেমে আসে, “ধ্যাত…” কোলের ওপরে দুই হাত জড় করে আরো বেশি করে চেপে বসে রিশুর পাশে। একটু থেমে ওকে বলে, “এই শোন নাআ”
মত্ত চঞ্চলা হরিণীর কন্ঠস্বর ওর হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে তোলে, “কি হয়েছে?”
আদুরে কন্ঠে আবদার করে বলে, “আগামী কাল ছুটি নিয়ে নাও না প্লিজ।”
তন্বী তরুণী প্রেয়সীর আবদার শুনে হেসে ফেলে রিশু, “পাগল, এমনিতে হসপিটালে ডাক্তার কম তার ওপরে আগামী কাল আমার ওপিডি।” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “আগামী কাল কি আছে?”
পরের দিন রিতিকার সাথে শপিং করতে যাওয়ার কথা আছে, ভীষণ ইচ্ছে করছিল রিশুর সঙ্গে শপিং করতে যাওয়ার, কিন্তু ছুটি নিতে পারবে না শুনে একটু আহত হয় ঝিনুক। রিশুর বুকের ওপর থেকে একটু সরে এসে মুখ গোমড়া করে বলে, “এই একটু শপিং করতে যেতাম।” একটু ইতস্তত করে বলে, “আমার এক বান্ধবী থাকে দিল্লীতে।” bangla golpo love
এতদিনে ঝিনুকের ব্যাপারে কিছুই জানা হয়নি তাই ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে রিশু। ঝিনুক ওকে বলে, “এমবিএর এক বান্ধবী রিতিকা দিল্লীতেই একটা কোন কোম্পানিতে চাকরি করে, তার সাথে ভেবেছিলাম শপিং করতে যাবো।”
হেসে ফেলে রিশু, “আবার শপিং?”
ঝিনুক মুখ গোমড়া করে বলে, “বাঃ রে একা একা বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগে নাকি?”
রিশু হেসে বলে, “আচ্ছা যেও।” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা, কি করতে চাও তাহলে?”
ঝিনুকের ঝিমুনি ভাবটা থেকে থেকে বেড়ে উঠছে, গাড়ির ঝাঁকুনিতে মাঝে মাঝেই রিশুর বুকের ওপরে মৃদু আছড়ে পড়ছে ঝিনুকের নধর দেহ পল্লব। রিশুর শেষের কথাটা ঠিক ভাবে ওর কানে পৌঁছায়না তাই নাক কুঁচকে আদুরে কন্ঠে ওকে বলে, “বাড়ি বসে বসে বোর হয়ে যাই, জানো।”
ওই ভাবে নাক কুঁচকে আদুরে কন্ঠ শোনার পরে কার মাথা ঠিক থাকে, রিশু ঝিনুকের মুখের ওপরে একটু ঝুঁকে পরে জিজ্ঞেস করে, “চাকরি করতে চাও?” bangla golpo love
মাথা দোলায় ঝিনুক, চাকরি নয় তবে এই বদ্ধ জীবন থেকে ভীষণ ভাবেই মুক্তি পেতে চায়, “হুম…” ওর চোখের পাতা ধিরে ধিরে ভারী হতে শুরু করে দিয়েছে, সেই সাথে একটু ঝিমুনি ভাব ধরেছে মাথায়। হটাত করে রিশুর বুকের ওপরে আলতো করে কুনুইয়ের ধাক্কা মেরে বলে, “তুমি এত কম কথা বল কেন?”
প্রেয়সীর নেশা ধরা গলা শুনে হেসে ফেলে রিশু, “কই কম কথা বলি? আজকে তো তুমি গল্প করনি, তুমি তো একদম চুপ ছিলে।”
রিশুর বাহুপাস থেকে নিজেকে মুক্ত করে ওর দিকে তর্জনী নাড়িয়ে বলে, “মিথ্যে বলবে না একদম, তুমি আমার সাথে একদম গল্প কর না।” কাঁদো কাঁদো চেহারা করে বলে, “তুমি আমাকে একদম বুঝতে চাও না।”
চাঁপার কলির মতন কোমল তর্জনীর আস্ফালন দেখে হেসে ফেলে রিশু, প্রেয়সীর অনুযোগ একদম মিথ্যে নয়। আর চোখে একবার সামনে বসা ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে দেখে। নেশায় মত্ত ঝিনুকের হাবভাব দেখে একটু বিব্রতবোধ করে রিশু, এখুনি শান্ত না করতে পারলে ট্যাক্সির মধ্যেই না কেঁদে ফেলে, “বাড়ি গিয়ে তোমার সব কথা শুনবো।” bangla golpo love
কাঁচুমাচু মুখ করে তর্জনী হেলিয়ে বলে ওর প্রেয়সী, “সত্যি বলছ ত?”
মাথা দোলায় রিশু, “হ্যাঁ রে বাবা বলছি ত শুনবো।”
সুরার নেশায় ঝিনুক ভুলে যায় সামনে বসা রিশুর চরিত্র বেশ গম্ভির প্রকৃতির, ভুলে যায় রিশু ওর স্বামী। ওর হৃদয় ওকে বলে সামনে বসা মানুষ ওর অনেক কাছের লোক যার ক্রোড়ে ঝিনুক চোখ বন্ধ করে মাথা রেখে ঘুমাতে পারে। রিশুর আশ্বাস শুনে মিষ্টি হেসে বলে, “আজ রাতে তুমি ঘুমাবে না, আজ রাতে আমরা কেউই ঘুমাবো না।”
ফাঁদে পরে গেছে রিশু, কিন্তু প্রেয়সীকে শান্ত করা খুব দরকার, “আচ্ছা ঘুমাবো না।”
রিশুর গায়ের ওপরে ঢলে বাজু দিয়ে রিশুর বুকের ওপরে আলতো ধাক্কা মেরে বলে, “আমার না গান গাইতে ইচ্ছে করছে। এই রাত তোমার আমার…”
এই সেরেছে রে, ট্যাক্সির মধ্যে এইভাবে গান শুরু করলে মহামুশকিল। রিশু সঙ্গে সঙ্গে নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে ইশারায় নেশামত্ত ঝিনুক কে চুপ করতে অনুরোধ করে। রিশুর পেশার জন্য ওর ফ্লাটের সবাই রিশুকে বেশ সন্মানের চোখে দেখে, ওর স্ত্রী মদের নেশায় চুড় হয়ে ফ্লাটে ঢোকার সময়ে কেউ যদি দেখে ফেলে বিশেষ করে প্রমথেশ বাবু তাহলে পাড়ায় ঢিঢি পরে যাবে। তবে দুষ্টু মিষ্টি প্রেয়সীর মাতলামি দেখে দুর্নামের ভয় কাটিয়ে ফেলে রিশু। bangla golpo love
আবার ঝিনুকের কাঁধের ওপরে হাত রেখে কাছে টেনে শান্ত করে বলে, “বাড়ি চল তারপরে তোমার গান শুনবো।”
এপাশ ওপাশ তাকিয়ে ট্যাক্সির জানালার বাইরে দেখে রিশুকে জিজ্ঞেস করে, “আর কতক্ষন লাগবে বাড়ি পৌঁছাতে?”
এতক্ষন জানালার বাইরে তাকানোর ইচ্ছে ছিল না রিশু, মত্ত সুন্দরী প্রেয়সীর রুপের সাগরে এমন ভাবেই নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল যে সময়ের আর পথের খেয়াল একদম মন থেকে মুছে গিয়েছিল। জানালার বাইরে একবার তাকিয়ে দেখে উত্তর দেয়, “এই ব্যাস পাঁচ মিনিটে আমরা পৌঁছে যাবো।”
নরম হাত দুটো দয়িতের কোলের ওপরে রেখে, রিশুর বুকের কাছে ঘন হয়ে এসে কুহু রবে বলে, “তুমি ঘুমাবে না, প্রমিজ?”
বাধ্য ছেলের মতন মাথা দোলায় রিশু, “একদম ঘুমাবো না, কিন্তু এখন চুপ।”
কোলের ওপরে চাঁপার কলি আঙ্গুলের পরশে রিশুর তলপেটের পেশি শক্ত হয়ে আসে, তড়িৎ গতিতে ওর মাথার মধ্যে রক্ত এলোপাথাড়ি দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। ওর মাথা আপনা হতেই নেমে আসে ঝিনুকের মুখমন্ডলের ওপরে, লাল রঙের ঠোঁট জোড়ার তীব্র আহবান উপেক্ষা করার মতন শক্তি হারাতে থাকে রিশু। ভীষণ ইচ্ছে কমলালেবুর কোয়ার মতন অধর ওষ্ঠ নিজের ঠোঁটে চেপে ধরে ঝিনুকের বুলি থামিয়ে দেয়। bangla golpo love
বাড়ি না আসা পর্যন্ত চুপচাপ রিশুর কাঁধে মাথা রেখে বুকের কাছে জড়সড় হয়ে পড়েছিল ঝিনুক। রিশুর মনে হয় যেন কোন অচিনপুরীর রাজকন্যের সাথে নৈশ ভ্রমনে দুর দিগন্তে পাড়ি লাগিয়েছে। বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত ঝিনুক কোন কথা বলেনি, রিশুর বাহুডোরে নিজেকে সঁপে দিয়ে নিশ্চিন্ত চিত্তে চুপ করে বসেছিল। ট্যাক্সি থেকে নামার আগে ঘড়ি দেখে রিশু, রাত বারোটা বেজে গেছে।
সেই বিকেলে হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে একবার মায়ের সাথে কথা হয়েছিল, তারপরে বাইরে বেড়িয়ে যাওয়াতে আর ফোন করতে পারেনি। ভেবেছিল ট্যাক্সিতে উঠে মাকে একটা ফোন করবে, কিন্তু ঝিনুকের অনর্গল বকবকানির জন্য আর ফোন করা হয়ে ওঠেনি। সকালেই ফোন করতে হবে, বোন ছাড়া এতক্ষনে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
বাড়ির সামনে ট্যাক্সি দাঁড়াতেই নড়ে চড়ে বসে ঝিনুক। উষ্ণ বাহুডোরে ওর চোখের পাতা ভারী হয়ে এসেছিল, আর কিছুক্ষন হলে রিশুর বুকের ওপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ত। ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে দেয় ঝিনুকের দিকে। বড় বড় কাজল কালো চোখ তুলে রিশুর দিকে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দেয়। নরম হাতখানি হাতের মধ্যে নিয়ে চাপ দেয় রিশু। ঝিনুকের ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি খেলে যায়। bangla golpo love
সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময়ে, চোখের সামনে ভারী নিতম্বের দুলুনি দেখে আর উঁচু হিল পরিহিত ফর্সা পায়ের গোড়ালিতে বাঁধা পাতলা নুপুরের নিক্কনের আওয়াজে রিশুর মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। জ্যাকেট পরা থাকলেও পাতলা শাড়িটা যেমন ভাবে ইতরের মতন ঝিনুকের পেলব দেহ পল্লবের সাথে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে তাতে নধর দেহকান্ডের আঁকিবুঁকি অনায়াসে পরিস্ফুটিত হয়ে পরে রিশুর চোখের সামনে।
মত্ত হস্তিনীর মতন পা ফেলে একের পর এক সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠার সময়ে ঘাড় ঘুরিয়ে তির্যক দৃষ্টি হেনে ওর দিকে তাকিয়ে দেখে ঝিনুক। রিশু চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করে, কি হল? নিচের ঠোঁট দাঁতে কামড়ে দুষ্টুমি মাখানো হাসি দিয়ে ইশারায় বলে, ওই ভাবে তাকাতে নেই।
দরজার চাবি খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে রিশু ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, “ফিলিং টায়ার্ড? (ক্লান্ত লাগছে?)”
মত্ত রমণী চোখের তারায় তির্যক বান হেনে ওর সামনে তর্জনী হেলিয়ে আদেশ করে বলে, “ইউ প্রমিজড মি যে তুমি ঘুমাবে না।”
ঝিনুকের শিশু সুলভ আচরন দেখে হেসে ফেলে রিশু, “আচ্ছা বাবা ঘুমাবো না। যাও আগে ফ্রেস হয়ে নাও।”
সারা শরীর জুড়ে মত্ত ছন্দ তুলে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে ঝিনুক। দরজার আড়াল হয়ে যাওয়ার আগে উঁকি মেরে তাকায় রিশুর দিকে, যেন বলতে চায় তুমি কিন্তু কথা দিয়েছিলে। রিশু নিজের ঘরে ঢুকে বাড়ির পরা জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে।
বিকেলের পর থেকে ঝিনুক কে যত দেখছে তত বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে ওর রূপে, ওর শিশুসুলভ আচরনে ওর হাসিতে ওর মত্ত চলার ছন্দে ওর কাজল কালো চোখের ভাষায় ওর চাঁপার কলি আঙ্গুলের পরশে ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধে ওর এলো চুলের রেশমি পরশে ওর আলতো কুনুইয়ের ধাক্কায় ওর উষ্ণ শ্বাসের ঢেউয়ে। bangla golpo love
বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিফলনের দিকে তাকিয়ে থাকে রিশু।
আয়নার প্রতিফলন ওকে প্রশ্ন করে, ভীষণ চঞ্চল আগুনের লেলিহান শিখার মতন সুন্দরী তোমার তন্বী রূপবতী স্ত্রী। তোমার সামনে দুটো রাস্তা খোলা, তুমি কি এই আগুনে নিজেকে জ্বালাতে প্রস্তুত নাকি এই আগুনকে নিয়ন্ত্রনে আনতে চাও, বেঁধে রাখতে চাও?
মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয় নিজেকে, মায়ের ইচ্ছেতে যেদিন বিয়ে করে এনেছি সেদিন থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি।
ওর উত্তর শুনে হেসে ফেলে ওর প্রতিফলন, নিজেকে মিথ্যে বলছ কেন? এই কয়দিনে কি প্রস্তুতি নিয়েছ? আগুন জ্বালাতে হলে ছোট এক দেশলাই কাঠির ঘর্ষণ যথেষ্ট। তুমি তার কিছুই করনি এতদিনে।
রিশুও হেসে ফেলে, আগুন না হয় নাই জ্বালালাম, বন্ধু হতেই পারা যায়।
অট্টহাসিতে ফেটে পরে ওর প্রতিফলন, মায়ের অতি বাধ্য ছেলে, বন্ধুত্ত পাতানোর জন্য তোমাকে বিয়ে দিয়েছে তোমার মা? যদি ভেবে থাকো যে বন্ধু পাতানোর জন্য বিয়ে দিয়েছে তাহলে সেটাও ত এতদিনে পূর্ণ করনি, তাই না? bangla golpo love
বুক ভরে শ্বাস নেয় রিশু, না তা ঠিক নয়, তবে ওর অনেক কিছুই আমার ঠিক লাগে না।
প্রতিফলন ওকে প্রশ্ন করে, তুমি কি ওকে সেই নিয়ে কোনদিন কিছু বলেছ?
মাথা নাড়ায় রিশু, না বলিনি। তবে এই মদের কথা ধর। ওর ইউরিনে প্রচন্ড আসিডিক দুর্গন্ধ ছিল, মেয়েটা একদম জল খায় না, বিয়ের আগে শরীরের প্রতি নিশ্চয় অনেক অত্যাচার করেছে, যার ফলে এই কচি বয়সে ওর শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে যদিও খুব নগন্য তাও সময় থাকতে সেই সমস্যার প্রতিকার না করলে ভবিষ্যতে প্রকট হয়ে দেখা দিতে পারে। বেশির ভাগ মেয়েদের ইউরিন ইনফেক্সান হয় সময় থাকতে তার ওষুধ নিলে ভালো হয়, এইসব নিয়েই চিন্তা হয়।
আবার অট্টহাসিতে ফেটে পরে ওর প্রতিফলন, তুমি কি ভাবো তোমার প্রেয়সী অন্তর্যামী? তোমার না বলা কথা সব বুঝে যাবে? তুমি এখন ওর সাথে মেশোনি, তুমি ওকে এখন জানতে চাওনি চিনতে চাওনি।
বেশ কিছুক্ষন মাথা নিচু করে থাকার পরে প্রশ্ন করে, ঠিক আছে, সব বুঝলাম, কি করতে বলছ তাহলে?
ওর প্রতিফলন বাঁকা হাসি হেসে ওকে বলে, এত কিছু বলার পরেও তোমাকে বলতে হবে কি করতে হবে? তুমি না তোমার প্রেয়সীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ যে আজকে রাতে ঘুমাবে না, গল্প করবে? bangla golpo love
মাথা দোলায় রিশু প্রতিফলনের কাছে হার মানতে হয় ওকে, হ্যাঁ।
মৃদু হেসে ওর প্রতিফলন ওকে বলে, তাহলে এই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কি করছ? ডানা মেলে ধরার সময় এসে গেছে, তোমার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ করার সময় এসে গেছে, অসীম দিগন্ত তোমাকে হাতছানি দিয়ে আহবান করছে, পাল তোলার মানুষ তোমার পাশেই তোমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে, তুমি কান্ডারি হয়ে সেই তরীর দাঁড়ে বস, ভাসিয়ে দাও তোমার তরী।
ঠিক সেই মুহূর্তে বাথরুমের দরজায় দুম দুম আওয়াজ, সেই সাথে দরজার ওপাশ থেকে ঝিনুকের জড়ানো গলার আওয়াজ, “এই তাড়াতাড়ি কর।”