husband wife romantic golpo শেষের পাতায় শুরু – 20 by Pinuram

bangla husband wife romantic golpo choti. রিশুর চোখের চাহনি দেখে শালিনী হেসে ফেলে, “ভাইয়া, ঝিনুক কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে না।”

শালিনীর কথা শুনে লজ্জায় পরে যায় রিশু, হেসে ওকে বলে, “হটাত বাইরে ডিনার কেন? বাড়িতেই অর্ডার করে দিচ্ছি।”

ইন্দ্রজিত নাছোড়বান্দা, “না না, ও সব হবে না। আমি অলরেডি একটা বড় রেস্টুরেন্টে টেবিল বুক করে ফেলেছি।”

অবাক হয়ে যায় রিশু, “মানে?”

শালিনী হেসে বলে, “সারপ্রাইজ আছে ভাইয়া, তুমি তাড়াতাড়ি স্নান সেরে রেডি হয়ে নাও।” ঝিনুক নিজের শোয়ার ঘরের দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল, ওর দিকে তাকিয়ে শালিনী বলে, “এবারে ঠিক আছে ত? তুমিও রেডি হয়ে নাও।”

রিশু আর ঝিনুকের চোখে চোখে কথা হয়, ঝিনুক জিজ্ঞেস করে, কি করবে। রিশুর কাছ থেকে উত্তর আসে, ও নিরুপায়, সুতরাং তৈরি হতেই হবে। তৈরি হতে হবে শুনে ভীষণ ভাবনায় পরে যায় ঝিনুক, শাড়ি পড়তে নারাজ, একা একা শাড়ি পড়তে জানে না, ভালো সালোয়ার কামিজ বলতে বিশেষ নেই। আলমারি খুলে দাঁড়িয়ে ভাবতে শুরু করে দেয় কি পরা যায়।

শালিনীর পরনে জিন্স শারট আর একটা লম্বা ফারের জ্যাকেট, তার সাথে মিলিয়ে কি কিছু পড়বে? জিন্স শারট ফারের জ্যাকেট ওর কাছে আছে বটে কিন্তু রিশুর সামনে কোনদিন জিন্স পরেনি। রিশুকে শোয়ার ঘরের মধ্যে ঢুকতে দেখে বুকে একটু বল পায় ঝিনুক।

husband wife romantic golpo

খোলা আলমারির সামনে ওকে ওই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই রিশুর বুঝতে পারে যে পোশাকের ব্যাপারে ঝিনুক ধন্দে পরে গেছে। ওর পাশে দাঁড়িয়ে আলমারির ভেতরে একবার চোখ বুলিয়ে বলে, “সেদিন একটা ওফ হোয়াইট জ্যাকেট কিনে ছিলে না?” মাথা দোলায় ঝিনুক, হ্যাঁ। রিশু বলে, “বাইরে কিন্তু অনেক ঠান্ডা, ওটা পরে নিও।”

ঝিনুক প্রশ্ন করে, “আর?”

স্মিত হাসে রিশু, যেকোনো পোশাকেই ঝিনুককে মানায়, ওর সামনে একটু ঝুঁকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কি পছন্দ?”

এতটাই ঝুঁকে এসেছিল রিশুর মাথা ওর মুখের সামনে যে ওর সারা মুখ ভেসে গিয়েছিল রিশুর উষ্ণ শ্বাসে। খানিকটা ইতস্তত করেই নরম গলায় ঝিনুক ওকে জিজ্ঞেস করে, “জিন্স পড়ব?”

জিন্স শুনেই বুকের ভেতরটা উফফ করে ওঠে রিশুর। ছবিতেই ঝিনুককে জিন্স পড়তে দেখেছে, আলমারির মধ্যে আরো অনেক ধরনের সাম্প্রতিক কালের ডিজাইনার পোশাক আসাকে ভর্তি, মাঝে মাঝে ভীষণ ইচ্ছে হয় ওই পোশাকে ঝিনুককে দেখতে।
মৃদু হেসে রিশু সম্মতি দেয়, “হ্যাঁ, পর কে মানা করেছে।” husband wife romantic golpo

আলমারি থেকে জিন্স বার করার পরে নিজের অজান্তেই আচমকা রিশুর বুকের ওপরে হাত রেখে আলতো ধাক্কা মেরে বলে, “এই তুমি স্নানে যাবে না?”

কোনদিন ঝিনুক এইভাবে রিশুকে স্পর্শ করেনি, বাইকে বসার সময়ে ওর কাঁধের ওপরে হাত রাখা ছাড়া আর সেই রবিবার ফুচকা খাওয়ানোর সময় ছাড়া এতদিনে ওকে ছোঁয়নি ঝিনুক। তন্বী সুন্দরী মোহময়ী স্ত্রীর লাজে রাঙ্গা চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যায়। হটাত করেই এইভাবে আদরের ছোঁয়ায় বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে পরে রিশু। এইটুকু ছোঁয়াতেই ঝিনুকের কান লাল হয়ে গেছে, আর ওর সাথে চোখ মেলাতে পারছে না দেখে নিজের ও একটু লজ্জা লাগে।

বুকের ওপরে যেখানে ঝিনুকের হাতের ছোঁয়া লেগেছিল সেখানে ডান হাত চেপে মৃদু হেসে উত্তর দেয়, “এই যাচ্ছি।”

রিশুর ঠোঁটের হাসি দেখে ভীষণ ভাবেই লজ্জিত হয়ে পরে ঝিনুক, ধ্যাত কি যে করে না মাঝে মাঝে, নিচের ঠোঁট দাঁতে কেটে নরম কন্ঠে বলে, “আমি চেঞ্জ করব।”

রিশু বলতে যাচ্ছিল, করে ফেল অন্য কেউ কি আর দেখছে নাকি? লাজুক হেসে নিজের মাথার চুলে আঙ্গুল বুলিয়ে বলে, “আমার জামা কাপড় গুলো নিতে দেবে ত?” husband wife romantic golpo

রিশুর হাসি হাসি চোখের সামনে দাঁড়াতে অক্ষম হয়ে পরে ঝিনুক। নরম পায়ে আলমারি ছেড়ে পেছনে সরে দাঁড়িয়ে মৃদু কন্ঠে বলে, “আচ্ছা তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও।”

আলমারি থেকে একটা সাদা রঙের শারট আর জিন্স বের করার পরে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে বলে, “তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিও।”

আবার সেই সাদা শারট, নাক কুঁচকে একটু ইতস্তত করেই জিজ্ঞেস করে, “আবার সেই সাদা শারট?”

মাথা চুলকায় রিশু, “কি পড়ব তাহলে?”

দু’পা রিশুর দিকে এগিয়ে আসতেই, রিশু আলমারি ছেড়ে সরে দাঁড়ায়। রিশুর শারটের তাকের মধ্যে থেকে একটা লাল আর কালো চেক জামা বার করে বলে, “এটা পর।”

জামাটা ওর খুব প্রিয়, মা অনেক বছর আগে কিনে দিয়েছিল কিন্তু ওই জামা নিয়ে একবার চন্দ্রিকার সাথে মন কষাকষি হওয়ার পর থেকে সেই জামা আর কোনদিন পরা হয়নি। এই জামার ইতিহাস ঝিনুকের অজানা কিন্তু নিজের অজান্তেই মায়ের পছন্দের জামা ওর হাতে তুলে দেওয়াতে আবেগের বশে ওর চোখ জোড়া অল্প ঝাপসা হয়ে আসে। husband wife romantic golpo

ঝিনুকের সামনে অল্প মাথা নুইয়ে হেসে বলে, “জো হুকুম…” ইচ্ছে করছিল গাল দুটি চটকে আদর করে দেয়।

লাজে রাঙ্গা নবোঢ়া ঝিনুক চোখ তুলে তাকায় রিশুর চোখের দিকে, ছোট শব্দটা বলার সময়ে কি ওর গলা কেঁপে গেল নাকি? এই মানুষকে দেখেত মনে হয় না। পরস্পরের চোখের তারা আটকে যায়। ক্ষণিকের জন্য রিশুর মনে হয় ঝিনুককে জড়িয়ে ধরে বুকের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে, পর মুহূর্তে মনে হয় এইভাবে ছুঁতে গেলে যদি আবার যদি কিছু বলে বসে? দরজার বাইরে যদি শালিনী আর ইন্দ্রজিত উপস্থিত না থাকত তাহলে রিশু কোন বাহানা করে ঝিনুকের গাল একটু ছুঁয়ে দেখত।

রোজদিন রাতে খাওয়ার পরে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে ঝিনুক যখন বিছানায় বসে রাতের প্রসাধনি সারে তখন টিভি দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে রিশুর চোখ চলে যায় ওইদিকে। হাতের তালুর মধ্যে ওর দেওয়া সেই অয়েন্টমেন্টটা অতি যত্নে এখন নিজের গালের আঁচড়ের দাগের ওপরে লাগায়। খুব কাছ থেকে না দেখলে সেই দাগ এখন আর বোঝা যায় না যদিও। রিশুর সেই সময়ে একবারের জন্য মনে হয়েছিল ওই সেই আঁচড়ের দাগের ওপরে একটু আঙ্গুল বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, কেন করতে গিয়েছিলে? husband wife romantic golpo

একবার যদি কোনভাবে সেই শয়তান পার্থকে হাতে পায় তাহলে সরবাগ্রে ধর থেকে মাথা আলাদা করবে তারপরে সেই কাটা মাথাকে প্রশ্ন করবে, কেন ওর ঝিনুকের হৃদয় এইভাবে ভেনে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল। জীবনের অর্থ কি শুধু মাত্র টাকা আর শরীর? সময় স্তব্দ হয়ে গিয়েছিল ওদের চোখের তারার মাঝে। বিয়ের দিনের সেই শুভ দৃষ্টি এতদিন পরে এই ফাঁকা ঘরের মধ্যে আলমারির সামনে হয়।

শালিনী এতক্ষন দরজায় দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছিল, ঝিনুকের লাজুক অপ্রস্তুত হাসি আর রিশুর লজ্জা দেখে একটু অবাক হয় সেই সাথে দুই আনকোরা কপোত কপোতীকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, “পুরো রাত কি এখানেই দাঁড়িয়ে টুকুর টুকুর করবে নাকি?”

শালিনীর গলার আওয়াজ পেয়ে রিশু ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে ওর কান আলতো টেনে বলে, “তু বহত বদমাশ হো গ্যায়ি হ্যায়। (তুমি ভীষণ বদমাশ হয়ে গেছ।)”

রিশু নিজের জামা কাপড় নিয়ে স্নান করার জন্য বাথরুমে ঢুকে পরে। অন্যদিনের মতন বাথরুমের রডে ঝিনুকের ভিজে জামা কাপড় দেখে মনে মনে হেসে ফেলে, ঝিনুক না হয়ে প্রজাপতি নাম হলে মনে হয় ভালো হত, সারাদিন মনে হয় গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই কয়দিনে ঝিনুকের জড়তা ভাব অনেকটাই কেটে গেছে, সকালে বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুচকি হাসি দিয়ে হাত নাড়ায়, বিকেলে বাড়ি ফিরলে আর ওর হাত থেকে এপ্রন অথবা ব্যাগ নেওয়ার জন্য হাত বাড়ায়না, নিজের পরিধি সম্পর্কে ভালো ভাবেই সচেতন। husband wife romantic golpo

এই কয়দিনে বাড়িতে শুধুমাত্র বাড়িতে বসে থাকার ফলে ঝিনুকের শরীরে একটু গোলগাল হয়ে গেছে, গাল দুটো বেশ ফুলোফুলো লাল রঙের শিমলার আপেলের মতন মিষ্টি। শুরু থেকেই জানত যে ঝিনুকের পোশাক আশাক অনেক খোলামেলা, আগে তেমন দেখতে ইচ্ছে করত না তবে আজকাল না চাইতেও চোখ চলে যায় ঝিনুকের দিকে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই ঝিনুক পায়ের তোড়া বেশি করে নাড়িয়ে বাজিয়ে ওর সামনে ঘোরাফেরা করে ওর নজর কাড়ার জন্য সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না।

রাতের খাওয়ার পরে যখন সারা বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে যায়, রিশু নিজের ঘরে ঢুকে পরে পড়াশুনা করার জন্য তখন যেন বেশি করে ঝিনুকের এদিক ওদিক চলাফেরা করা চাই। মাঝে মাঝে বই থেকে মাথা উঠিয়ে দেখে, রাতেই যেন ওর সব কাজ মনে পরে, বারান্দা থেকে আগের দিনের শুকনো জামা কাপড় ভেতরে নিয়ে আসা চাই, খাওয়ার টেবিল গোছান চাই, সোফায় আধাশোয়া হয়ে টিভি দেখার সময়েও বারেবারে নড়া চড়া করা চাই, যেন ইচ্ছে করেই করে যাতে ওর কানে নুপুরের নিক্কন বারেবারে প্রতিধ্বনিত হয়। husband wife romantic golpo

স্নান সেরে বেড়িয়ে নিজের জামা কাপড় পরে তৈরি হয়ে নেয় রিশু। শোয়ার ঘরের দরজা তখন বন্ধ, শালিনী আর ঝিনুক ঘরের মধ্যে নিশ্চয় সাজতে ব্যাস্ত।

ইন্দ্রজিত ওর কাঁধ চাপড়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে সব ঠিক ঠাক?”

মৃদু হেসে উত্তর দেয় রিশু, “হ্যাঁ, সব ঠিকঠাক, কি আর হবে।”

ইন্দ্রজিত মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “হানিমুনে কোথায় যাচ্ছিস?”

মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, এখন পর্যন্ত সেই অর্থে কাছাকাছি আসতে পারেনি, “দেখি কবে ছুটি পাই তারপর। পরের মাসে আবার লন্ডন যাওয়ার আছে, সেমিনার আছে।”

চোখ টিপে ইন্দ্রজিত ওকে বলে, “সাথে নিয়ে যা, কি আছে। সেমিনার ও হবে আবার হানিমুন ও হয়ে যাবে।”

সেই বিষয়ে ভেবেছিল তবে আলোচনা করা হয়নি ঝিনুকের সাথে, তাই মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ দেখি কি হয়।” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলত আজকের এই ডিনার পার্টিতে কে কে আসছে?”

ইন্দ্রজিত উত্তর দেয়, “এই হোটেলের ম্যানেজার, সুজিত গোরবোলে, শালিনীর চেনা শোনা। ওর স্ত্রীর পক্স হয়েছিল, প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়েছিল, সাড়ে ছয় মাসে সিজেরিয়ান করতে হয়েছিল না হলে মা মেয়ে কাউকেই বাঁচানো সম্ভব ছিল না। মোটে সাড়ে ছয়শ গ্রাম ওজনের তিন মাস পুরো ইঙ্কিউবেটরে ছিল, বিশেষ করে বাচ্চাটাকে নিয়ে যমে আর ডাক্তারে টানাটানি। সেই থেকেই শালিনীকে খুব মানে, বলতে পারিস ভগবানের মতন।” husband wife romantic golpo

বেশ কিছু পরে ঝিনুককে সঙ্গে নিয়ে শালিনী ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। ঝিনুকের সাজ দেখে বিস্মিত হয়ে যায় রিশু, জিনসের পরিবর্তে পরনে একটা চওড়া পাড়ের ওয়াইন রেড রঙের শাড়ি, চওড়া আঁচলখানি রুপোলি সুতোর কাজে ভর্তি। আশা করেনি যে ঝিনুক এই সাজে সাজবে। ফর্সা কপাল আর দুই বাঁকা ভুরুর মাঝে ছোট একটা লাল টিপ, চোখের পাতা গুলো বেশ লম্বা আর চোখের পাতার ওপরে আবছা লালচে রঙের আইশ্যাডো।

ঠোঁটে গাড় বাদামি রঙ্গে রঞ্জিত, কোমল গাল দুটো পিচ ফলের মতন লালচে, মরালী গর্দানে সজ্জিত একটা সুন্দর সোনার হার, দুই হাতে বেশ কয়েক গাছা সোনার চুড়ি আর সাথে সোনায় বাঁধানো শাঁখা পলা। হারের লকেট দুই পিনোন্নত স্তন যুগলের মাঝে আটকে পরে গেছে। দুই কানে দুটো ঝুমকো দুল।

পরনের লাল রঙের ব্লাউজ অতীব আঁটো হয়ে স্তন জোড়ার আকার অবয়াব অতীব নিখুঁত ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছে। ডান কাঁধের ওপরে একটা শাল আর হাতে একটা জ্যাকেট। পাতলা ঠোঁটের মিষ্টি লাজুক হাসি দেখে চোখ আটকে যায় রিশুর। মাথার চুল একপাশে করে আঁচড়ান আর পেছনে একটা খোঁপার মতন করে বেশ সুন্দর করে বাঁধা। husband wife romantic golpo

শালিনী ঝিনুককে পেছন থেকে আলতো ধাক্কা মেরে রিশুর পাশে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হেসে বলে, “এইবারে একদম হর পার্বতী মনে হচ্ছে। এই একটু পাশাপাশি দাঁড়াও একটা ফটো তুলি।”

হটাত করেই ধাক্কা খাওয়ার ফলে ঝিনুকের কোমল উষ্ণ সুডৌল স্তন জোড়া ভীষণ ভাবেই রিশুর উপরি বাজুর সাথে পিষ্ঠ হয়ে যায়। নিজেকে সামলানোর জন্য রিশুর বাজু আঁকড়ে ধরে ঝিনুক। কোমল চাঁপার কলি আঙ্গুলের স্পর্শে ওর হাতের ওপরে হাত রেখে সামলে নেয় ঝিনুককে। হটাত করেই এইভাবে ধাক্কা খাওয়ার ফলে লজ্জায় ঝিনুকের কান লালিমা রঞ্জিত হয়ে ওঠে।

ঝিনুকের চোখ নেমে আসে ওর বুকের ওপরে, রিশুর দিকে তাকানোর মতন শক্তি ছিল না তার ওপরে আবার সামনে শালিনী আর ইন্দ্রজিত দাঁড়িয়ে। নব বিবাহিতা স্ত্রীর লাজে রাঙ্গা রক্তিম চেহেরা দেখে নিজেও ভীষণ ভাবেই লজ্জিত হয়ে পরে রিশু, পারলে এখুনি যেন ওকে বুকের মাঝে লুকিয়ে ফেলে। husband wife romantic golpo

ইন্দ্রজিত হাসিতে ফেটে পরে, “ইসসস কি লজ্জা দেখো ঝিনুকের।”

রিশু মৃদু হেসে ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “তুই থামবি নাকি এখানেই আমরা দাঁড়িয়ে থাকব?”

শালিনী মোবাইলে ওদের কয়েকটা ছবি তোলার পরে হেসে বলে, “চল চল বেড়িয়ে যাক না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।”

গাড়িতে ওঠার আগে গায়ে জ্যাকেট পরে নেয় ঝিনুক, ঠান্ডা হয়ত সহ্য হয়ে যেত কিন্তু রিশুর দিকে তাকিয়ে ওর অনুল্লেখিত আদেশ বুঝতে অসুবিধে হয় না। ওর ঠান্ডা লাগুক অথবা কোন প্রকার কষ্ট হোক সেটা রিশু কোনমতেই চায়না। বাইকে বসলে বসার আগেই ওকে কানে মাথায় শাল জড়িয়ে বসতে হয়। ইন্দ্রজিত নিজের গাড়ি আনেনি সুতরাং উবের ক্যাবে করেই ওদের হোটেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হয়। সামনের সিটে ইন্দ্রজিত আর পেছনের সিটে ঝিনুককে মাঝখানে বসিয়ে দুইপাশে রিশু আর শালিনী।

বিয়ের দিন ভোররাতে বাড়ি ফেরার সময়ে এইভাবে পাশাপাশি বসেছিল ওরা তারপরে আর কোনদিন এইভাবে পাশাপাশি বসা হয়নি ওদের। রিশুর পায়ের সাথে মাঝে মাঝেই ঝিনুকের পা লেগে যাচ্ছিল, সিট ছোট হওয়ার ফলে চেপে বসতে হয়েছিল ওদের যার ফলে ঝিনুক আরো বেশি করেই রিশুর গায়ের দিকে সরে এসেছিল। রিশু ইচ্ছে করেই সিটের পেছনে বাঁ হাত উঠিয়ে দিয়ে ঝিনুকের বাম কাঁধের গোলের ওপরে আলতো করে ধরে রেখেছিল। husband wife romantic golpo

কাঁধের সেই স্পর্শ যদিও জ্যাকেট ভেদ করে ঝিনুকের ত্বকে পৌঁছায়নি তাও ঝিনুকের মনে হয়েছিল যেন রিশু ওকে আঁকরে ধরে রয়েছে বুকের কাছে। খুব ইচ্ছে করছিল সেই অন্ধকার ক্যাবের পেছনের সিটে রিশুর চওড়া বুকের ওপরে মাথা রেখে চোখ বুজে হৃদস্পন্দন শোনার। সেই প্রবল ইচ্ছেটা অতি কষ্টে দমন করে কোলের ওপরে হাত রেখে চুপচাপ বসে ছিল।

বুকের ভেতরে এক অদ্ভুত অনুভুতি, শেষ গন্ডি উলঙ্ঘন করার এক প্রবল প্রবৃত্তি জেগে ওঠে রিশুর বুকের মাঝে। মাঝে মাঝেই ঝিনুকের মাথা ওর প্রায় নাকের পাশে এসে যায় সেই সাথে ঝিনুকের গায়ের মিষ্টি গন্ধে ওর নাক ভরে ওঠে।

গাড়িতে বসে ঝিনুকের কানে ফিসফিস করে জিজ্জেস করে রিশু, “হটাত শাড়ি পড়তে গেলে? বলছিলে যে জিনস পড়বে?”

কাঁধের ওপরে রিশুর আঙ্গুলের চাপ অনুভব করতেই বুকের মাঝের ধড়ফড়ানি বেড়ে ওঠে ঝিনুকের। হটাত করে এইভাবে জিজ্ঞেস করবে সেটা ভাবতে পারেনি, কথা বলতে গিয়ে গলা অবশ হয়ে আসে ওর। কোনমতে সেই অনুভুতি সামলে উত্তর দেয়, “ওই এমনি।” ভীষণ ভাবেই জানতে ইচ্ছে করছিল যে ওকে কেমন দেখতে লাগছে। husband wife romantic golpo

কানের কাছে মাথা নামিয়ে আনার ফলে ঝিনুকের শরীরের মাদকতাময় ঘ্রাণ ওর নাকের মধ্যে প্রবেশ করে ওর মাথার মধ্যে তান্ডব শুরু করে দেয়। গাড়িতে অন্য কেউ না থাকলে ড্রাইভারকে হয়ত বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আদেশ দিত রিশু। ঠোঁট জোড়া ভীষণ ভাবেই ওকে কাছে ডাকছে, ভীষণ মায়াবী আঁখি জোড়া ওর দিকে দেখেও দেখতে পারছে না লাজে। একবার মনে হয়েছিল, গায়ের সব শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।

নিঙরে পিষে একাকার করে ফেলে তন্বী তরুণী উদ্ভিন্ন যৌবনা স্ত্রীকে। শাড়ি পরিহিত ঝিনুককে যত দেখে তত বেশি মুগ্ধ হয়ে যায় রিশু, বিয়ের দিনে ঠিক ভাবে তাকিয়ে দেখেনি তারপরে যতবার দেখেছে ততবার ঝিনুক সালোয়ার কামিজ পরেছে।

ঝিনুকের কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে, “শাড়ি পড়বে সেটা সত্যি ভাবতে পারিনি। ভীষণ সুন্দরী লাগছে তোমাকে…” সেই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে আর চোখ ফেরাতে পারছে না।

প্রেমের বারিধারায় ঝিনুকের চোখ জোড়া ঝাপসা হয়ে যায়। husband wife romantic golpo

প্রথমে জিনস পড়তে ইচ্ছে করেছিল ওর কিন্তু রিশু সাথে প্রথমবার কোন বড় রেস্তোরাঁতে ডিনারের জন্য বেড়িয়েছে সেই ভেবেই শাড়ি পড়েছিল। শালিনী সাহায্য না করলে শাড়ির কুঁচি আর আঁচল ঠিক ভাবে ভাঁজ করতে পারত না, এই নিয়ে শাড়ি পরার সময়ে বেশ হাসাহাসি হয় ওর আর শালিনীর। শালিনীকে দেখে মনেই হয়নি যে এরা অচেনা, অতি সহজেই মিশে গিয়েছিল ওর সাথে। ওকে জিজ্ঞেস করেছিল রিশুর কথা, নিপুন ভাবেই সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছিল ঝিনুক।

নিজেদের সম্পর্কের ব্যাপারে বাইরের কারুর সামনে উজাগর করতে একদম ইচ্ছুক নয়, হয়ত হতে পারে যে এখন পর্যন্ত ওদের মাঝের বরফের দেয়াল গলেনি তবুও কোনদিন রিশু ওর সাথে খারাপ ব্যাবহার করেনি। এই শাড়িটা কে দিয়েছিল সেটা মনে নেই আর কখন নিজের সুটকেসে গুছিয়েছিল সেটাও আর ওর মনে নেই। নরম গালের ওপরে রিশুর উষ্ণ শ্বাসের ঢেউ আর কানের মধ্যে ওর সৌন্দর্যের প্রশংসা শুনে মাতাল হয়ে যায় ঝিনুক, খুব ইচ্ছে করে ওই বুকের ওপরে মাথা রাখতে, হয়ত গাড়িতে কেউ না থাকলে রিশুর বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে নিত। husband wife romantic golpo

নিচু গলায় উত্তর দেয় ঝিনুক, “শালিনী একটু হেল্প করল তাই।”

রিশু জিজ্ঞেস করে, “এর আগে ত এই শাড়িটা দেখিনি?”

মৃদু স্বরে উত্তর দেয় ঝিনুক, “ছিল একটা আমিও ঠিক জানতাম না।”

ঝিনুক মনে মনে বলে, হ্যাঁ কত যেন ওর আলমারি ঘেঁটে দেখেছে রিশু, নিজেও জানত না যে এই শাড়িটা আছে, হটাত করেই সুটকেস থেকে একটা টপ বার করার সময়ে চোখে পরে এই শাড়ি। এখন কিছু কিছু জামা কাপড় ওর সুটকেসে আছে, সম্পূর্ণ ভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি নিজের গাফিলতির জন্য।

রাস্তায় গাড়ির জ্যামের ফলে হোটেল পৌঁছাতে বেশ দেরি হয়ে যায় ওদের। ওরা হোটেলে প্রবেশ করা মাত্রই ম্যানেজার, সুজিত নিজে এসে ওদের অভ্যর্থনা করে। এই হোটেলে এর আগেও বন্ধুদের সাথে ডিনারে এসেছে রিশু, তবে ঝিনুকের জন্য এইরকম হোটেলের রেস্টুরেন্টে প্রথমবার। সুজিত ওদের নিয়ে লিফটে করে ছাদে নিয়ে যায়। হোটেলের ছাদে সুইমিং পুলের পাশে ওদের জন্য আলাদা করে জায়গা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যেহেতু ম্যানেজার শালিনীর পরিচিত তাই ওদের আপ্যায়ন অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। husband wife romantic golpo

সুইমিং পুলের একপাশে এক জায়গায় কাঠ জ্বালিয়ে একটা ছোট বনফায়ার তৈরি করা আর তার দুইপাশে বেশ বড় দুটো সোফা পাতা। সোফার পাশে দুই দিকে ছোট ছোট সাউন্ড বক্সে বেশ মৃদু সঙ্গীত বেজে চলেছে। মাথার ওপরে খোলা আকাশ, বেশ উঁচু বিল্ডিং হওয়ার ফলে দিল্লীর অনেক দুর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ছাদ থেকে। একটু কুয়াসা আর গাড়ির ধোঁয়ায় এক আবছা আবরণ চারপাশে ছড়িয়ে, একটু দূরে রাস্তার ওপরে সারি সারি গাড়ির আলো দেখা যাচ্ছে। ঝিনুক এই সব দেখে অবাক হয়ে রিশুর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে, ওর কাছে এইসব একদম নতুন।

সুজিত একটা বেশ বড় ফুলের তোড়া নিয়ে এসে রিশু আর ঝিনুকের হাতে তুলে দিয়ে হাত মিলিয়ে বলে, “আপনাদের মতন এতবড় বড় ডাক্তারদের আথিতিয়তা করা সৌভাগ্যের ব্যাপার।”

ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে ঝিনুক বেশ বিব্রতবোধ করে। ঝিনুকের বিব্রতবোধ কাটিয়ে রিশু সুজিতের সাথে আময়িক হেসে হাত মিলিয়ে বলে, “উই ডু জাস্ট আওয়ার ডিউটি, (আমরা শুধু মাত্র নিজেদের কর্তব্য করি।)” ইন্দ্রজিতের দিকে দেখে রিশু বলে, “সো দিস অয়াজ ইউর আইডিয়া?” husband wife romantic golpo

ইন্দ্রজিত মাথা নাড়ায়, “না রে আমার নয়, শালিনীর আইডিয়া।”

শালিনী ঝিনুককে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে, “হাউ ইজ দ্যা সারপ্রাইজ?”

ঝিনুক কি বলবে ভেবে পায়না, একবার রিশুর দিকে দেখে উত্তর দেয়, “সত্যি অবাক করে দিয়েছ।”

শালিনী ঝিনুককে বলে, “আমার বাড়িতে আমরা দুই বোন, ভাই বলে কেউ নেই, এই ডাক্তারি পড়তে এসে ভাইয়া কে পেয়েছি।” রিশুর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে ঝিনুককে বলে, “ওর ওপরে অনেক অত্যাচার করেছি।”

রিশু ওর কথা শুনে হেসে ফেলে, “এই সময়ে আবার শুরু হয়ে যেয় না যেন।”

চন্দ্রিকার ঘটনার আসল ব্যাখ্যা ঝিনুকের জানা নেই, তাই একবার রিশুর দিকে তাকিয়ে দেখে আর একবার শালিনীর দিকে তাকিয়ে দেখে।

ইন্দ্রজিত ওর অবাক মুখবয়াব দেখে হেসে ফেলে, “তুমি ওদের কথা ছাড়ো বস বস।”

একটা সোফায় পাশাপাশি রিশু আর ঝিনুক আগুনের অন্যপাশের সোফায় ইন্দ্রজিত আর শালিনী বসে পরে। খালি ছাদ পাশেই সুইমিং পুল, চারপাশ থেকে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে আসছে সেই সাথে সামনে গনগনে কাঠের আগুনের তাপ এক ভিন্ন ধরনের উত্তাপ জাগিয়ে তোলে রিশু আর ঝিনুকের মাঝে। পাশে রাখা সাউন্ড বক্সে নতুন হিন্দি সিনেমার গান একটানা বেজে চলেছে। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে পরনের জ্যাকেট একটু বেশি করে গায়ে জড়িয়ে নেয় ঝিনুক। husband wife romantic golpo

ঝিনুক অবাক চোখে চারপাশে তাকিয়ে দেখে, মাথার ওপরে খোলা আকাশ, সুইমিং পুলের অন্যপাশে কাঁচের দেয়ালের পেছনে রেস্টুরেন্ট, বছরের শেষের দিকের দিনে রেস্টুরেন্টে বেশ ভিড় সেই তুলনায় ওদের এই আয়োজন বেশ রোমান্টিক। শালিনী আর ইন্দ্রজিত না থাকলে হয়ত রিশুর বাজু জড়িয়ে শরীরের উত্তাপ গায়ে মাখিয়ে বসে থাকত।

রিশু একটু ঘন হয়ে বসে ঝিনুকের পাশে বসে জিজ্ঞেস করে, “ঠান্ডা লাগছে নাকি?”

মিষ্টি হেসে মাথা দোলায় রমণী, “না না ঠিক আছে, আগুনের তাপে বেশ ভালোই লাগছে।”

সুজিত কিছুক্ষন পরে হাতে একটা বোতল নিয়ে এসে ঝিনুককে দেখিয়ে বলে, “এটা আমার তরফ থেকে আপনার জন্য, স্যাটু দু বোরদে সেভেন্টি থ্রি।”

কলেজে থাকতে ঝিনুক মদ খেয়েছে ঠিক তবে ওর দৌড় ওই কয়েক পেগ হুইস্কি অথবা ভদকা। সুজিতের কথা বুঝতে না পেরে অবাক চোখে রিশুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “এটা কি?”

রিশু ওকে বুঝিয়ে বলে, “এটা ড্রাই ফ্রেঞ্চ ওয়াইন।” তারপরে সুজিতের দিকে তাকিয়ে ভদ্রতার খাতিরে বলে, “এতসব কেন করতে গেলেন?”

সুজিত আময়িক হেসে শালিনীর দিকে দেখে রিশুর প্রশ্নের উত্তরে বলে, “শালিনী ম্যাডাম আমাদের জন্য যা করেছেন তার জন্য সব কিছু দিতে পারি। ম্যাডাম না থাকলে আমার স্ত্রী আর মেয়ে কেউই হয়ত বাঁচত না। আমরা এক সময়ে সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম…” কথাটা বলতে বলতে গলা ধরে আসে সুজিতের। husband wife romantic golpo

শালিনী সোফা ছেড়ে উঠে সুজিতের হাত ধরে বলে, “এমন করে কেন বলছেন, ওটা আমাদের কর্তব্য আমাদের কাজ।”

সুজিত ধরা গলায় বলে, “ম্যাডাম আপনি ভগবান।”

সুজিত দুইজন ওয়েটারকে ডেকে বলে, “দিজ আর মাই গেস্ট, এদের আপ্যায়নে যেন কোন ত্রুটি না হয়। যাও লবস্টার নিয়ে এস।”

এবারে শালিনীর অবাক হওয়ার পালা, “এরপরে লবস্টার?”

সুজিত আময়িক হেসে বলে, “হ্যাঁ, গত কাল চারটে ক্রাব এসেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে, খেলে বলবেন।”

ইন্দ্রজিত বলে ওঠে, “হ্যাঁ হ্যাঁ একটা ক্রাব, সিঙ্গেল মল্টের সাথে দারুন জমবে।”

রিশু চোখ পাকিয়ে ইন্দ্রজিতের দিকে দেখে বলে, “তুই কি হার্ড ড্রিঙ্কস নিবি?”

ইন্দ্রজিত হেসে বলে, “কত ইচ্ছে ছিল তোর বিয়েতে পুরো আউট হয়ে নাচব, সেটা আজকে হয়ে যাক। লবস্টার ক্রাব হোয়াইট ড্রাই ওয়াইন আর স্কচ, আজকের রাত মনে হচ্ছে এই হোটেলেই রুম বুক করতে হবে।”

সুজিত বাবু হেসে ফেলেন, “এট ইওউর সার্ভিস।”

শালিনী ইন্দ্রজিতকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “এই ডিনার কিন্তু ঝিনুকের জন্য, ওকেই চয়েস করতে দাও।” husband wife romantic golpo

ঝিনুক হাঁ করে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে, সি ফুড অর্থাৎ সামুদ্রিক মাছ বলতে কোলকাতার মাছের বাজারে যা পাওয়া সচারাচর পাওয়া যায় তার বেশি কিছুই খায়নি। এই লবস্টার আর অস্ট্রেলিয়ান ক্রাব কোনদিন চোখেও দেখেনি। একটু বিব্রতবোধ নিয়েই রিশুকে প্রশ্ন করে, “এ গুলো কেমন খেতে?”

রিশু ওর মনের ভাব বুঝে ওকে জিজ্ঞেস করে, “লবস্টার অনেকটা চিংড়ি মাছের মতন খেতে, আর ক্রাব ও ভালোই খেতে। তোমার এলারজি নেই ত?”

গলদা চিংড়ি অনেক খেয়েছে, তাই উৎফুল্ল হয়ে বলে, “না না এলারজি নেই, নতুন ডিস ট্রাই করতে পারি।”

একজন ওয়েটার ওদের জন্য দুটো প্লেটে দুটো বড় লবস্টার সাজিয়ে নিয়ে ওদের সামনে রেখে দেয়। অন্য ওয়েটার চারটে গ্লাসে ওদের জন্য ওয়াইন ঢেলে দেয়। মদের প্রতি রিশুর কোনদিন আসক্তি ছিল না, বন্ধুদের চাপে না পরলে কোনদিন মদের গ্লাস মুখে তোলে না। ওয়াইনের গেলাস তুলে সবাই চিয়ার্স করে ওয়াইন গ্লাসে হাতেই ধরে থাকে ঝিনুক। এত দামী মদ কোনদিন খায়নি, তার ওপরে রিশুর পাশে বসে মদের গ্লাস হাতে মদ খাবে ভেবেই বেশ বিব্রতবোধ করে ঝিনুক। husband wife romantic golpo

ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে ওর মনের দ্বিধা বুঝতে পারে রিশু, মনে মনে হেসে ফেলে, লাজ দেখ মেয়ের, যেন কোনদিন ভাজা মাছ উলটে খায়নি এমন ভাব দেখাচ্ছে। গ্লাসে একটা ছোট চুমুক দিয়ে ইশারা করে ঝিনুকের দিকে, চুমুক দিতে পারো অসুবিধে নেই। স্বামীর সম্মতি পেয়ে ছোট গ্লাসে চুমুক দেয়। খাওয়া দাওয়া শুরু হয় তার সাথে ওদের গল্প শুরু হয়। ইন্দ্রজিত, শালিনী আর রিশু নিজেদের কলেজের গল্প হসপিটালের গল্প শুরু করে দেয়, ঝিনুকের এর মধ্যে বিশেষ কিছুই গল্প করার থাকে না।

ঝিনুক চুপচাপ মাঝে মাঝে ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দিয়ে লবস্টার খায় আর ওদের দেখে ভদ্রতার খাতিরে একটু মৃদু হাসি দেয়। কথায় গল্পে ইন্দ্রজিত আর শালিনীর গ্লাস শেষ হয়ে যায়, রিশুর ওয়াইনের গ্লাস তখন অর্ধেকও পৌঁছায়নি। ঝিনুকের গ্লাসও শেষ দেখে ইন্দ্রজিত ওর গ্লাসে ওয়াইন ঢেলে দেয়। ঝিনুক প্রথমে একটু বারণ করলেও রিশু মাথা দুলিয়ে ইশারায় সম্মতি দেয়, অসুবিধে নেই খেতে দোষ নেই। ওয়াইনের দ্বিতীয় গ্লাস শেষের পরে, ক্রাবের অর্ডার করে ইন্দ্রজিত সেই সাথে গ্লেনলিভেট স্কচ। husband wife romantic golpo

রিশুর ওয়াইনের গ্লাস প্রায় শেষের দিকে, দেখে ইন্দ্রজিত ওকে মজার ছলেই জিজ্ঞেস করে, “কি রে আজকে শেষ পর্যন্ত মেরেই দে।”

মাথা দোলায় রিশু, “না রে ওটা আমার সহ্য হয় না জানিস।”

শালিনী ওকে বাঁচিয়ে দিয়ে বলে, “তুমি জানো ভাইয়া খায় না তাও কেন জোর করছ?” তারপরে ঝিনুকের দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তোমার হুইস্কি চলে নাকি?”

নিচের ঠোঁট দাঁতে কামড়ে লজ্জার মাথা খেয়ে মাথা দোলায় ঝিনুক, “মাঝে মাঝে চলে।”

সেই কথা শুনে হাসিতে ফেটে পরে ইন্দ্রজিত, রিশুর দিকে আঙ্গুল তুলে বলে, “আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া।”

রিশু ঘাড় ঘুরিয়ে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “ইউ ক্যান এঞ্জয়, (তুমি আনন্দ করতে পারো) আমার আপত্তি নেই।”

ওয়েটার ওদের গ্লাসে একটা লারজ পেগ বানিয়ে চলে যায়। কাঁকড়ার টুকরোর সাথে হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দেয় ইন্দ্রজিত, এক চুমুক দিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে ঝিনুক আর শালিনীকেও ইশারায় জানিয়ে দেয় গ্লাসে চুমুক দিতে। গ্লাস হাতে ঝিনুক ভীষণ ভাবেই অপ্রস্তুত পরিস্থিতিতে পরে যায়, ও ভেবেছিল যে হয়ত রিশু ওর সাথে সঙ্গ দেবে কিন্তু রিশুর হাতে ওয়াইনের গ্লাসের বদলে একটা মকটেলের গ্লাস দেখে ভীষণ বিব্রতবোধ করে। husband wife romantic golpo

রিশু চোখের কোনা থেকে ঝিনুককে দেখে আর মনে মনে হাসে, দুই গ্লাস ওয়াইনের পরেও এই মেয়ে হুইস্কি খেতে চাইছে, কোলকাতায় থাকাকালীন তাহলে কি না বাউন্ডুলেপনা করেছে তার ইয়াত্তা নেই। হোক মাতাল, সেটাই চায় রিশু, হয়ত মাতাল হলে ওদের মাঝের আগল ভেঙ্গে যাবে, যে দুর্ভেদ্য দেয়ালের দুইপাশে দুইজনে দাঁড়িয়ে হয়ত সেই দেয়াল আর থাকবে না।

এক পা এক পা করে এগোতে গেলে অনেক দেরি, একটা ছোট দেশলাই কাঠির ঝলকানির খুব দরকার ওদের মাঝের এই আগুন জ্বালানোর জন্য। ওদের বসার জায়গার মাঝ খানে যে আগুন জ্বালানো হয়েছিল একজন লোক এসে সেই আগুনে আরো কয়েকটা কাঠের গুড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে চলে যায়।

ঝিনুকের দ্বিধাবোধ কাটিয়ে সহজ হওয়ার জন্য ওকে বলে, “আরে ওটা কি শুধু দেখবে নাকি?”

গলা শুকিয়ে আসে ঝিনুকের, “না মানে, তুমি নেবে না?”

মাথা নাড়ায় রিশু, “না, আমার এইসবের গন্ধ একদম সহ্য হয় না।”

ঝিনুক মুখ গোমড়া করে হুইস্কির গ্লাস টেবিলে রেখে দিয়ে বলে, “তাহলে আমিও খাবো না।”

ইসস, তোমার এই অনুরাগের ছোঁয়ায় মরতে রাজি আমি। মনের মধ্যে গানের কলি জেগে উঠেছিল, হয়ত পরিস্থিতি অন্য হলে সেই গান গেয়ে ফেলত রিশু। রাগ যে তোমার মিষ্টি অনুরাগের চেয়ে সাধ করে যে তোমায় রাগাই ওগো সোনার মেয়ে। husband wife romantic golpo

ঝিনুকের কাঁধে কাঁধ দিয়ে আলতো ধাক্কা মেরে মজার ছলে বলে, “তোমার খাওয়াতেই আমার খাওয়া হয়ে যাবে।”

নিচের ঠোঁট কামড়ে লাজুক হেসে চোখ রাঙ্গিয়ে প্রশ্ন করে, “আচ্ছা তাই নাকি? সেটা কেমন করে হবে?”

রিশু ওর কানে কানে ফিসফিস করে বলে, “সেদিন ফুচকা খেলে যেমন ভাবে ঠিক তেমন ভাবেই।” রিশুর ঠোঁটে যেন সেদিনের ঝিনুকের চাঁপার কলি আঙ্গুলের পরশ এখন লেগে রয়েছে এমন ভাব দেখিয়ে ঠোঁটের ওপরে আঙ্গুল বুলিয়ে নেয়।

ওই ভাবে ঠোঁটে আঙ্গুল বুলাতে দেখে সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠে ঝিনুকের, ইসস কি শয়তান দেখ, “সেদিন আর একটু হলে ত আমার আঙ্গুল খেয়ে ফেলতে।”

খেতে আর দিল কোথায়, চারপাশে যা লোকজনের ভিড় ছিল সেদিন না হলে শুধু আঙ্গুল নয়, ওই মিষ্টি মেয়েটাকে আদর করে পাগল করে খেয়ে ফেলত রিশু, “কামরাতে আর দিলে কোথায় বল।” মুচকি হেসে ঝিনুককে বলে।

শালিনী হাসিতে ফেটে পরে ওদের প্রেমালাপ দেখে, গান গেয়ে ওঠে ওদের দিকে তাকিয়ে, “রাত বাকি বাত বাকি, হোনা হ্যায় জো হো জানে দো… ”

হুইস্কির গ্লাস দুই ঢোকে শেষ করে ইন্দ্রজিত হো হো করে হেসে বলে, “তোদের দেখে আবার প্রেম…”

শালিনী সঙ্গে সঙ্গে ইন্দ্রজিতের পিঠের ওপরে একটা চড় মেরে বলে, “আই উইল কিল ইউ নাই (তাহলে আমি মেরে ফেলব।)” husband wife romantic golpo

গ্লাস শেষ হতে না হতেই আরো এক লারজ পেগ সোজা গলায় ঢেলে ইন্দ্রজিত শালিনীকে জড়িয়ে ধরে বলে, “ডারলিং প্রেম আবার তোমার সাথেই করব।”

গ্লাস শেষ করে উঠে দাঁড়ায় শালিনী, ঝিনুকের হাত ধরে বলে, “ওয়ানা ডান্স? লেটস হিট দ্যা ফ্লোর। (নাচতে চাও? চল নাচি)।”

ইন্দ্রজিত ওয়েটারকে ডেকে পার্টির উপযুক্ত হিন্দি গান চালাতে অনুরোধ করে। গ্লাসের বাকি হুইস্কি গলায় ঢেলে শালিনীর সাথে সোফা ছেড়ে উঠে পরে ঝিনুক। জ্যাকেট খুলে আঁচল খানি কোমরে গুঁজে ফেলার ফলে ফর্সা নরম তুলতলে পেটের খানিক অংশ বেড়িয়ে পরে। আঁচল খানি সামনের দিকে উঁচিয়ে থাকা আঁটো ব্লাউজে ঢাকা দুই উন্নত স্তনের মাঝে নিয়ে কোমরে পেচিয়ে গুঁজে নেয়। শাড়ির কুঁচি নাভির বেশ নিচে বাধার ফলে সুগভীর নাভি খানি অনায়াসে দেখা যায়।

সারা অঙ্গে ছন্দ তুলে আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে পরে সুন্দরী ঝিনুক। চোখে তারায় হাজার বাতির ঝলকানি হেনে তাকায় রিশুর দিকে। রিশু জুলুজুলু চোখে মত্ত হরিণীর হাঁটার ছন্দের দিকে নিস্পলক চোখ তাকিয়ে থাকে। গানের তালে ওর পা নাচতে শুরু করেছিল কিন্তু কোনদিন নাচেনি তাই আর সোফা ছেড়ে ওঠেনা। husband wife romantic golpo

দুই গ্লাস ওয়াইনের পরে এক গ্লাস হুইস্কির লারজ পেগ ঝিনুকের শিরা উপশিরায় নেশার মাতন জাগিয়ে তুলেছে। শালিনীও গায়ের জ্যাকেট খুলে ফেলে গানের তালে তালে নাচতে শুরু করে দেয়। সেই সাথে ধিরে ধিরে তাল মেলায় ঝিনুক। ওর দুই হাত মাথার ওপরে উঠে যায়, সারা শরীর সাপের মতন এঁকে বেঁকে মত্ত ছন্দে নাচতে শুরু করে ঝিনুক।

ইন্দ্রজিত গ্লাস হাতে সোফা ছেড়ে উঠে রিশুর পেছনে এসে দাঁড়িয়ে বলে, “ইউ আর আ ড্যাম লাকি গাই, (তুই অনেক ভাগ্যবান)। কি ভেবে এখন পিছিয়ে আছিস জানি না, তবে একে হারাস না।”

শালিনী আর ঝিনুক গানের তালে নাচে মেতে উঠেছে। সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ঝিনুক আর শালিনীর দিকে দেখে। উচ্চ গানের তালে দুই নারী সব কিছু ভুলে নেচে চলেছে। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে মৃদু হেসে ইন্দ্রজিতের কথার উত্তরে বলে, “কেউ কি আর ইচ্ছে করে কিছু হারাতে চায় রে?”

শেষের পাতায় শুরু – 19 by Pinuram

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল / 5. মোট ভোটঃ

কেও এখনো ভোট দেয় নি

3 thoughts on “husband wife romantic golpo শেষের পাতায় শুরু – 20 by Pinuram”

  1. @shontu
    বেশি খেয়ে এইতো সেদিন
    বেহুশ হলো ভজা
    অল্প অল্প খেলে পাবে
    অনেক বেশি মজা

    Reply

Leave a Comment