bangla valolagar golpo choti. রাত প্রায় সাড়ে নটা। বিকেলের দিকে একবার মায়ের সাথে কথা হয়েছিল, মা বলছিল কোন এক বান্ধবীর মেয়ের বিয়ে তাই সেই বাড়িতে যাবে। এতদিন দিল্লীতে থেকে দিল্লীর ঠান্ডা অনেকটাই গা সওয়া হয়ে গেছে। কাজের লোক রাতের খাওয়া বানিয়েই গিয়েছিল, খাওয়া সেরে বসে বসে টিভি দেখছিল। একটু ঘুম ঘুম পাচ্ছে, কাল ভোরবেলা ট্রমা সেন্টারে ডিউটি। শীতকাল এলেই গাড়ির এক্সিডেন্ট খুব বেড়ে যায়, রোজ দিন অন্তত দশ বারোটা এক্সিডেন্টের কেস দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যায় বাড়ি ফিরতে।
এমন সময়ে ফোন বেজে উঠতেই চমকে যায় রিশু।ফোনের ওপাশে দিপের আর্ত চিৎকার শুনে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়, “দাদাভাই আমার হাত ভেঙ্গে গেছে তুমি তাড়াতাড়ি এস।” ভাই বোনকে ভীষণ ভালোবাসে রিশু, ওর দুটো চোখের মনি দুই ভাই বোন। রিশু যখন ডাক্তারি পড়তে দিল্লী যায় তখন দিপের জন্ম হয়, পরাশুনা আর দুরত্তের ফলে দিপকে সেইভাবে বড় হতে দেখতে পারেনি বলে ওর খুব দুঃখ। তাই বাড়িতে এলেই দিপকে নিয়ে পরে থাকত রিশু।
ওর ইচ্ছে ছিল দুইজনকে দিল্লীতে নিজের কাছে নিয়ে আসার, কিন্তু ওর নিজের খুব ইচ্ছে মায়ের কাছে কোলকাতা ফিরে যাওয়ার তাই আর ওদের নিয়ে আসেনি। বেশ কয়েক বছর আগে, যখন রিশু সবে মাত্র এমএস পড়ছে, তখন একবার দিপ সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙ্গেছিল। ডিউটি থেকে ছুটি নিয়ে তখুনি বাড়ি গিয়েছিল এবং যতদিন না দিপের পা ঠিক হয় ততদিন দিপের পাশে ছিল।
valolagar golpo
রিশু ধরমর করে উঠে বসে বলে, “কি রে কি করে হয়েছে?”
অন্যদিকে দিপ কপট হেসে, মুখ বেঁকিয়ে কাঁদার ভঙ্গি করে বলে, “আমি বাথরুমে পিছলে পরে গেছি দাদাভাই। ডান হাতের কুনুই খুব ব্যাথা দাদাভাই, দাদাভাই হাত সোজা করতে পারছি না দাদাভাই। তুমি এস তাড়াতাড়ি…”
দিপের এহেন কপট কান্নার ভঙ্গিমা দেখে সবাই মুখ চেপে হেসে ফেলে। রিশু বলে, “মাম্মাকে ফোন দে।”
দিপ কপট ব্যাথায় চেঁচিয়ে ওঠে, “দাদাভাই… প্লিজ এস।”
রিশু, “আচ্ছা তুই মাম্মাকে দে।”
দিপ নাছোড়বান্দা, “তুমি না এলে আমি কিন্তু হসপিটাল যাবো না। লোকে কি বলবে, আমার দাদাভাই এতবড় অরথপেডিক সারজেন আর নিজের ভাইয়ের বেলায় লবডঙ্কা।”
রিশু কি করবে ভেবে পায় না তাও বলে, “আচ্ছা বাবা, আমি আসছি, তুই মাম্মাকে ফোন দে।”
আম্বালিকা দিপের হাত থেকে ফোন নিতেই অন্যদিক থেকে রিশু বলে, “কি দেখ, কোথায় থাক তোমরা? হটাত করে কি ভাবে বাথরুমে পরে গেল?” valolagar golpo
ছেলের রাগ দেখে হেসে ফেলে আম্বালিকা তাও রিশুকে শান্ত করে বলে, “আচ্ছা বাবা, ঘাট হয়েছে। আমি যত বলছি যে হসপিটাল নিয়ে যাবো, তোর ভাই কিছুতেই শুনছে না।”
রিশু মাকে বলে, “তুমি ওকে নিয়ে এখুনি হসপিটাল যাও, এসএসকেএম এ নীলেশ আছে আমি ফোন করে দিচ্ছি, আমি কাল সকালের ফ্লাইটে পৌঁছে যাবো।”
দিপ মায়ের হাত থেকে ফোন নিয়ে বলে, “তুমি এখুনি না এলে আমি কোথাও যাবো না। আমার হাত বেঁকে যাক ভেঙ্গে যাক তোমার তাতে কি।”
কিছুক্ষন চুপ করে বসে থাকে রিশু, একটু ভেবে বলে, “আচ্ছা আমি আসছি তবে তুই হসপিটাল যা আমি নীলেশকে একটা ফোন করে দিচ্ছি ও পৌঁছে যাবে এমারজেন্সিতে।”
মায়ের ফোন রেখে নীলেশকে ফোনে জানিয়ে দেয় ভাইয়ের কথা। ল্যাপটপ খুলে বসে পরে, ভাই নাছোড়বান্দা ওকে ছাড়া কিছুতেই হসপিটাল যাবে না। ফ্লাইট চেক করে দেখে রাত বারোটায় কোলকাতার একটা ফ্লাইট আছে, কোন মতে ল্যাপটপের ব্যাগ আর একটা ছোট ব্যাগে কিছু জিনিস নিয়ে বেড়িয়ে পরে। জামা কাপড় নেওয়ার দরকার পরে না, কারন কোলকাতার বাড়িতে ওর সব কিছু আছে। ট্যাক্সিতে বসে আবার ফোন করে দিপকে, দিপের কান্না কিছুতেই থামছে না দেখে বেশ চিন্তায় পরে যায়। valolagar golpo
কি হল, গিয়েই একটা এক্সরে করাতে হবে, রিপোরট দেখেই বুঝতে পারবে কতটা কি হয়েছে। এইচওডি কে ফোন করে দিয়েছিল যে কয়েকদিনের জন্য ছুটি চাই, ভাইয়ের এক্সিডেন্ট হয়েছে, সেই সাথে ওর বন্ধু ইন্দ্রজিতকে ফোন করে দেয়। এমবিবিএস এর সময় থেকেই ইন্দ্রজিতের সাথে ওর বন্ধুত্ত, বেশ কয়েক বার ইন্দ্রজিত আর ওর স্ত্রী শালিনী কোলকাতায় রিশুদের বাড়িতে গেছে।
সিকুরিটি চেকের পরে প্লেনের দিকে যেতে যেতে মাকে ফোন করে রিশু, “কি হল কোথায় আছো, হসপিটাল নিয়ে গেলে?”
আম্বালিকা ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, “তুই কি ফ্লাইটে বসে গেছিস?”
রিশু, “হ্যাঁ। আমি এবারে ভাইকে নিয়ে আসব আমার কাছে।”
দিপ আর দিয়া, হাতের মুঠো হাওয়ার মধ্যে উঁচিয়ে লাফিয়ে ওঠে, “মিশন একমপ্লিসড মাম্মা, কাজ হাসিল।” মাকে জড়িয়ে ধরে একটু নেচে নেয় দুই ভাই বোন, এবারে ওদের দাদাভাইয়ের বিয়ে হবে প্রিয় ঝিনুক দিদির সাথে।
ছেলের এহেন মনের অবস্থা দেখে আম্বালিকা হেসে ফেলে, “আচ্ছা বাবা নিয়ে যাস, তোর ভাই তোর কাছে থাকবে না ত কি আমার কাছে থাকবে নাকি? বহাল তবিয়েতে আছে তোর ভাই, কিছুই হয়নি তোর ভাইয়ের।” বুক ভরে শ্বাস নিয়ে একটু থেমে বলে, “কিন্তু বাবা ভাইকে যে নিয়ে যাবি তুই ত সারাদিন বাড়িতে থাকিস না, কে দেখবে তোর ভাইকে?” valolagar golpo
ভাই ভালো আছে শুনে ঝাঁঝিয়ে ওঠে রিশু, “এত রাতে এইসবের মানে কি? ভাইয়ের কিছু হয়নি মানে?” এতক্ষন ওর মনের মধ্যে অনেক কিছু চলছিল।
আম্বালিকা ছেলেকে শান্ত হতে অনুরোধ করে বলে, “কাল বলছিলাম না যে আমার বান্ধবী পীয়ালির বড় মেয়ে সঙ্ঘমিত্রার বিয়ে।” রিশু ছোট উত্তর দেয়, “হুম”। আম্বালিকা বলে, “তোর জন্যেও একটা সুন্দরী মেয়ে খুঁজেছি, ভাবছি এক সাথেই এক মন্ডপে দুই জনের বিয়ে দিয়ে দেব।”
প্লেনের সিটে বসতে গিয়েও থেমে যায় রিশু, “কি বলছ?”
আম্বালিকা বুঝতে পারে এইবারে একটা ঝড় শুরু হবে, তাও ছেলেকে বলে, “তুই আয় সব বলছি। দিপের কান্না না শুনলে তুই আসতিস না তাই বদমাশটা ওই ভাবে তোকে ডেকে এনেছে।”
শেষ পর্যন্ত হেসে ফেলে রিশু, “আমি দিপের এবারে সত্যি হাত ভেঙ্গে দেব।”
প্লেন দিল্লীর মাটি ছাড়তেই এক বিমান সেবিকা এসে ওদের জলের বোতল দিয়ে যায়। সেই সুন্দরী বিমান সেবিকার বুকের নেম প্লেট দেখে থমকে যায় ডক্টর অম্বরীশ সান্যাল, “চন্দনা”। একবার সেই বিমান সেবিকার মুখের দিকে তাকিয়ে আপন মনেই হেসে ফেলে। পাঁচ বছর আগের এক ভীষণ বর্ষার বিকেলে দেখা হয়েছিল এক সুন্দরী ললনার সাথে, নাম তার চন্দনা নয়, সেই ললনার নাম ছিল চন্দ্রিকা পশুপতি। মাছের বাজারে দেখা, সি আর পার্কের মাছের বাজারে অনেকেই আসে মাছ কিনতে। valolagar golpo
সেদিন বিকেল থেকেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা তবে আকাশ দেখে মনে হয়নি যে হটাত করেই বৃষ্টি নামবে। কাজের মেয়েটা শুধু নিরামিশ রান্না করে যায়, গতবার মা এসে ওকে হাতে ধরে মাছ ভাজা বানাতে শিখিয়ে গেছে। এমনিতে মা যখন আসে, তখনি এক গাদা মাছ কিনে রান্না করে ফ্রিজে রেখে যায়। কাটা রুই ছাড়া আর কি বানাবে সেই কিনে মাছের বাজার থেকে বাইরে আসতেই ঝমঝমিয়ে তুমুল বৃষ্টি নামে। বাজার থেকে ওর বাড়িটা বেশি দূরে নয়, ভেবেছিল এক দৌড়ে বাড়ি পৌঁছে যাবে।
পরের দিন রবিবার ছিল, হসপিটাল যাওয়ার ছিল না, তখন ওর ওপিডিতে ডিউটি ছিল। বৃষ্টির জন্য একটা দোকানের শেডে বেশ কয়েক জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সেই ভিড়ের মধ্যে একটু তফাতে দাঁড়িয়ে এক সুন্দরী গোলগাল গড়নের মেয়ের দিকে ওর নজর যায়, পরনে সালোয়ার কামিজ, পিঠ ছাড়িয়ে লম্বা বেনুনি, গায়ের রঙ একটু চাপা হলেও চেহারার গড়নে একটা মাধুর্য আছে।
বৃষ্টির ছাঁটে কামিজ একটু ভিজে গেছে, তাও নিজেকে বাঁচানোর জন্য অন্য সব লোকের সাথে ধাক্কা ধাক্কি করে সেই সেডের নিচে দাঁড়াতে যেন সেই ললনার মনে দ্বিধা জাগে। রিশু আড় চোখে বার কয়েক ওর দিকে দেখে, তৃতীয় বার দেখতেই দুইজনার চার চোখ এক হয়ে যায়। রিশু অসহায়ের মতন একটু হাসি দেয় ওকে দেখে, প্রত্যুত্তরে ললনা ভুরু কুঁচকে রিশুর দিকে তাকিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। valolagar golpo
ঠিক সেই সময়ে রিশুর পাশের বাড়ির একজন ওকে দেখে চিনতে পেরে বলে, “আরে ডাক্তারবাবু যে, কি মাছ কিনলেন ইলিশ না পমফ্রেট?”
রিশু একটু হেসে উত্তর দেয়, “কাটা রুই, ইলিশের দিকে ত হাত দেওয়া যাচ্ছে না।”
হেসে ফেলে সেই ভদ্রলোক, “আপনি মশাই এমএসএর ডাক্তার তাও বলবেন যে ইলিশে হাত দেওয়া যাচ্ছে না? তাহলে ত মশাই আমাদের কুচো চিংরি খেয়ে থাকতে হয়।”
হেসে ফেলে রিশু, “আরে না না, আসলে আমি ঠিক মাছ রান্না করতে জানি না, মা আসলে তবেই মাছ খাওয়া হয়।”
বৃষ্টি একটু ধরে আসতেই রিশু বাড়ির দিকে পা বাড়ায়, এখানে দাঁড়িয়ে লাভ নেই একটু ভিজলেও ক্ষতি নেই। কিছুদুর যেতেই পেছনে বেশ কয়েক জন লোকের মিলিত আওয়াজ পায়, সেদিকে তাকিয়ে একটা জটলা দেখে। ওর বুঝতে দেরি হয় না, যে এই বর্ষার রাস্তায় কারুর এক্সিডেন্ট হয়েছে। ডাক্তার মানুষ তাই স্বভাব বশত এগিয়ে যায় জটলার দিকে। valolagar golpo
সেই দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার এক্সিডেন্ট হয়েছে, রাস্তা পার হতে গিয়ে একটা বাইক এই বর্ষার মধ্যে ঠিক সময়ে ব্রেক লাগাতে না পারায় পেছন থেকে ধাক্কা মেরে দিয়েছে যার ফলে মেয়েটা রাস্তায় পরে যায়। বাইকের লোকটাকে সবাই মিলে ধরে খুব বকাঝকা। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখে রিশু, মেয়েটার ভেজা কামিজের পেছনে রাস্তার নোংরা লেগে গেছে, পরনের চাপা লেগিন্সটাও বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।
হাঁটুর জায়গায় লেগিন্সের বেশ কিছুটা ছিঁড়ে গেছে, দেখেই বুঝতে পারে হাঁটুতে চোট লেগেছে, কপাল থেকে রক্ত বের হচ্ছে তবে বেশি নয়। ডাক্তারি চোখে জরিপ করে নেয় মেয়েটাকে। রিশুর সেই চেনাজানা লোকটা ওই জটলার মধ্যেই ছিল, ওকে দেখে বলল, “আরে ডক্টর বাবু ত।”
সেই শুনে বাকিরা একটু তফাতে সরে গেল। ডাক্তারির অভ্যেসবশত রিশু মেয়েটার দিকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “কোথায় কোথায় লেগেছে?” মেয়েটা কপাল আর কুনুই দেখিয়ে দিতে, রিশু ওর কপাল আর কুনুই দেখে বলে, “তেমন বিশেষ কিছু হয়নি একটু ফারস্ট এড করলেই ঠিক হয়ে যাবে।” মেয়েটার দিকে দেখে জিজ্ঞেস করে, “পাশেই আমার বাড়ি, যদি যেতে চান তাহলে আমি ফারস্ট এড করিয়ে দিতে পারি।” valolagar golpo
চেনাজানা লোকটা রিশুর পরিচয় দিতেই বাকিরাও সমস্বরে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, এত বেশ ভালো কথা।”
মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করল রিশু, “আমার বাড়ি যেতে কি আপত্তি আছে?”
ব্যাথা হওয়া সত্তেও কোন রকমে একটু হেসে উত্তর দেয় মেয়েটা, “না না তা নেই।” হাটার জন্য পা বাড়াতেই বুঝতে পারে হাঁটুতেও বেশ লেগেছে। ব্যাথায় ককিয়ে উঠে বলে, “হাঁটুতেও ব্যাথা, ঠিক ভাবে হাঁটতে পারছি না।”
পাশ দিয়ে একটা অটো যাচ্ছিল, সেটাকে থামিয়ে দিয়ে রিশু আর মেয়েটা সেই অটোতে উঠে পরে। অভ্যেস বশত রিশু জিজ্ঞেস করে, “আর কোথায় কোথায় লেগেছে ঠিক করে বলুন।”
মেয়েটা একটু হেসে বলে, “ধুপ করে ওইভাবে পরে গেছি তাই পেছনেও লেগেছে।” তারপর ডান হাত বাড়িয়ে দেয় রিশুর দিকে, “আমি চন্দ্রিকা, এই কাছেই আমার বাড়ি।”
রিশুও চন্দ্রিকার সাথে হাত মিলিয়ে নিজের পরিচয় দেয়, “অম্বরীশ, এমএসএ আছি।”
সেই শুরু চন্দ্রিকা আর রিশুর পরিচয়ের সুত্রপাত। valolagar golpo
চন্দ্রিকার আদি বাড়ি কইম্বাটুরে, ওর বাবা কর্মসূত্রে চেন্নাই থাকেন। চন্দ্রিকা দিল্লীতে একটা আইটি কোম্পানিতে চাকরি করে। সিআর পার্কের কাছেই এক ফ্লাটে কয়েকজন বান্ধবী পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকে। তামিল মেয়ে তাই মাছ খেতে খুব ভালোবাসে। রিশুও জানায় যে বাঙ্গালীদেরও মাছ খুব প্রিয় কিন্তু ও মাছ রান্না করতে পারে না। সেটা শুনে খুব হেসেছিল চন্দ্রিকা, বলেছিল ওর জন্য মাছ বানিয়ে খাওয়াবে।
সামান্য পরিচয় থেকে কয়েক দিনের মধ্যে এক মিষ্টি ভালোলাগার ভাব এসে যায় চন্দ্রিকা আর রিশুর মধ্যে। মাঝেই মাঝেই ফোনে কথাবার্তা হয়, হসপিটালের কাজের চাপে কোন কোন দিন যদিও বা রিশু ফোন করতে ভুলে যায় কিন্তু চন্দ্রিকা একদম ভোলে না। চন্দ্রিকা মাঝে মাঝেই অফিস থেকে বেড়িয়ে চলে আসত হসপিটালে রিশুর সাথে দেখা করতে।
এমবিবিএস এর পরে রিশুর ইচ্ছে ছিল কোলকাতা ফিরে গিয়ে ওইখানের কোন মেডিকেল কলেজ থেকে এমএস করে। মায়ের শাসনের ফলে ছোট বেলা থেকে পড়াশুনায় রিশুর মাথা খুব ভালো, এইইমস এই পরীক্ষা দিল আর এক বারেই পেয়ে গেল অরথপেডিক নিয়ে এমএস করার। মাম্মা আর পাপা খুব খুশি হয়েছিল, দিয়া একটু মন মরা হয়ে গিয়েছিল কারণ দাদাভাইকে আরো বেশ কয়েক বছর দিল্লীতে থাকতে হবে শুনে। valolagar golpo
সেদিন ছিল রবিবার কিন্তু রিশুর ছুটি ছিল না, এমারজেন্সিতে ডিউটি ছিল সেদিন ওর। বাইরে কাঠফাটা রোদ, এমারজেন্সিতে একের পর এক পেসেন্ট এসেই চলেছে। দুপুরের পরে মিটিং রুমে অন্য বন্ধুদের সাথে বসে একটু আড্ডা মারছিল এমন সময়ে একজন এসে ওকে বলে যে এমারজেন্সিতে একটা মেয়ে ওর খোঁজ করছে। কৌতূহল জাগে, এই কাঠ ফাটা রোদ্দুর মাথায় করে দিল্লীর এই গরমে কোন মেয়ে ওর জন্য এমারজেন্সিতে অপেক্ষা করছে। বাইরে বেড়িয়ে এসে চন্দ্রিকাকে দেখে অবাক হয়ে যায় রিশু।
জিজ্ঞেস করে, “এই সময়ে তুমি এখানে?”
মিষ্টি হেসে চন্দ্রিকা উত্তর দেয়, “তুমি ত আর নিজের থেকে মাছ খেতে পার না তাই কাল পমফ্রেট কিনেছিলাম সেটা তোমার জন্য এনেছি।”
রিশু হেসে ফেলে, আসে পাশের বেশ কয়েক জন ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। রিশু চন্দ্রিকাকে বলে, “বিকেলে আসতে পারতে, এই রোদ্দুর মাথায় করে এই গরমে আসার কি দরকার ছিল।” valolagar golpo
চন্দ্রিকা গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে অভিমানি কণ্ঠে বলে, “দেখা করতে এসেছি বলে তোমার অসুবিধে হচ্ছে যাও আমি চলে যাচ্ছি।”
রিশু ওর হাত ধরে ফেলে, “যা বাবা আমি কখন বললাম যে আমি রাগ করেছি।”
চন্দ্রিকা নাক কুঁচকে হেসে বলে, “আমরা কি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকব?”
মাথা চুলকে আশেপাশে দেখে রিশু বলে, “এমারজেন্সি ডিউটি, এ ছেড়ে ত যেতে পারব না চন্দ্রিকা। তবে…” বলে ওর হাত ধরে এমারজেন্সি থেকে বেড়িয়ে এসে বলে, “চল ক্যান্টিনে গিয়ে বসি।”
ক্যান্টিনের দিকে যেতে যেতে চন্দ্রিকা জিজ্ঞেস করে, “খুব চাপ দেখছি?”
মাথা দোলায় রিশু, “বিশাল চাপ, নাওয়া খাওয়ার পর্যন্ত সময় থাকে না একদম। একের পর এক পেসেন্ট আসতেই থাকে এখানে। এই দেখ পরশু দিন একজন পা ভেঙ্গে এসেছিল, পাঁচ ঘন্টা টানা অপারেশান করে চোদ্দটা স্ক্রু লাগিয়ে হাড় জোড়া লাগাতে হয়েছে।”
চোখ বড়বড় করে বলে চন্দ্রিকা, “পাঁচ ঘন্টা!”
রিশু মাথা দোলায়, “পাঁচ ঘন্টা, তবে আমি করিনি। আমি এসিস্টেন্ট ছিলাম।”
ডাক্তারদের ক্যান্টিন অন্যদিনের তুলনায় সেদিন অনেক ফাঁকা ছিল, বেশির ভাগ টেবিলেই জোড়ায় জোড়ায় বসে প্রেমিক দম্পতি। চন্দ্রিকা ফিক করে হেসে রিশুকে বলে, “এখানেও প্রেম চলে দেখছি।” valolagar golpo
হেসে ফেলে রিশু, “যা বাবা, প্রেমের জন্য কি আর জায়গার দরকার পরে নাকি? দরকার পরে দুই বিটিং হারট, এক সাথে ধুক ধুক করা দুই হৃদয়।”
লাজুক হেসে রিশুর বাম বাজু জড়িয়ে ধরে বলে, “তোমারটা কি বলে তাহলে?”
চন্দ্রিকার কাজল কালো বড় বড় দুই চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “তুমি বল কি বলে।”
ওই ভাবে তাকাতেই লজ্জায় লাল হয়ে যায় চন্দ্রিকা, নরম ঠোঁট দাতে চেপে চোখ নামিয়ে বলে, “ওই ভাবে একদম আমার দিকে তাকাবে না। চল ওদিকে গিয়ে বসি।”
রিশু মুচকি হেসে কাছে টেনে বলে, “কি এমন দেখালে যে অমন করে দেখতে পারি না।”
রিশুর বুকের ওপরে আলতো চাঁটি মেরে বলে, “ধ্যাত শয়তান। ডাক্তারদের ভালো ভাবেই জানা আছে, কত সুন্দরী নার্স সুন্দরী মেয়ে ডাক্তারদের সাথে কত কিছু কর।”
হেসে ফেলে রিশু, কথাটা একদম আমুলক মিথ্যে নয়, ওর ব্যাচের অনেকের একাধিক সম্পর্ক, সে ছেলেই হোক অথবা মেয়েই হোক, তবে রিশু একটু আলাদা ছিল, বুকে না ধরলে কাউকে সেখানে স্থান দিত না। বিশেষ করে ওর কোনদিন ইচ্ছে ছিল না যে ওর স্ত্রী অথবা প্রেমিকা একি পেশায় নিযুক্ত হোক। তাই কোনদিন কোন নার্স অথবা কোন ডাক্তারের সাথে ওর কোন ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল না, ওদের ব্যাচের মধ্যে পড়াশুনায় বেশ নাম ছিল ওর আর বড্ড ঘরকুনে আর মায়ের নেওটা বলে বদনাম ও ছিল। valolagar golpo
একটা খালি টেবিল দেখে দুইজনে বসে পরে। আসে আসে পাশের অনেকেই চেনা জানা, তার মধ্যে কয়েকজন ওর ব্যাচমেট। ওদের দেখে কয়েক জন চোখের ইশারা করে, তার উত্তরে রিশুও চোখের ইশারায় জানিয়ে দেয় নিজের প্রেমের কথা।
পাশাপাশি বসে রিশুর বাজুর ওপরে ঝুঁকে পরে চন্দ্রিকা, রিশুর বাম কাঁধের ওপরে মাথা রেখে নিচু গলায় বলে, “তোমার ছুটি কখন হবে?”
রিশু উত্তর দেয়, “দেরি আছে গো।”
বেশ কিছুক্ষন দুইজনেই চুপ করে একে অপরের সানিদ্ধ্য উপভোগ করে। বেশ কিছুক্ষন পরে মাছের কথা খেয়াল পরে চন্দ্রিকার, সঙ্গে সঙ্গে টিফিন খুলে বলে, “ইসসস দেখেছ, তোমার জন্য সব ভুলে যাই। পম ফ্রেট এনেছিলাম।”
টিফিন বক্স খুলতেই মাছের গন্ধ নাকে ভেসে আসে, “বেশ ভালো রান্না করেছ দেখছি। আর কি কি পার?”
মাছের একটু টুকরো ভেঙ্গে রিশুর দিকে উঁচিয়ে বলে, “খেয়ে দেখ তাহলে।”
এইভাবে সবার সামনে চন্দ্রিকার হাত থেকে মাছ খেতে ভীষণ লজ্জা করে রিশুর, “আমি নিজে খেতে পারি।”
মুচকি হাসে চন্দ্রিকা, “আমার হাত থেকে খেতে লজ্জা করছে?”
রিশু হেসে বলে, “মাছের সাথে আমি কিন্তু তাহলে হাত ও খেয়ে নেব।” valolagar golpo
দুজনে মিলে গল্প করতে করতে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেয়। খাওয়া শেষে রিশু ওকে বলে, “এবারে আমাকে যেতে হবে।”
মুখ শুকনো হয়ে যায় চন্দ্রিকার, খানিক আবদার করে বলে, “আচ্ছা কি আর করা যাবে, আমি এখানে তোমার জন্য তাহলে অপেক্ষা করি আর কি করব।”
হেসে ফেলে রিশু, “পাগল নাকি তুমি, বাড়ি যাও আমার কতক্ষনে ডিউটি শেষ হবে জানি না।”
দুইজনের মধ্যে কারুর ইচ্ছে ছিল না সেদিন একে অপরকে ছেড়ে যায়, কিন্তু চন্দ্রিকা জানে, রিশু একজন ডাক্তার রোগীদের প্রতি ওর দ্বায়িত্ত সব থেকে আগে। ক্যান্টিন ছেড়ে বেড়িয়ে করিডোর ধরে দুইজনে পাশাপাশি হেঁটে চলে গল্প করতে করতে। হটাত পাশের একটা খালি ঘরের মধ্যে রিশু ওকে টেনে নিয়ে যায়। আচমকা খালি ঘরের মধ্যে টেনে আনার কারণ বুঝতে পারে না চন্দ্রিকা, রিশুর দিকে হাজার প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকে, কি হল হটাত। valolagar golpo
চন্দ্রিকার অপেক্ষাকৃত পাতলা কোমর দুই বলিষ্ঠ হাতে জড়িয়ে ধরে রিশু, বুকের কাছে টেনে ফিসফিস করে বলে, “তোমার কিছু খাওয়ানর ছিল তাই না।”
দুই দেহের মাঝে হাত নিয়ে এসে রিশুর প্রসস্থ বুকের ওপরে হাতের পাতা মেলে ওর দিকে দুষ্টু মিষ্টি হাসি নিয়ে তাকিয়ে বলে, “আচ্ছা এই ছিল তোমার মনে…”
কথাটা আর শেষ করতে পারে না চন্দ্রিকা, রিশুর মাথা নেমে আসে চন্দ্রিকার মুখের ওপরে। চন্দ্রিকার সারা মুখের ওপর অনবরত বয়ে চলে রিশুর উষ্ণ প্রেমের শ্বাস। আসন্ন চুম্বনের অপেক্ষায় নিমিলিত হয়ে যায় চন্দ্রিকার চোখ জোড়া, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে ওর। রিশুর ঠোঁট নেমে আসে চন্দ্রিকার ঠোঁটের ওপরে। ঠোঁট জোড়া মিলিত হতেই চন্দ্রিকা রিশুর মাথার চুল দুই হাতে আঁকড়ে ধরে গভির করে নেয় সেই চুম্বন। প্রেমে বিভোর দুই প্রেমিক প্রেমিকা হারিয়ে যায় নিজেদের মধ্যে।
বেশ কিছুক্ষন পরে ঠোঁট ছেড়ে চন্দ্রিকা ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে বলে, “একা পেয়ে বেশ বাগিয়ে নিলে তাই না?”
নাকের ওপরে নাক ঠেকিয়ে আদর করে উত্তর দেয় রিশু, “এইভাবে চুরি না করলে আর দিতে নাকি?”
প্রসস্থ ছাতির ওপরে আলতো প্রেমের চাঁটি মেরে বলে চন্দ্রিকা, “এইবারে আর দেরি হচ্ছে না তাই না?”
হেসে ফেলে রিশু, “ডিউটি না থাকলে সারাক্ষন এইভাবে তোমাকে জড়িয়ে ধরে থাকতাম।”
লজ্জায় লাল হয়ে যায় চন্দ্রিকা, “আচ্ছা বাবা সে যখন হবে তখন দেখব কতক্ষন আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকো।” valolagar golpo
চন্দ্রিকাকে কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না রিশু, কিন্তু বারেবারে ফোন আসায় ওকে সেদিন চলে যেতে হয়েছিল এমারজেন্সিতে। প্রথম চুম্বনে হারিয়ে যাওয়ার অনাবিল আনন্দে সেদিন আর কাজে মন বসেনি রিশুর। চন্দ্রিকার সাথে রাতের বেলা অনেকক্ষণ কথা বলেছিল, বলেছিল নিজের বাড়ির কথা, দিয়া আর দিপের কথা। রিশু জানিয়েছিল যে এমএস শেষ করার পরে ওর কোলকাতা ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে, চন্দ্রিকা একটু দ্বিধাবোধ করেছিল সেই শুনে।
মাকে সব কিছু বললেও রিশু প্রথমে চন্দ্রিকার কথা লুকিয়ে গিয়েছিল, ওর মনে একটা দ্বিধা ছিল যে চন্দ্রিকা দক্ষিণ ভারতীয় মেয়ে, মা মেনে নেবে কি না সেটা সন্দেহ ছিল। ভেবেছিল এমএস করার পরে মাকে জানাবে সব কথা। কিন্তু মায়ের মন, আম্বালিকার চোখ একদিন রিশুর মনের কথা পড়ে ফেলে। চন্দ্রিকার সাথে দেখা হওয়ার বেশ কয়েক মাস পরের ঘটনা। ওকে অবাক করে দেবে বলে সেবার রিশুকে না জানিয়ে দিপ আর দিয়াকে নিয়ে দিল্লী আসে আম্বালিকা। valolagar golpo
বাড়ির একটা চাবি ওর কাছে থাকত তাই রিশুর অবর্তমানে বাড়িতে ঢুকতে ওদের কোন অসুবিধে হয়নি। সেদিন লেকচারের পরে চন্দ্রিকার সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। সিনেমা দেখার পরে একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার সেরে বাড়ি ফিরতে বেশ রাত হয়ে যায়। দরজায় তালা দেখতে না পেয়েই বুঝতে পেরেছিল যে মা এসেছে। দরজায় টকটক করতেই ছোট দিপ দরজা খুলে এক লাফে ওর কোলে উঠে যায়।
দিয়া দৌড়ে এসে দাদাভাইকে জড়িয়ে ধরে চেঁচিয়ে ওঠে, “কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বল।”
এইভাবে না বলে আগে কোনদিন ওর মা দিল্লী আসেনি তাই বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল রিশু। আম্বালিকা মাতৃ স্নেহে বড় ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “একদম রোগা হয়ে গেছিস। কাজের মেয়েটা কি ঠিক করে রান্না করে যায় না নাকি?”
মায়ের শিতল হাতের ছোঁয়ায় হৃদয় কাতর হয়ে ওঠে, কিন্তু ছোট ভাই বোনের সামনে এমন ভাবে আদর খেতে খুব বাধে তাই হাত সরিয়ে দিয়ে বলে, “ধ্যাত তুমি না প্রত্যেক বার এক কথা বল। সেই ভাবে দেখতে গেলে আমি এতদিনে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেতাম।” valolagar golpo
রাতের খাওয়ার সময়ে রিশু বিশেষ কিছু খেতে পারে না কারণ চন্দ্রিকার সাথে রাতের খাওয়া খেয়েই ফিরেছে। পেট খারাপের অজুহাত দেয় কিন্তু ছেলের চেহারা দেখে আম্বালিকার মনে সন্দেহ হয়। রাতের খাওয়ার পরে অন্য সব বারের মতন দিপ আর দিয়া ওর ঘরেই ঘুমিয়ে পরে। দিপ আর দিয়া ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে আম্বালিকা রিশুকে বসার ঘরে ডাকে।
রিশু মনে মনে প্রমাদ গোনে, “কি হয়েছে বল।”
আম্বালিকা রিশুকে পাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে, “বান্ধবীর নাম কি?”
মায়ের কাছে ধরা পড়তেই রিশু থতমত খেয়ে, কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে হাতের নখ খুটতে খুটতে মায়ের প্রশ্নের উত্তরে বলে, “বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছলাম বললাম ত।”
রিশুর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “নাম কি ওর যার সাথে সিনেমা দেখতে গেছিলি?” ধরা পরে গেছে রিশু। “তোর মুখ দেখে আমি বুঝতে পারি তুই হা করলে হাসবি না হাঁচি দিবি।” valolagar golpo
মাকে শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে ধরে রিশু, “না মাম্মা সত্যি শুধু মাত্র ভালো বান্ধবী।”
হেসে ফেলে আম্বালিকা, “কি নাম সেই বান্ধবীর যার জন্য আমার ছেলের কান লজ্জায় লাল হয়েছে?”
রিশু উত্তর দেয়, “চন্দ্রিকা পশুপতি, তামিল মেয়ে, কৈমবাটুরে বাড়ি।”
ধরা পরে গেছে রিশু, আর লুকিয়ে লাভ নেই তাই মায়ের কাছে চন্দ্রিকার পরিচয় দেয়, কোথায় থাকে কোথায় চাকরি করে ইত্যাদি। উত্তরে আম্বালিকা ওকে বলে যে আগে এমএস ঠিক ভাবে পাশ করতে হবে তবে চন্দ্রিকার সাথে দেখা করতে চায়। পরের দিন চন্দ্রিকাকে সাথে নিয়ে আসে মায়ের সাথে দেখা করানোর জন্য। অজানা এক ভয়ে সারা রাস্তা রিশুর হাত শক্ত করে ধরে থাকে আর বারবার প্রশ্ন করে, ওর মা ওদের এই সম্পর্ক মেনে নেবে ত? valolagar golpo
রিশু অভয় দেয়, ওর মা ভালোবাসা বোঝে শুধু একবার চন্দ্রিকার সাথে দেখা করতে চায়। চন্দ্রিকার সাথে দেখা হওয়ার পরে আম্বালিকার পছন্দ হয় ওকে, বেশ মিষ্টি মেয়ে একদম বাংলা বুঝতে পারে না, কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই মায়ের সাথে বেশ মিশে রান্নাঘরে দুইজনে মিলে মাছ রান্নাতে ব্যাস্ত হয়ে যায়। দিয়া সেই দেখে মুখ টিপে হেসে বলেছিল, এরপর ওদের নারকেল তেল দেওয়া রান্না খেতে হবে।
Darun