bangla romantic choti.রিশু প্লেন থেকে নেমে বাড়ির দিকে রাওনা দিয়েছে খবর পেতেই পীয়ালির বাড়িতে খুশির আমেজ ছড়িয়ে যায়। সোমনাথ আর পীয়ালি কি ভাবে রিশুকে এই রাতে আপ্যায়ন করবে ভেবেই কূল কিনারা পায় না। আম্বালিকার বড় ছেলে সেই সাথে আবার বেশ বড় ডাক্তার, তাল ঠিক রাখতে পারে না পীয়ালি।
আম্বালিকার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে মানে তোর ছেলে কি খেতে ভালোবাসে?”
হেসে ফেলে আম্বালিকা, “তুই এত উত্তেজিত কেন হচ্ছিস? এত রাতে আবার রান্না করতে যাস নে।”
সোমনাথ কি করবে ভেবে পায় না, “না মানে প্রথম বার আসছে তাও আবার এই ভাবে, মানে কি করব ঠিক ভেবে পাচ্ছি না।”
পিয়ালী তাও নাছোড়বান্দা, ফ্রিজে একটু কাঁচা চিকেন ছিল সেটা বের করে বলে, “চিকেন আর লুচি বানিয়ে দেব?”
আম্বালিকা ওদের শান্ত হতে বলে, “কিচ্ছু করতে হবে না। এত রাতে হয়ত কিছু খাবেই না।” বলেই হেসে ফেলে। কিছুক্ষন থেমে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে পীয়ালিকে বলে, “তুই যা একবার ঝিনুকের কাছে, ওর সাথে কথা বল।”
romantic choti
সোমনাথ মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, “না মেয়েকে কিছু জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। আপনার ছেলে শুধু একবার হ্যাঁ বললেই ব্যাস। ঝিনুকের মতামত নিয়ে কোন কাজ নেই, আমি যেখানে বলব সেখানেই ওকে বিয়ে করতেই হবে।”
আম্বালিকা সোমনাথ কে শান্ত করার জন্য বলে, “দেখুন, বিয়ে এমন ভাবে হয় না। দুইজনের অমত থাকলে এই বিয়ে হবে না, অথবা যদিও বা একজন মত দেয় আর অন্যজন বেঁকে বসে তখন জোর করে বিয়ে দিলেও ওদের ভবিষ্যৎ জীবন সুখকর হবে না। তবে হ্যাঁ, আমরা এখন যে পরিস্থিতিতে পড়েছি, তাতে এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই আমাদের সামনে।”
পিয়ালীর দিকে দেখে বলে, “ঝিনুকের সাথে কথা বল, ওকে সবকিছু বুঝিয়ে বল। আমার যা মনে হয় ও বুদ্ধিমতী মেয়ে সব কিছু বিচার বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। হ্যাঁ ঝিনুক হয়ত একটু জেদি কিন্তু বিপথে যাওয়ার থাকলে এতক্ষনে নিশ্চয় চলেও যেত। আজকাল চারপাশে যা শুনি তাতে ত মাঝে মাঝে আমার দিয়াকে নিয়েই ভয় হয়।” romantic choti
মাথা দোলায় সোমনাথ, কথাটা সত্যি। পীয়ালির দিকে দেখে বলে, “যাও মেয়ের সাথে কথা বল।”
বুক ভরে শ্বাস নেয় পীয়ালি, আম্বালিকা ওর হাতে হাত রেখে বলে, “আমার ছেলে আসুক আমি কথা বলি তারপরে দুইজনকে সামনা সামনি বসিয়ে সব কিছু খুলে বলা হবে। আমি আমার ছেলেকে যথাসাধ্য বুঝাতে চেষ্টা করব, আমার ছেলে, এই টুকু ভরসা আমি দিতে পারি।”
পিয়ালী ওর হাত ধরে কেঁদে ফেলে, “তুই সত্যি মহামায়া রে, তুই না থাকলে এই যাত্রায় আমাদের কেউই উদ্ধার করতে পারত না।”
বান্ধবীর হাতের ওপরে হাত রেখে প্রবোধ দেয় আম্বালিকা, “সব ঠিক হয়ে যাবে, বিশ্বাস রাখ ভগবানের ওপরে। তিনি যা করেন মঙ্গলের জন্যেই করেন।”
ঝিলিক দিয়ার সাথে বেড়িয়ে গেছে এয়ারপোর্ট দিয়ার দাদাকে আনার জন্য। ঘরের ভেতরে বসে বসার ঘরের সব আলাপ আলোচনা ওর কানে গিয়েছিল। দিয়ার দাদাকে আনতে যাওয়ার আগে ঝিলিক ওকে জানিয়ে দিয়েছিল যে আম্বালিকা আন্টির বড় ছেলের সাথে ওর বিয়ের কথা চলছে। ঘরের দরজা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে বিছানার এক কোনায় কুঁকড়ে বসে পরে ঝিনুক। বারং বার নিজেকে প্রশ্ন করে, কেন পার্থ ওর সাথে এমন বিশ্বাস ঘাতকতা করল, মন প্রান দিয়ে ভালবেসেছিল ছেলেটাকে। romantic choti
পার্থের প্রেমে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল, বাবা মায়ের অনুযোগ একবারের জন্যেই কান দেয়নি। মানুষ চিনতে এত ভুল করবে সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি ঝিনুক, মানুষ যে সব সময়ে এক মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকে সেটা এতদিন শুধু সিনেমায় গল্পেই পড়েছিল। অকাঠ সত্যটা যে এমন ভীষণ ভাবেই ওর সামনে এসে ওকে এক ধাক্কায় এইভাবে নাড়িয়ে দিয়ে চলে যাবে সেটা একদম ভাবতে পারেনি।
যে আসছে সেই বা কেমন হবে জানা নেই, তবে একটাই ভরসা এখানে, আম্বালিকা আন্টি মায়ের ছোটবেলার প্রিয় বান্ধবী আর সেই সাথে দিয়া আর ঝিলিক ও কাকতালীয় ভাবে স্কুলে বন্ধুত্ত হয়ে গেছে। মায়ের কাছেই শোনা যে আম্বালিকা আন্টির বড় ছেলে এমেসের অরথপেডিক সার্জেন। সব ডাক্তার কি ভালো মানুষ হয় নাকি? পড়াশুনা করলেই কি ভালো মানুষ হওয়া যায়?
বাবা ভীষণ ভাবেই আহত এবং ক্রুদ্ধ, বিয়ে করার ইচ্ছেটাই চলে গেছে ওর। যদি এখন বিয়েতে মত না দেয় তাহলে কেউই ওর কোন কথা শুনবে না। বাবা জোর করেই ওকে এবারে বিয়ে দেবে। মানুষের ওপর থেকে বিশ্বাস ওর চলে গেছে। আর নয়, এই পৃথিবীতে আর বাঁচতে চায় না… romantic choti
দরজা ভেজান ছিল, পীয়ালি আলতো ধাক্কায় ঝিনুকের ঘরের দরজা খুলে আলো জ্বালিয়ে জিজ্ঞেস করে, “অন্ধকারে কি করছিস রে?”
গায়ের চাদর বেশি করে গায়ের ওপরে জড়িয়ে ধরে মাথা নাড়ায় ঝিনুক, নরম গলায় উত্তর দেয়, “কিছু না।”
পিয়ালী মেয়ের পাশে বসে ঝিনুকের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে মাতৃ স্নেহে বলে, “দ্যাখ মা, ভুল মানুষের হয়। তাই বলে সেই ভুলটাকে আঁকরে ধরে বসে থেকে লাভ কি বল। তুই ত আমার সোনা মেয়ে রে…”
মাকে জড়িয়ে ধরে ঝিনুক, “না মা, আমি তোমার খারাপ মেয়ে মা। তোমাদের কোন বারন শুনিনি, তোমাদের কোন কথায় কান দেইনি, সেই পাপের ফলে আমার আজকে এই অবস্থা।” বলেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে।
মেয়ের পিঠে হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “না রে, ছোট বেলায় দুষ্টুমি সবাই করে, বাবা মায়ের অবাধ্য হয়, সেটা ঠিক সময়ে বুঝতে পেরে নিজেকে সামলে নেওয়াটাই আসল কথা, তুই কোন পাপ করিসনি।” চোখ মুছিয়ে হাতে গালে হাত বুলিয়ে বলে, “আমার সোনার টুকরো মেয়ে তুই, ইসসস কি ভাবে নিজেকে খামচে একাকার করেছিস।” romantic choti
কাঁদতে কাঁদতে মাথা ঝাঁকিয়ে মাকে বলে, “মা গো আমি বিয়ে করব না, প্লিজ মা।”
পীয়ালি ওকে আদর করে বুঝিয়ে বলে, “দ্যাখ ঝিনুক, যদি আম্বালিকা এগিয়ে না আসত তাহলে কি হত বলত? আমাদের মান সন্মান সব জলে ধুয়ে মুছে যেত। সবাই এটাই বলত, ওই ত সোমনাথের বড় মেয়ের শেষ পর্যন্ত বিয়েই হল না। পাড়ার লোকের মুখ কি আর চুপ করে থাকত নাকি? তোর বড় পিসি এই পার্থের সাথে বিয়ে হবে বলে কত খোটা দিয়ে কথা শুনিয়েছে সেটা জানিস। ব্যাবসায়ি বাড়ির ছেলে, তার ওপরে ওর বাবা আবার এই প্রমটারিতে বিনিয়োগ করেছে কত কথা সেই নিয়ে, প্রমোটার দের স্বভাব একদম ভালো হয় না।”
ঝিনুক চুপ করে মায়ের কথা শুনে যায়, ওর যে করার আর কিছু নেই সেটা বুঝে যায়। পীয়ালি বলে, “অম্বরীশ ভালো ছেলে, এমসের ডাক্তার, অরথপেডিক সার্জেন, আমরা খুঁজলেও হয়ত অমন ছেলে পেতাম না তোর জন্য, সব থেকে বড় কথা আম্বালিকা আমার ছোটবেলার বান্ধবী, আমার প্রিয় বান্ধবী, আমরা একসাথে কলেজে পড়েছি একসাথে মাস্টারস করেছি। এখানে কেউ অচেনা নয় রে।” romantic choti
কথা শুনে মাথা দোলায় ঝিনুক, সত্যি কথা, যদি বিয়েটা না হত তাহলে আত্মীয় সজ্জন সবাই বলাবলি করত, যে শেষ মুহূর্তে যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল কোন কারনে ছেড়ে দিয়েছে। সঠিক কারণ বের করার কারুর মাথা ব্যাথা নেই সবাই নিজের মনে একটা কারণ বের করে সেই গুজব বদনাম চারদিকে রটিয়ে দিত। হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে গেছে ঝিনুক যে এক শয়তানের রক্ত পার্থের ধমনীতে সেই রক্ত এক সময়ে মাথা চাড়া দিয়ে জাগত, সময় থাকতেই সেটার হাত থেকে বেঁচে ফিরে এসেছে ঝিনুক।
চোখের জল মুছে সোজা হয়ে বসে ঝিনুক, মাকে জিজ্ঞেস করে, “ওরা কি এসে গেছে?”
পিয়ালী একবার দরজার দিকে দেখে বলে, “এখন আসেনি হয়ত তবে একটু পরেই চলে আসবে। চোখের জল মোছ, হাতে গালে ক্রিম মাখ, নিজেকে ঠিক কর, ভালো একটা সালোয়ার কামিজ পর। এইভাবে যাবি নাকি ওর সামনে?” একটু থেমে মেয়ের মুখের দিকে দেখ বলে, “তোকে আরো কিছু কথা বলার আছে।” ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন নিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।
পিয়ালী একটু থেমে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বলে, “রিশু কিন্তু আম্বালিকার চোখের মনি। আমার বান্ধবী বলে বলছি তা নয়, তবে আম্বালিকা সাক্ষাৎ মহামায়ার রূপ। তুই আমাকে কথা দে, যে তুই কোনদিন কোন পরিস্থিতিতে আম্বালিকার সাথে কোন দুরব্যাবহার করবি না।” romantic choti
মাথা নোয়ায় ঝিনুক, মায়ের কথা অবশ্য ঠিক, আম্বালিকা আন্টিকে দেখলেই বোঝা যায়, দেবী দুর্গার মতন রূপ আন্টির, ওই চোখে যেমন আগুন আছে ঠিক তেমনি ভালোবাসা আছে। বুক ভরে শ্বাস নেয় ঝিনুক, এই ওর কপালে লেখা, একেবারে অজানা অচেনা একজনের সাথে বাকি জীবন কাটাতে চলেছে।
যার সাথে বিয়ে হবে তাকে কোনদিন দেখেওনি, কথা বলা চেনা জানা হওয়া ত দুরের কথা। এই মানসিক অবস্থায় বিয়ে করতে অনিহা কিন্তু বাবা মায়ের মুখ চেয়েই বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় ঝিনুক। মাকে জানিয়ে দেয় যে ওর এই বিয়েতে অমত নেই, কিন্তু মনের গভীরে প্রচুর সংশয়, কেমন হবে ওর এই অচেনা জীবনসঙ্গী।
আলমারি খুলে একটা নতুন সালোয়ার কামিজ বের করে নেয়, তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে। আয়নায় নিজের প্রতিফলনের দিকে তাকিয়ে ভীষণ ব্যাথা পায়। কেঁদে কেঁদে চোখ জোড়া লালচে হয়ে গেছে, যার জন্য এত কান্না সেই মানুষটা প্রতারক, তার জন্য আর চোখের জল ফেলে লাভ কি। গালে বাজুতে বুকের ওপরে নখের আঁচর দেখে নিজেই লজ্জায় পরে যায়। চোখ মুখ ভালো ভাবে জল দিয়ে ধুয়ে নেয়, সালোয়ার কামিজ পরে বাথরুম থেক বেড়িয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে পরে প্রসাধনের জন্য। romantic choti
ততক্ষণে মা চলে গেছে ওর কামরা থেকে। গালের আঁচড়ের দাগের ওপরে ক্রিম মাখতে মাখতে নতুন এক জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। জানা নেই এই জীবনে ওর কপালে কি লেখা আছে। নতুন করে কোন স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় ওর ছোট্ট হৃদয়। ঠিক সেই সময়ে ঝিলিক এসে পৌঁছাতেই ওর হৃদপিণ্ড এক লাফে গলার কাছে এসে আটকে যায়, এসে গেছে সেই অচেনা মানুষ, যার সাথে বাকি জীবন ওকে কাটাতে হবে।
ঝিলিক দিদির গলা জড়িয়ে ধরে বলে, “তুই আমার সোনা দিদি।”
বুক ভরে শ্বাস নেয় ঝিনুক, ম্লান হেসে জিজ্ঞেস করে, “কেমন দেখলি?”
দিদির গালে গাল ঠেকিয়ে চোখ মেরে মুচকি হেসে বলে, “জিজু দারুন হ্যান্ডসাম রে।”
বাজুতে ক্রিম মাখতে মাখতে ছোট উত্তর দেয়, “আচ্ছা!”
দিদির গলা জড়িয়ে বলে, “দিদি, সত্যি বলছি এই তোকে ছুঁয়ে। ওদের ভাই বোনেদের মধ্যে এক অন্য ধরনের সম্পর্ক যেটা না দেখলে তুই বিশ্বাস করতে পারবি না। দিপের হাত ভেঙ্গেছে শুনেই কিন্তু ওর দাদা এই রাতে এখানে এসেছে।” romantic choti
যে আসছে সে কি তাহলে নিজেও জানে না যে তার বিয়ে? ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে বোনকে প্রশ্ন করে, “মানে?”
ঝিলিক উত্তর দেয়, “দিয়ার সাথে কথা বলে যা বুঝলাম, ওর দাদার নাকি একদম ইচ্ছে নেই বিয়ে করার। কিন্তু এখানে এসে না পৌঁছানো পর্যন্ত আম্বালিকা আন্টির হাত বাঁধা ছিল। প্রথমেই বিয়ের কথা শুনলে ওর দাদা বেঁকে বসত কিছুতেই আসত না। শেষ পর্যন্ত দিপ হাত ভাঙ্গার ভান করে কেঁদে কেটে ওর দাদাকে ফোন করে, শুধু মাত্র ভাইয়ের হাত ভেঙ্গেছে শুনে ওর দাদা এত রাতে প্লেনে করে দিল্লী থেকে কোলকাতা এসেছে।” কথাটা শুনে অবাক হয়ে যায় ঝিনুক, এমন মানুষ হয় এই পৃথিবীতে।
ঝিলিক আরো বলে, “তুই জানিস, দিয়ার দাদা এত ব্যাস্ততার মধ্যেও দিয়ার কি হোমওয়ার্ক সেটা মনে রাখে, দিপের কোনদিন কোন পরীক্ষা সেই খবর ওর দাদার কাছে আছে। সত্যি বলছি, দেখে একদম মনে হয় না যে ওর দাদা নাম করা এক মেডিকেল কলেজের অরথপেডিক সার্জেন।”