bengali panu অসম বয়সের বসন্ত – 4

bengali panu choti. নায়নী দ্বিগুন ভাড়া দিতেও প্রস্তুত, কিন্তু কেও যাবে না। রাত হয়ে হয়ে হয়েছে আর আসার সময় খালি আসতে হয় তাই কেও যেতে চাইছে না। রুপা কৌশিক জয়দেব একটু আগেই চলে গেছে। বাকি রয়েছে আকর্ষ আর নায়নী। আকর্ষ দেখছে নায়নী ট্যাক্সি পাচ্ছে না, যাওয়ার জন্য, ওর খারাপ লাগলো তাই কিছুটা সাহস নিয়েই নায়নীকে বললো,

অসম বয়সের বসন্ত – 3

“ম্যাম আপনার সমস্যা না থাকলে আপনি আমার সত্যে আসুন না আমি আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসছি।”
এই কথা শুনে নায়নী বড্ডো অবাক হলো এত্ত দূর নায়নীর ঘর আকর্ষের ঘর থেকে কিন্তু আকর্ষ সেখানে গিয়ে নামিয়ে দিতে চাইছে।  আর আকর্ষের সেখান থেকে আসতেও অনেক সময় লাগবে তাই বললো,
“না না থাক আপনার কষ্ট করতে হবে না।”

bengali panu

আকর্ষের কেন যেনো ওকে একা ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। আর এতো রাতে কিছু হয়ে যায় এই ভয়েই কিছুটা আদেশের সুরেই বললো,
“ম্যাম অনেক রাত হয়ে গেছে আমার সাথেই চলুন।”
নায়নীর কাছে এই কথাটা অনুরোধ কম আদেশ বেশি মনে হলো। নায়নী অনেক অবাক হলো, এতো অবাক নায়নী সচারচ হয় না আজকে যতটা হলো।

নায়নী তাও ভাবছিলো যে, নাহ আকর্ষের সাথে যাবে না, কিন্তু না গেলে কি করবে ভাবছিলো।
তখন আকর্ষ আবার বললো,
“ম্যাম আপনি দেখছেন তো এখন ট্যাক্সি পাওয়া যাচ্ছে না তাই আমি আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসছি, চলুন।” bengali panu

নায়নী ভাবলো আসলেই কথাটা ঠিক এখন ট্যাক্সি পাওয়া যাবে না তার চেয়ে ভালো ও জা বলছে তাই হোক। নায়নী তখন ওর কথায় রাজি হয়ে গেল। নায়নীকে হেলমেট দিলো পড়ার জন্য, কিন্তু নায়নী জানেই না কিভাবে হেলমেট পড়তে হয় তাই মাথায় দিয়ে ট্রাই করছিলো কিন্তু কোনো ভাবেই লাগাতে পারছিলো না। তাই দেখে আকর্ষ নায়নীর একবারে কাছে চলে আসে আর হেলমেটের ফিতা ধরে লাগিয়ে দেয়। প্

রথমে নায়নী আকর্ষের এই ব্যবহারে দূরে সরে গেলেও যখন বুঝলো যে আসলে ও হেলমেট পরিয়ে দেওয়ার জন্য এসেছিলো তখন আর দূরে সরে যায়নি। হেলমেট পড়ানোর পর নায়নী বাইকে উঠে বসলো, আকর্ষ ধীরে ধীরে চালাতে শুরু করলো কারণ যদি ধীরে ধীরে না চালায় তাহলে নায়নী ঠিক মতো বসতে পারবে না, আর মনে করবে নায়নীর শরীরের সাথে নিজের শরীরের স্পর্শের জন্য আকর্ষ এই সব করছে,. bengali panu

এই কথা যেনো না ভাবে তাই আকর্ষ আস্তে আস্তে চালাতে শুরু করলো। নায়নী আর একর্ধ রেস্টুরেন্ট থেকে অনেক টাই দূরে এসে পড়েছে। নায়নী এইবার প্রথম মুখ খুললো,
“আপনার এতো দূর না আসলেও হতো আমি একা একা যেতে পারতাম।”
নায়নী আর আকর্ষ এক অফিস এক টীমে কাজ করলেও ওদের কথা হতো খুব কম।

আর ওদের সম্পর্কটাও অনেক ফর্মাল যার কারণে ওরা এখনও  আপনিতেই রয়ে গেছে। টাই নায়নী প্রথমে আপনি করেই বললো।
“হয়তো যেতে পারতেন, কিন্তু রাত হয়ে যাচ্ছিলো আর এতো রাতে একলা একটা মেয়েকে একা ছাড়া ঠিক মনে হলো না টাই আর কি আমি সাথে আসলাম।” bengali panu

এই কথা শুনে নায়নীর কেমন যেনো একটা লাগলো, নায়নী ভাবতেই লাগল, এইটা কি শুধু দায়িত্ববোধ থেকে বললো নাকি অন্য কোনো কারণ আছে নায়নী ভেবে পায় না।

“আমার আর কি হবে আমি তো আর কোনো কম বয়সী মেয়ে নই, যে আমার কোনো সমস্যা হবে।”
এই কথা শোনার পর আকর্ষ জোরে জোরে হেসে দিলো। নায়নী কিছুটা অবাকই হলো এইভাবে হাসার কি হলো তাই নায়নী কৌতূহল বসত জিজ্ঞেস করলো,
“হাসছেন যে?”
“হাসছি আপনার কথা শুনে।”

“কেন আমি কি হাসির কথা বললাম?”
“আপনি বললেন আপনি কম বয়সী মেয়ে না? কিন্তু আপনাকে দেখে কম বয়সী মনে হয়। আপনাকে দেখে আপনার সঠীক বয়স কেও বলতে পারবে না। আপনি এখনও অনেক কম বয়সী মেয়েকে সৌদির্যের প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিতে পারবেন।”
এই কথা বলেই আকর্ষ হাসতে লাগলো। bengali panu

নায়নী অনেক লজ্জা পেলো এই কথা শুনে। অনেক দিন পর এই রকম কথা কেও বলেছে ওকে। এত সোজাসুজি ভাবে এই কথাটা বলবে নায়নী আশা করেনি। নায়নীর কান দিয়ে গরম বাতাস বের হতে লাগলো আর লজ্জার গাল ২টো লাল হয়ে গিয়েছে একেবারে।
নায়নী কথা ঘুরানোর জন্য
“আপনার ঘরের সবাই আপনার জন্য চিন্তা করছে হয়তো?”

“চিন্তা নেই আমি ঘরে ফোন করে বলে দিয়েছি আসতে একটু লেট্ হবে। আপনি সেটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। ”
এই কথা বলতে না বলতে কখন যে রাস্তার মাঝে একটা গর্ত এসে পড়েছে সেটার খেয়াল নেই। আকর্ষ সামনে তাকাতে দেখে সামনে বড়ো একটা গর্ত। গর্ত পাশ কাটিয়ে যাওয়ারও সময় নেই। তাই আর কোনো উপায় না পেয়ে সেখান দিয়েই চালিয়ে দিলো। bengali panu

নায়নী সাথে সাথে বড়ো একটা ঝাকুনি খেলো নায়নীর পরে যাবার জোগাড়। তাই সাথে সাথে পরে যাওয়া থেকে বাঁচার জন্য। আকর্ষকে জড়িয়ে ধরলো। একেবারে পুরো দুইহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। কবির সিং মুভিতে যেমন প্রীতি কবিরকে যেভাবে ধরিয়ে রাখে ঠিক সেইভাবে। আকর্ষের এখন কি করা উচিত সেটা ভেবে পাচ্ছে না। এই অনুভূতিটা সম্পূর্ণ নতুন একটা অনুভূতি। আকর্ষ কিছু বললো না, আকর্ষ দেখলো নায়নী চোখ বন্ধ করে আছে।

কি নিষ্পাপ লাগছে দেখে। আকর্ষের ইচ্ছে করছিলো এইভাবেই থাকতে তাই আকর্ষ আর কিছু বললো না। ঐভাবেই থাকলো। নায়নী আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখলো, ও আকর্ষকে জড়িয়ে ধরে আছে। তাড়াতাড়ি করে হাত দুটো ছাড়িয়ে নিলো। ইস কি লজ্জা কি ভাববে মানুষটা। অনেক খারাপ লাগছে আকর্ষ যদি উল্টা পাল্টা কিছু ভাবে। তাই আর দেরি না করে সাথে সাথেই আকর্ষের থেকে একটু দূরে সরে গেলো। bengali panu

আকর্ষ বুঝলো নায়নীর অস্বস্তি হচ্ছে তাজ আর কিছু বললো না। নায়নীর যে বাইকে উঠার খুব বেশি অভ্যাস নেই সেইটা দেখেই বুঝা যায়।  তাজ আকর্ষ একটু আস্তে আস্তে চালাচ্ছে। নায়নী নিজের অস্বস্তি কাটানোর জন্য বললো,
“আপনার গার্লফ্রেইন্ড যদি জানে আপনি আমাকে ঘরে পৌছিয়ে দেয়ার জন্য এতো দূরে এসেছেন।তাহলে আপনাকে মেরেই ফেলবে। ”

এই কথা শুনে আকর্ষ হেসে দিলো আর বললো,
“গার্লফ্রেইন্ড থাকলে তো মারবে।”
“কিভাবে বুঝি যে নেই।”
“সেটা ঠিক কিন্তু আমি আপনাকে মিথ্যা কেন বলবো বলুন?”
নায়নী বুঝলো আসলেই ওর কথায় পয়েন্ট আছে। bengali panu

আকর্ষ বললো,
“আপনি কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি?”
“হ্যা বলুন না।”
“আমি আপনার থেকে বয়সে অনেক ছোট আমাকে আপনি না বললে আমাকে তুমি বললে আমি খুশির হবো।”
“কিন্তু আমি যে আপনিতেই অভ্যস্ত।”

“সমস্যা নেই। আপনি অফিসের ভেতরে আমাকে আপনি বলবেন আর বাইরে তুমি।”
“আসলে দেখুন আকর্ষ আমি কাউকে তুমি খুব বেশি একটা বলি না। তাও আমি চেষ্টা করবো।”
“ঠিক আছে ওতেই হবে।”

নায়নী বললো,
“আমার খুব খারাপ লাগছে।”
আকর্ষ বললো,
“কোনো?”
“আমার জন্য আপনাকে এতো কষ্ট করতে হচ্ছে।” bengali panu

আকর্ষ এই কথার উত্তরে বললো,
“আবার আপনি নাহ এইভাবে চলবে না। বলুন তুমি।”
“আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার সমস্যা হবে না তো?”
“নাহ আমার কোনো সমস্যা হবে না। আপনি চিন্তা করবেন না একদম।”

দেখতে দেখতে নায়নীর কলোনিতে এসে পড়লো। নায়নী কলোনির গেটেই নেমে গেলো। আকর্ষকে বললো,
“ধণ্যবাদ। আমাকে আজকে সাহাজো করার জন্য।”
“কোনো সমস্যা নেই।”
“আজকে তাহলে আসি। ”

“হ্যা আমিও। ”
এই বলে আকর্ষ বাইক নিয়ে চলে গেলো। নায়নী দেখতে লাগলো। আকর্ষের যাওয়ার দিকে। অনেক দিন পর নিজেকে স্পেশাল মনে হচ্ছে। নায়নীর মনে হলো নায়নী একা না। bengali panu

নায়নী ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলো। আজকে একটু ভালোই লাগছে। সারাজীবন বাইকে না বসা নায়নী আজকে বাইকে করে নিজের ঘরে এসেছে, আর কে দিয়ে গেছে নিজের অফিসের এক জুনিয়র। অন্য সবাই যেখানে ফায়দা লুটার চেষ্টা করতো টা করেনি। নায়নী ধরেই নিয়েছিলো, আকর্ষ বার বার ব্রেক করবে নিজের শরীরের সাথে ওর শরীর যেনো টাচ লাগে সে জন্য, কিন্তু আকর্ষ একদম তা করেনি উঠলো খুব সাবধানে এসেছে।

নায়নীর অনেক ভালো লেগেছে ব্যাপারটা। ফ্রেশ হয়ে আসার পর নায়নীর মনে হলো একটি বার কল করে জানা উচিত বাড়ি পৌছালো কিনা? তাই নায়নী আকর্ষকে হোয়াটস্যাপে এসএমএস করলো,
“ঘরে পৌছিয়েছো?”
এসএমএস ডেলিভারি হলো ঠিকই কিন্তু সীন করলো না আকর্ষ। নায়নী বুঝলো হয়তো ব্যস্ত তাই রেপ্লায় দিচ্ছে না। bengali panu

আজকে আর কিছু খাবার ইচ্ছে নেই রেস্টুরেন্ট এ অনেক খাবার খেয়েছে। এই খাবারের জন্য কতো কষ্ট করতে হবে তা নায়নী ছাড়া কেও বুঝবে কিনা সন্দেহ। নায়নী ৩৭ বছরের হলেও নিজের শরীরকে একে বারে ফিট রেখেছে। যেখানে ওর বান্ধবীদের দেখলেই বলে দেওয়া যায় তার বয়স ৩০ এর ওপরে সেখানে নায়নীকে দেখলেই এখনও বুড়ো থেকে ছোকরা সবাই ঘুরে দেখে।

ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে মায়ের সাথে কথা বলেই ঘরে গিয়ে ফোনটা চার্জে দিলো সারাদিনের কাজের চাপে ফোনটা চার্জ দিতে ভুলে গেছে। ফোনটা যে কখন বন্ধ হয়ে গেছে সেটার কোনো খেয়াল নেই। তাই ফোনটা চার্জে দিলো। ফোনটা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দেখলো নায়নীর এসএমএস। এসএমএসটা দেখে আকর্ষের মনে খুশির বন্যা বইতে লাগলো। কেন জানি আকর্ষের মনে আজকে রঙ লেগেছে।
আকর্ষ তাই দেরি না করে এসএমএস দিলো,
“হ্যা আমি পৌছিয়েছি। ” bengali panu

নায়নীর একটা ওয়েব সিরিজ দেখছিলো তখন নোটিফিকেশন আসে হোয়াটস্যাপের। নায়নী দেখে আকর্ষ পৌছিয়ে গেছে। তাই আর বেশি কিছু বললো না, শুধু বললো,
“ঠিক আছে। গুড নাইট।”

আকর্ষের এই এসএমএস পাওয়ার পর মনের ভেতর জ্বলতে থাকা আগুন ধপ করে নিভে গেলো।
মনে করেছিল আজকে একটু কথা বলবে কিন্তু না কথা বলা হলো না, কিন্তু যাক আকর্ষ এইটা ভেবেই খুশি যে ওকে নিয়ে ভেবেছে।

সৌমিত্র রায়ের কেবিনে যাওয়ার জন্য ডাক পড়েছে  আকর্ষের। সৌমিত্র রায়ের সাথে তার কেবিনে এইবার প্রথম যাবে। বাইরে ২ একবার কথা হলেও অফিসের ভেতর এই প্রথম। আকর্ষ দেরি না করে সৌমিত্র রায়ের কেবিনে গেলো। গিয়ে দেখলো নায়নী আগে থেকেই সেখানে বসা আছে। আকর্ষ কিছুটা অবাক হয়েই রইলো নায়নী আর আকর্ষকে একসাথে কেন ডাকা হলো ভেবে পেলো না। bengali panu

সৌমিত্র রায় দেখলো আকর্ষ দাঁড়িয়ে আছে,
“আরে আকর্ষ দাঁড়িয়ে আছো কেন বসো?”
“হ্যা স্যার।”
সৌমিত্র রায় বলতে লাগলো,
“তোমরা ২ জন অবাক হয়েছো হয়তো আমি তোমাদের আগে পরে কেন দেখলাম।

আসলে আমাদের কোম্পানির একটা প্রজেক্টের কাজের জন্য আমাদের অফিসে থেকে ২ জনের কৃষ্ণনগর যেতে হবে। আমি ভেবেছি তোমরা ২ জন যাবে। আর আমাদের প্রজেক্টটা হ্যান্ডেল করবে আর ঐ কাজটা শেষ হওয়ার পর আমাকে একটা রিপোর্ট জমা দিবে। ”
আকর্ষ কি বলবে বুঝতে পারলো না। bengali panu

এতো দেখি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। আকর্ষ সঙ্গে সঙ্গে সৌমিত্র রায়কে বললো, ও রাজি ও যাবে।  সৌমিত্র রায়ও ওর এতো উৎসাহ দেখে খুব খুশি। আকর্ষ নিজের কাজ নিয়ে খুব প্যাশনেট। তখন সৌমিত্র রায় অদ্রর বললো,
“কালকে সকালে অফিসার সামনে গাড়ি থাকবে সেই গাড়ি করে তোমরা যাবে। আর বিকেলের পর পরই তোমরা ব্যাক করবে। ঠিক আছে।”

আকর্ষ আর নায়নী দুইজনেই রাজি হলো তারা যাবে। তাঁদের কোনো সমস্যা নেই। সৌমিত্র রায় বললো,
“তাহলে তোমরা যেতে পারো।”
তখন নায়নী বললো,
“আমার কিছু কথা আছে স্যার।”
“হ্যা বলো।” bengali panu

আকর্ষ তখন বললো, “আমি আসি স্যার।”
আকর্ষ এই বলে চলে গেলো। নায়নী তখন বললো,
“স্যার আমি চাচ্ছিলাম  রুপাকে  নিয়ে যেতে, রুপাকে নিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো।”

সৌমিত্র রায় বুঝতে পারল নায়নীর ভয় করছে তাই সৌমিত্র নয় বলল,
“নায়নী তোমার কোন সমস্যা নেই আকর্ষ ভালো ছেলে। আর ওর কাজ অনেক দক্ষ আর আমি আশা করি কোন সমস্যা হবে না। তুমি নিশ্চিন্তে যাও যদি কোন সমস্যায় আমাকে ফোন দিও।”
নায়নী  আর কিছু বলতে পারোনা শুধু বলল,
“ঠিক আছে স্যার। আমি যাবো।” bengali panu

আকর্ষ ডেস্কে যাওয়ার সাথে সাথে সবাই ওকে ঘিরে ধরল কি হয়েছে শোনার জন্য। আকর্ষ সব ভেঙে বলল ওদের। সবাই শুনে বলল ঘুরে আসতে কাজটা করে আসতে। ওরা সবাই কথা বলছিল এমন সময়  নায়নী আসলো আর ওদের সবাইকে একসাথে ডাকলো।

আর সবাইকে বলল যে কালকে ও আর আকর্ষ থাকবে না তাই কার কি
কাজ করতে হবে সব বুঝিয়ে দিলো। আর বলল যদি কোন সমস্যা হয় নায়নীকে যেন ফোন দেয়।
এই কথা বলে নায়নী নিজের ডেস্কে চলে গেল। আর ওরা সবাই কাজে লেগে পড়লো।

ঘরে গিয়ে আকর্ষ ওর মাকে বলল কালকে ও  কিছু কাজে কৃষ্ণনগর যাবে আসতে অনেক রাত হতে পারে আবার তাড়াতাড়িও চলে আসতে পারে। সে যেনো খেয়ে নেয়। আর ওষুধ যেনো না ভুলে

কৃষ্ণনগর একটু দূরে যেতে কম করে ২ থেকে ৩ ঘন্টা লাগবেই তাই ওরা একটু সকাল সকাল রওনা দিবে। তাই নায়নী আর আকর্ষ ২ জনেই সকাল সকাল অফিসের সামনে হাজির। আকর্ষের আসতে একটু দেরি হয়েছে, কিন্তু খুব বেশি না।  আকর্ষ আজকে বাইক আনেনি। বাসে এসেছে তাই দেরি হয়েছে। আকর্ষ আসার সাথে সাথে গাড়ি ছেড়ে দিলো। প্রথমে আকর্ষ ভেবেছিলো ড্রাইভার এর পাশে বসবে কিন্তু নায়নী বসতে দেয়নি। bengali panu

আকর্ষ নায়নীর সাথেই বসলো। নায়নী আকর্ষকে বুঝিয়ে দিতে লাগলো কি করতে হবে কিভাবে রিপোর্টটা তৈরী করতে হবে সব। আকর্ষও মনোজোগ দিয়ে সব শুনলো। কাজ বুঝানো হয়ে গেলে আকর্ষ ফোন বের করে গান শুনতে লাগলো চোখ বন্ধ করে আর নায়নী জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলো। এইভাবে কিছুক্ষন যাওয়ার পর নায়নী হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করেছিল, কিন্তু কক্ষ বন্ধ করার কিছুক্ষন পরেই নায়নীর চোখে ঘুম এসে পরে।

চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলো আকর্ষ এমন সময় ওর কাঁধে ভারী কিছু অনুভব হয়। আকর্ষ বুঝতে পারে না কি? তাই ও চোখ খুলে দেখে আসলে কি হয়েছে? কিন্তু যা দেখলো তা দেখে ওর মাথা ঘুরে পরে যাবার মতো অবস্থা।  আকর্ষ দেখলো, নায়নী আকর্ষেরঘাড়ে কাঁধে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ইসস কি সুন্দর লাগছে এই মানবীকে। মানবী বললে অপরাধ হবে নায়নী কোনো অপ্সরার থেকে কম না। আকর্ষ একবার হুমায়ন আহমেদের বইয়ে পড়েছিল,

“ যে নারীকে ঘুমন্ত অবস্থায় সুন্দর দেখায়
সেই প্রকৃত রূপবতী ” bengali panu

সেই কথাটা নায়নীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অনেক নারীকে আকর্ষ ঘুমন্ত অবস্থায় দেখেছে কিন্তু নায়নীর মতো কাওকেই দেখেনি। আকর্ষ আর কিছুই বললো না। ও ঘুমিয়ে থাকতে দিলো। নায়নী যদি ওর কাঁধে সারাদিন ও এইভাবে ঘুমায় তাও আকর্ষ কিচ্ছু বলবে না। তাই ঐভাবেই রইলো।
তখনই রবীন্দ্রনাথের গান ফোনে বেজে উঠলো,

“তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো
ছেড়ে দিবো না।”

আকর্ষ গান শুনতে লাগলো। আকর্ষের মনে কিছু হচ্ছে যা আকর্ষ বুঝতে পারছে না। বা বুঝেও না বুঝার মতো করে রয়েছে।
দেখতে দেখতে গাড়ি কৃষ্ণনগরের যে অফিসে আসার কথা ছিলো সেখানে এসে পড়লো। ড্রাইভার বললো,
“স্যার এসে পড়েছি।”

আকর্ষের মনে হলো এতো তাড়াতাড়ি এসে পড়েছে।  কিন্তু আদতে গাড়ি অনেক সময় ভোরেই এসেছে কিন্তু আকর্ষ একটা ঘোরের মধ্যে ছিলো এতক্ষন তাই বুঝতে পারেনি। আকর্ষ দেখলো নায়নী এখনও ঘুমে, এতো সুন্দর রমণীকে ঘুম থেকে উঠানোর কোনো ইচ্ছা না থাকলেও কোনো উপায় নেই তাই ডাকতে লাগলো।

“ম্যাম, ম্যাম উঠুন এসে পড়েছি। ” bengali panu

নায়নী চোখ খুলে দেখলো আকর্ষ ওকে ডাকছে। নায়নীর বুঝতে একটু সময় লাগলো কি হয়েছে যখনই  নায়নী দেখলো ও আকর্ষের কাঁধে মাথা দিয়ে আছে। সেটা দেখার পরেই এক ঝটকায় উঠে পড়লো। লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো নায়নী। এই রকম লজ্জায় খুব কম পড়েছে নায়নী।

ইসস কি লজ্জা। এখন কি ভাববে আকর্ষ। এইসব ভাবতেই লাগলো। কিন্তু এই সব ভাবার সময় না এখন ওদের গন্তব্যে এসে পড়েছে। তাই দেরি না করে তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে অফিসে ঢুকলো।  অফিসে ঢুকেই কাজ শুরু করে দিলো। ওরা পুরো অফিস ঘুরতে লাগলো, আর রিপোর্ট তৈরী করতে লাগলো। নায়নী মনে করেছিল অনেক প্রশ্ন করবে আকর্ষ রিপোর্ট নিয়ে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আকর্ষ কোনো প্রশ্ন করেনি।

যখন সব শেষ হয় আকর্ষের কাছে রিপোর্ট চায় তখন দেখে আকর্ষ অনেক সুন্দর করেই রিপোর্ট করেছে। এতো ভালো ভাবে রিপোর্ট করেছে যে সেখানে ভুল ধরার কোনো জায়গা নেই। যেখানে অন্য কেও আসলে অনেক সময় লাগতো রিপোর্টাও এতো ভালো হতো কিনা সন্দেহ আছে।  কাজ করতে করতে যে কখন দুপুর হয়ে গেছে। সেটা বুঝতে পারেনি নায়নী আর আকর্ষ। bengali panu

খিদেও লেগেছে তাই অফিসের কাজের পাঠ চুকিয়ে একেবারের অফিস থেকে বের হয়ে গেলো আকর্ষ আর নায়নী।  নায়নী ড্রাইভারকে বললো, পাশের একটা  রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে। সেখানেই দুপুরের লাঞ্চটা সারলো নায়নী আর আকর্ষ। খাওয়া শেষ করেই দেখে  ড্রাইভার নেই কোথায় গেলো? ড্রাইভারকে ফোন দেওয়ার পর জানতে পারলো ড্রাইভার ওর এক দূরসম্পর্কের ভাইয়ের কাছে গিয়েছে।

আসতে একটু সময় লাগলো। আকর্ষ এইটার সুজোগ নিয়ে বললো,
“ম্যাম পাশেই একটা পার্ক আছে চলুন সেখানে গিয়ে বসি ড্রাইভার আসলে আমাদের ফোন দিবে তখন না হয় আমরা রওনা দেই।”
নায়নীর ইচ্ছে না থাকলেও এতটা সময় কি করবে ভেবে না পেয়ে যাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে গেলো।

যাওয়ার সময় একরাহ নিজের ফুল হাতা শার্ট গুটিয়ে নিলো। আকর্ষকে এইভাবে কয়েকদিন দেখেছে নায়নী এই লুকে আকর্ষকে দেখতে নায়নীর ভালো লাগে। আকর্ষ কিছু বলতে বলতেও বলতে পারছে না। নায়নী সেটা বুঝলো, তাই নায়নী নিজেই জিজ্ঞেস করলো,
“কিছু বলবে।” bengali panu

“আসলে ম্যাম। কিভাবে বলি?”
“বলো সমস্যা নেই।”
“সত্যি  বলতে আমার একটু স্মোকিং এর অভ্যেস আছে। আমি একটু স্মোক করতাম। যদি পারমিশন দিতেন।”
নায়নী এই কথা শুনে হেসে দিলো, আর বললো
“ঠিক আছে করো।”

নায়নীর পারমিশন চেয়েই আকর্ষ একটা সিগারেট ধরলো।  সিগারেটের ধোয়া ভেতর ছাড়তে ছাড়তে পার্কে ঢুকলো নায়নী আর আকর্ষ। নায়নী গিয়ে একটা ব্রেঞ্চে বসলো। আকর্ষ একটু দূরে দাঁড়িয়ে স্মোকিং করে এসে নায়নীর পাশে বসলো। আকর্ষ বললো,
“ধন্যবাদ ম্যাম।”

“তুমি যদি আমার কাছে থেকে পারমিশন না নিয়েও খেতে তাহলেও আমি কিছু বলতাম না।”
“হয়তো চাইলেও করতে পারতাম। কিন্তু আপনি আমার সিনিয়র আর এখনও অফিসের কাজের আছি আমরা তাই আপনার কাছে থেকে পারমিশন নিলাম।”
“গুড। আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন আছে।” bengali panu

“হ্যা ম্যাম বলুন না।”
“আমি শুনেছি তুমি আগের অফিসে টীম লিডার ছিলে তাহলে সেই পদ ছেড়ে এখানে আসলে কেন?”
“সত্যি বলতে ম্যাম। আমার মা একা আমার বাবা নেই আমার মার বয়স হয়েছে। উনি একা থাকতে চান না। আর মার শরীরের কন্ডিশনও খুব বেশি ভালো না। তাই আমি এখানে এসে পড়েছি। ”

“তোমার বাবার কি হয়েছিল?”
“আমার বাবা আমাকে ক্লাস ১০ এ থাকতে হার্ট এটাক করে মারা যায়।”
“ওহ আমি দুঃখিত।”
“আরে না না ম্যাম কোনো সমস্যা নেই।”

“তোমাকে নিয়ে তো অফিসে কানাঘুষা হচ্ছে তুমি জানো? ”
আকর্ষ নায়নীর দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকালো,
আর জিজ্ঞেস করলো,
“কেন ম্যাম?” bengali panu

“তোমার কি গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা? বা তোমার গার্লফ্রেন্ড থাকার পরেও তুমি কি লুকিয়ে রেখেছো কিনা এইসব। তুমি কিন্তু মহিলা মহলে খুব পপুলার।”
এই কথা শুনে, আকর্ষ জোরে জোরে হেসে দিলো আর বললো,
“নাহ ম্যাম আমার গার্লফ্রেইন্ড নেই। কিন্তু হ্যা একটা সময় ছিলো।”

“কেন এখন নেই কেন?”
“তাহলে আমাকে অনেক কিছু বলতে হবে।”
“বলো আমি শুনছি।”
আকর্ষ নায়নীর দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,
” বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরে আমার মা। বাবা বেঁচে থাকতে আমাদের পরিবার সুখেই ছিলো। bengali panu

বাবা ছিলেন স্কুল টিচার। বাবা মারা যাওয়ার পর সেই দায়িত্ব আমার মা কাঁধে তুলে নেন। ক্লাস ১১ এ আমার একটা সম্পর্ক হয় আমাদের স্কুলের একটা মেয়ের সাথে। তখন কতই বা বয়স নতুন নতুন প্রেমে পড়েছি পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাদিন ওকে নিয়ে ভাবা ওকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এইসব একদিন ওর ফ্যামিলি আর আমার মা ব্যাপারটা জেনে যায়। তারপর শুরু হয় সমস্যা।

মা আমাকে বলে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে কিন্তু আমি আসিনা জিদ করে আমি সম্পর্ক চালিয়ে যাই, মায়ের সাথে প্রায় ঝগড়া হতো আমি পড়া লেখার করা ছেড়ে দিলাম সব ছেড়ে শুধু ওর পিছনে পরে থাকতাম ওকে জিয়ে ভাবতাম কিন্তু কথায় আছে না, গরিবের কথা বাসি হলেও ফলে আমার হলো সেই  দশা। যার জন্য এতো ঝগড়া এতো কিছু সেই একদিন আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। bengali panu

তারপর আমি সেই কষ্ট সহ্য করতে পারলাম না সারাদিন ঘরে আটকে রাখতাম নিজেকে। খেতাম না ঠিক মতো মনে হয়েছিল আমার সব শেষ। আস্তে আসতে আমার ট্রাস্ট পরীক্ষা এসে পড়লো। আমি না পড়ার ফলে ফেল করে বসলাম ২টা সাবজেক্টে। আমি যেনো পরীক্ষা দিতে পারি তার জন্য মা হেডস্যারের সামনে গিয়ে কান্না করে দিলো। আমি আমার মার কান্না দেখে নিজেকে আটকাতে পারলাম না।

মাকে নিয়ে ঘরে চলে আসলাম আর নিজেকে নিজেই প্রমিস করলাম আর মাকে কষ্ট পেতে দিবো না। তারপর আবার ক্লাস ১২ এ পড়া স্টার্ট করলাম দিন রাত ভুলে সব সময় পড়তাম যেখানে থেকে পারতাম নোট কালেক্ট করতাম। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করলাম। দেখতে দেখতে বোর্ড পরীক্ষা এসে পড়লো। আমি পরীক্ষা দিলাম। আর সরকারি কলেজের জন্য প্রিপারেশন নিতে লাগলাম। bengali panu

রেজাল্ট দিলো আমি স্কুলের মধ্যে সব চেয়ে ভালো রেজাল্ট করলাম। ভালো নাম করা সরকারি কলেজে চান্স পেলাম। সেখানেই পড়া শুরু করলাম। চান্স পাওয়ার পর নারী শরীররের অভাব হয়নি। নারী শরীর তখন হাতের নাগালেই ছিলো। কিন্তু আমি কউকে ভালোবাসতে পারতাম না। শুধু শরীরের ক্ষুদা মেটানোর জন্য নারী শরীর চাইতাম। এমন না যে আমি জোড় করে কাউকে ভোগ করেছি।

যারা আমাকে সুজোগ দিয়েছে আমি তাঁদের ভোগ করেছি আর এতে আমি কোনো গিল্টি ফীল করি না। তারপর ভালো রেজাল্ট করে কলেজ থেকে বের হয়েই বেঙ্গালুরুতে চাকরিতে চলে গেলাম। ”
এতো গুলো কথা বলে থামলো আকর্ষ। নায়নী চুপ করে সব শুনলো। কিছুই জিজ্ঞেস করেনি।
“এখনও কি তাকে ভালোবাসো?”

“নাহ তাকে আমি এখন ভালোবাসি না আবার ঘৃণাও করি না। তার সাথে আমার কিছু সুন্দর মুহুর্ত কেটেছে কিছু ভালো সময় কেটেছে আর সে না চলে গেলে আজকের আকর্ষ আমি হতে পারতাম না। ওহ আমি কিন্তু স্কুলে ক্যাবলা কান্ত ছিলাম। ও চলে যাওয়ার পর নিজেকে পরিবর্তন করেছি।”
এই বলেই আকর্ষ হেসে দিলো। bengali panu

নায়নী সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলো না। কিছু একটা আছে যা নায়নীর মনে ঝড় তুলে।
নায়নী তাই জিজ্ঞেস করলো,
“তাহলে কেমিকন মেয়ে পছন্দ তোমার?”
“কেন?”
“আমার আশেপাশে থাকলে আমি খুঁজে দিতাম?”

“যদি বলি আপনাকে পছন্দ।”
এই বলে আকর্ষ হেসে দিলো। নায়নী চোখ বড়ো করে করে তাকিয়ে বললো,
” কি বললে? ”
নায়নীর কানে কথাটা বাজছে ও কি বললো?

আকর্ষ উত্তর দিলো,
“আরে বাবা একটু মজা করলাম। আপনি এই রকম করছেন কেন?
এই কথা শুনে নায়নী হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
এমন সময় আকর্ষের ফোন বেজে উঠলো। দেখলো ড্রাইভার ফোন করেছে। bengali panu

আকর্ষ বললো,
“চলুন ম্যাম। গাড়ি চলে এসেছে।”
এই বলে আকর্ষ উঠলো। আর নায়নীও আকর্ষের পিছনে পিছনে গাড়িতে গিয়ে বসলো। গাড়ি ছেড়ে দিলো কলকাতার উদ্দেশ্যে।

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল / 5. মোট ভোটঃ

কেও এখনো ভোট দেয় নি

3 thoughts on “bengali panu অসম বয়সের বসন্ত – 4”

Leave a Comment