bangla romantic kahini choti. সবার মুখে একই কথা, ঠিক জায়গায় এনেছেত ওদের? হোটেলের বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কোথাও আলোর চিহ্ণ মাত্র নেই, কিছুই দেখা যায় না, চারদিকে শুধু উঁচু উঁচু কালো পাহাড় আর দুরে কয়েকটা ছোটো ছোটো কুঁড়ে ঘরের থেকে আসা আলো। রানী আর কল্যাণী অভিকে জিজ্ঞেস করে যে ও ঠিক জায়গায় এসেছে কিনা। পরী ম্যানেজারের সাথে রুম নিয়ে দরদাম করছিল, ওদের কথা শুনে অভির দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে। সেই হাসে অভিকে নিয়ে যায় পুরানো স্মৃতিতে, পরীর মুখেও গতবার সেই একি প্রশ্ন ছিল। অভি কল্যাণীকে অভয় দিয়ে বলে, সকাল হলেই বুঝতে পারবে জায়গার আসল মর্ম। রাতের খাওয়া একটু দেরি করেই শেষ হয়। অরুনার জন্য আলাদা রুম নেওয়া হয়, পরী তাতে একটু চিন্তিত।
পরী অরুনাকে জিজ্ঞেস করে, “কিরে একা শুতে পারবি ত?”
অরুনা হেসে উত্তর দেয়, “ঠিক পারব, আমি আর কচি খুকি নই।”
romantic kahini
পরী অরুনাকে ওর ঘরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে গায়ের ওপরে চাদর টেনে দেয়। অরুনা চোখ বন্ধ না করা পর্যন্ত পরী ওর পাশে বসে থাকে। অরুনা ঘুমিয়ে পড়ার পরে পরী আর অভি নিজেদের রুমে চলে আসে।
অভি কাপড় বদলে নিয়ে বিছানার ওপরে ডায়রি খুলে বসে পরে সারা দিনের খরচ খরচা লেখার জন্য। পরী জামা কাপড় বদলে নেবার জন্য বাথরুমে ঢুকে পরে। কিছু পরে পরী বাথরুম থেকে বেড়িয়ে আসে আর ওকে দেখে অভির সব অঙ্ক গুলিয়ে যায়।
পরী ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “মনে আছে প্রথম রাতের কথা আর প্রথম ঝগড়া।”
অভির মুখ হাঁ, পরীর পরনে গোলাপি রঙের পাতলা রাত্রিবাস। যদিও পরনের কাপড় গোড়ালি পর্যন্ত কিন্তু ওর কাঁধ অনাবৃত আর ওর পেলব দেহের সাথে লেপটে থাকে কাপড়। প্রেয়সীর শরীরের প্রত্যেক বাঁক ওর লুব্ধ চোখের সামনে উন্মুক্ত যেন, উন্নত বক্ষের মাঝে ছোটো নুড়ি পাথর শোভা পায়। সুগোল বক্ষ জোড়া যেন হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকছে। বক্ষ বিভাজনের অধিকাংশ অনাবৃত আর ঘরের মৃদু আল যেন ফর্সা মসৃণ ত্বকের ওপরে পিছলে যাচ্ছে। দু বাহু আর কাঁধ অনাবৃত, মাথার চুল খোলা, ঠোঁটে মাখা দুষ্টু মিষ্টি হাসি। পীনোন্নত বক্ষ যুগলের পরে দেহের আকার পাতলা হয়ে নেমে আসে নরম গোল পেট, তাঁর মাঝে সুগভীর নাভিদেশ পরিষ্কার বোঝা যায়, পাতলা আভরনের নিচে। romantic kahini
গোল পেটের নিচে তোলপেট একটু ফুলে উঠে বেঁকে নেমে যায় জানুসন্ধির দিকে। অভির চোখ আটকে যায় জানুসন্ধির দিকে, দুই জানু যেন মসৃণ গাছের গুঁড়ি। পরী আয়নার সামনে বসে পরে, অভির দিকে তাকায় আর হাসে। অভির মাথার সব অঙ্ক গুলিয়ে যায় পরীর অপরূপ ভুগলের সামনে। অভির সিংহ কেশর ফুলিয়ে ওঠে, পরীর নজর চলে যায় ঢেকে থাকা কঠিন সিংহের দিকে। গাল লাল হয়ে ওঠে পরীর, রাতের কথা ভেবে। বুকের মাঝে উত্তাল প্রেমের ঝড় বইতে শুরু হয়। অভি পাগল হয়ে যায় দেখে যে পরীর ওই রাত্রিবাসের নিচে কোন অন্তর্বাস নেই।
মধু ঢালা সুরে অভির দিকে চোরা চাহনি দিয়ে বলে, “ওখানে বসে বসেই কি আমাকে মেরে ফেলবে? কিছু কি বলবে না?”
পরীর গলার সুর শুনে সম্বিৎ ফেরে অভির, “উফ, তুমি না একদম রসে ভরা, পরী। আমি ত আজ রাতে তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে মরেই যাব।”
পরী লাজুক হেসে বলে, “মনে আছে সেই রাতে ঝগড়ার কথা।”
অভি মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, “রাতের ঝগড়ার কথা ত মনে নেই কিন্তু সকালের সেই মিলনের ছবি আমার বুকে আঁকা আছে।”
বিছানার একদিকে সরে গিয়ে পরীর ঠিক পেছনে এসে বসে অভি। পা ফাঁক করে পরীকে নিজের কোলের ওপরে টেনে নেয়। পরীর কোমল নিতম্ব অভির জানুর ভেতরের দিকে স্পর্শ করে, অভি জানু চেপে ধরে পরীর দুপাসে। কোমরের দুপাসে হাত দিয়ে পরীকে জড়িয়ে ধরে পেটের ওপরে চেপে ধরে হাত। নরম পেটে অভির হাতে গলে যায়। অভি ওর ডান কাঁধে মাথা রেখে গালে গাল ঘষে। পরী আয়নায় নিজেদের আলিঙ্গন দেখে আবেগে কেঁপে ওঠে, চোখে চোখ রেখে পরী মিসিত হাসি দেয় অভির দিকে। romantic kahini
চুল আঁচড়ানোর পরে সামনে ঝুঁকে ক্রিম নেয় হাতে মাখার জন্য, আর পরীর ঝকার ফলে ওর সুগোল নিতম্বের নিচে পিষে যায় অভির সিংহ। পরী ওর কোমল নিতম্বের খাঁজে অভির তপ্ত শলাকার স্পর্শ পেয়ে কামনার আগুনে মৃদু কেঁপে ওঠে। কোমরে মোচর দেয় আর তাঁর ফলে অভির সিংহ গেঁথে যায় ওই দুই কোমল নিতম্বের খাঁজে। পরী আর যেন থাকতে পারে না, সারা শরীরে কামনার আগুন ধিকধিক করে জ্বলে ওঠে। অভির তপ্ত শ্বাস ওকে পুড়িয়ে দেয় আর নিচে চেপে থাকা তপ্ত শলাকা ওর শরীরে যেন ফস্কা ফেলে দেয়। অভি আয়নায় ওর চোখের দিকে কামনার আগুন নিয়ে তাকায়।
পরী ওর চোখে কামনার আগুন দেখে আর পিছিয়ে থাকতে না পেরে বলে, “এত তাড়াহুড়ো কেন করছ? আমাকে লোসান লাগাতে দাও তারপরে আমি তোমার।”
অভির হাত উঠে আসে পরীর উন্নত বক্ষের নিচে, আলতো করে চাপ দেয় বুকের নিচের ভাঁজ। গালে গাল ঘষে অভি, উষ্ণ ত্বকের ঘর্ষণের ফলে প্রেমের আগুনের ফুল্কি ছুটতে দেরি হয় না। গাল লাল হয়ে যায় পরীর।
অভি ওর কানে কানে বলে, “লোসান লাগিয়ে কি করবে? আমি ত আজ তোমার সারা শরীরে চুমু খাব, বেবি।”
পরী মৃদু রাগ ব্যাক্ত করে বলে, “শয়তান ছেলে, আমি তোমাকে আমার ঠোঁট আর গাল ছাড়া কোথাও চুমু খেতে দেব না। ভুলেও ভেব না যে তুমি যেটা করতে চাইছ সেটা পেয়ে যাবে।”
অভির লিপ্সা আরও বেড়ে যায়, আঙ্গুল দিয়ে চাপ দেয় পরীর বুকের নিচের বাকে। কাঁধের ওপরে থেকে সামনে ঝুঁকে বুকের মাঝের গভীর খাঁজ দেখে পাগল হয়ে যায় অভি। অপরূপ বক্ষ বিভাজন যেন উপচে পড়ছে পরনের জামার ওপর থেকে। কামনাতারিত অভির চোখের সামনে দোল খায় পরীর বক্ষ। আরও জোরে দুবাহু মাঝে পরীর দেহ চেপে ধরে টেনে নেয় যেন এবারে নিজের দেহের সাথে মিলিয়ে নেবে ওর মাখনের মতন নরম শরীর। সিংহ এবারে নিজের জানান দেয় আর নিতম্ব বিভাজনের মাঝে আটকে যায়। ওদের সারা শরীরে কামনার আগুন কিলবিল করতে শুরু করে দেয়। অভির ডান হাত নিচে নেমে যায় তলপেটের ওপরে, মৃদু চেপে ধরে নরম তুলতুলে তলপেটের মাংস। শ্বাসের গতি বেড়ে যায় আর পরীর উন্নত বুক জোড়া সাগরের ঢেউয়ের মতন ওঠা নামা করে। romantic kahini
পরী ওর খোলা পিঠের ওপরে অভির পেশি বহুল নগ্ন ছাতির পরশ অনুভব করে। ভুলে যায় হাতে পায়ে লোসান লাগাতে। পীনোন্নত বুক জোড়া উপচে প্রায় বেড়িয়ে আসে রাত্রিবাসের ওপরের দিক থেকে। মাথা পেছিন দিকে হেলিয়ে অভির গালে গাল ঘষতে শুরু করে। দুহাত পেছনে এনে, অভির মাথার পেছনে নিয়ে চুল মুঠি করে ধরে নেয়। ঠোঁট জোড়া অল্প ফাঁক করা আর সেই ফাকের ভেতর থেকে তপ্ত শ্বাসের ঝড় বয়। অভি বাম হাতে পরীর এক বক্ষ নিয়ে আলত আলতো চাপ দেয়া শুরু করে, অন্য হাতে পরীর তলপেটে ওপরে ঠিক জানু সন্ধির কাছে চেপে ধরে। প্রেমের তপ্ত আলিঙ্গনে বদ্ধ হয়ে ককিয়ে ওঠে পরী।
অভি ওর ডান কানের লতি ঠোঁটের মাঝে নিয়ে আলতো করে চুষে দেয়। অভি মনপ্রানে চায় যে আজ রাতে প্রেয়সীর উন্মুক্ত যৌবন সুধা চোখ দিয়ে পান করবে আর পরী যখন আলো বন্ধ করতে বলেনি তাহলে পরীর মনেও সেই ইচ্ছে আছে যে অভি ওর রুপশুধা দেখুক দুচোখ ভরে। বুভুক্ষু অভি চেপে ধরে পরীর নরম তুলতুলে বুক, পিষে দেয় নারী মাংস কঠিন থাবার মাঝে। অন্য হাত পৌঁছে যায় নারীতের দোরগোড়ায়, আলতো করে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দেয় সেই গুহার ওপরে।
পরী শক্ত করে চোখ বন্ধ করে শীৎকার করে ওঠে। অভি ফিসফিস করে পরীকে অনুরোধ করে, “সোনা আমার একটা কথা রাখবে?”
পরী থাকতে না পেরে মৃদু সুরে বলে, “তোমার কোন কথা আমি রাখিনি সোনা।”
অভি আঙ্গুল নিয়ে যায় পরীর জানুর মাঝে আর আলতো করে চাপ দিয়ে বলে, “এখানের বাগান ছেটে ফেল, সোনা।”
পরী মৃদু চেঁচিয়ে ওঠে, “না আআআআআ…… শয়তান ছেলে কোথাকার।”পরী দুজানু চেপে ধরে যাতে অভি আর ওর জানু মাঝে আঙ্গুল দিয়ে খেলা করতে না পারে। পরীর কোমল নিতম্বের চাপে অভির সিংহের অবস্থা যায়যায়। তলপেটে থেকে আগুন নিচে নেমে, বারে বারে গর্জে ওঠে সিংহ। romantic kahini
অভি জিজ্ঞেস করে, “কেনো বেবি?”
পরী, “কেন মানে? এইসব কেউ করে নাকি?”
অভি, “কে বলছে যে এইসব করে না?”
পরী, “তুমি জানলে কি করে, যে মেয়েরা করে।”
অভি, “আমি ছবিতে আর অইসব সিনেমাতে দেখেছি।”
লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে পরী, “ছাড়ো আমাকে, তুমি ভীষণ শয়তান।”
পরীকে আরও আঁকড়ে ধরে অভি, আর বারংবার দেহের মোচরের ফলে অভির সিংহ বারেবারে নিতম্বের খাঁজের মাঝে ঘর্ষণ খায়।
ঠিক সেই সময়ে দরজায় আওয়াজ হয়। থতমত খেয়ে ওঠে অভি আর পরী। সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে অভির আলঙ্গন থেকে মুক্ত করে উঠে বসে। কাপড় আর অবিন্যস্ত চুল ঠিক করে নেয়। অভি কোনোরকমে মাথা উঠিয়ে থাকা সিংহ টিকে শান্ত করার চেষ্টা করে। পরী ওর দিকে একটা তোয়ালে ছুঁড়ে দেয় নিজেকে ঢাকার জন্য। অভি পরীর দিকে পরাজিত প্রেমিকের মতন তাকিয়ে হাসে, পরী ওর দিকে দুষ্টু হেসে ইশারা করে, তোমার যেমন শয়তানি ইচ্ছে, ঠিক হয়েছে এবারে।
অভি শ্বাস সামলে আর নিজেকে ঢেকে পরীকে প্রশ্ন করে, “এত রাতে কে হতে পারে?”
পরী গায় একটা ওড়না জড়িয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায়, “অরুনা হতে পারে না কেননা আমি ওকে ঘুম পারিয়ে দিয়ে এসেছিলাম।”
অভি কোমরে তোয়ালে জড়িয়ে দরজা খুলে অবাক হয়ে যায় সামনে অরুনাকে দেখে। ওর দুচোখ জলে ভরা লাল হয়ে ফুলে উঠেছে। সারা মুখ থমথমে, বুকের ভেতরে যেন এক ঝড় বইছে। পরী ওর থমথমে মুখ দেখে অভিকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে অরুনাকে ঘরের মধ্যে টেনে নেয়। romantic kahini
জিজ্ঞেস করে অরুনাকে, “কি হয়েছে তোর?”
পরীর হাতের ছোঁয়া পেয়ে গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পরে অরুনার, “তোমার কাছে শুতে দেবে, শুচিদি?”
পরী অভির দিকে হতাশার চাহনি দিয়ে মৃদু হাসে, অভি বোকার মতন দাঁড়িয়ে মাথা চুলকায়। অরুনাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে গায়ের ওপরে কম্বল্টা ভাল করে টেনে দেয়। অভির দিকে ফিরে একটা শার্ট হাতে দিয়ে অনুরধ করে যে অরুনার ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়তে।
অভি পরীকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি আসবে?”
পরী ম্লান হেসে উত্তর দেয়, “আগে অরুনার অবস্থা দেখি তারপরে ভেবে দেখব, সোনা।”
অরুনা ওদের দিকে ঝাপসা চোখে তাকিয়ে ছিল, কাঁপা গলায় পরীকে বলে, “আমি জানি আমি তোমাদের অনেক অসুবিধায় ফেলছি, কেন তুমি আমাকে তোমাদের সাথে এনেছ? আমাকে না আনলেই পারতে।”
পরী ওর পাশে বসে আদর করে গালে চাঁটি মেরে বলে, “একদম এই সব কথা বলবি না।”
অভির দিকে তাকিয়ে বলে, “দাঁড়িয়ে আছো কেন, যাও।” romantic kahini
বুকের মাঝে একটু হতাশা নিয়ে ম্লান হেসে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল অভি। ভাবছে যে, একটা সিগারেটের সাথে এক ক্যান বিয়ার হলে ভাল হত।সুপ্রতিমদার রুমের দরজায় টোকা মারল অভি। কিছু পরে সুপ্রতিমদা দরজা খোলে, ওর অবস্থা অভির মতন, ঊর্ধ্বাঙ্গ খালি, কোমরে তোয়ালে জড়ানো, তোয়ালের নিচ থেকে সিংহ বাবাজি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরের মধ্যে ইচ্ছে করেই উঁকি মারে অভি, লক্ষ্য করল যে রিতিকা কম্বলে নিজেকে নাক পর্যন্ত ঢেকে নিয়েছে। মাথার চুল অবিনস্ত, চোখ জোড়া প্রেমের আগুনে চিকচিক করছে, গাল লাল।
অভি দেঁতো হাসি হেসে জিজ্ঞেস করল, “তোদের কি ডিস্টার্ব করে দিলাম নাকি?”
সুপ্রতিমদা ক্ষেপে গিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, “বোকা… শুয়োর, কুত্তা হারামি, রাত দেড়টায় দরজায় নক করে জিজ্ঞেস করছিস যে ডিস্টারব করলাম নাকি? শালা তোর কি চাই এত রাতে?”
রিতিকা ওদিকে ফিকফিক করে হাসছে, সুপ্রতিমদার রাগ দেখে আর অভির অবস্থা দেখে।
মাথা চুলকায় অভি, “না মানে…”
সুপ্রতিমদা, “বোকা… মানে কি… তোর কি কন্ডম চাই?”
অভি, “না রে বোকা…, আমার বিয়ার চাই।”
সুপ্রতিমদা, “বিয়ারের ক্যারেট গাড়িতে।”
অভি, “তাহলে গাড়ির চাবি দে।” romantic kahini
সুপ্রতিমদা, “গাড়ির চাবি বলবিন্দারের কাছে। বোকা… এখন যা এখান থেকে আর আমাদের একটু শান্তিতে শুতে দে।”
অভি মুখ বাড়িয়ে রিতিকার দিকে চোখ টিপে বলে, “ডারলিং, তোমার রাতের ঘুম হয়ে গেছে।”
অভির মুখে ওই কথা শুনে রিতিকা লজ্জায় লাল হয়ে গিয়ে কম্বলের নিচে মুখ ঢেকে নেয়।
সুপ্রতিমদা অভির ওপরে চেঁচিয়ে ওঠে, “বোকা… এখান থেকে যা না হলে মেরে ফেলব তোকে।”
বল্বিন্দারে কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে এক ক্যান বিয়ার নিয়ে অরুনার রুমে ঢুকে গেল। একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে লাগল আর এক হাতে বিয়ারের ক্যানে চুমুক দিতে থাকে। পরীর জন্য অধির অপেক্ষায় সময় যেন আর কাটেনা। বেশ খানিকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও যখন দেখে যে পরী আর আসেনা, তখন রুম থেকে বেড়িয়ে পরীর রুমে যায়। রুমের দরজা আলতো করে ভেজান দেখে দরজা ঠেলে ঢুকে পরে রুমের মধ্যে।
বিছানায় একটা কম্বলের নিচে পরী শুয়ে আর একটা কম্বলের নিচে অরুনা। পরী ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে আর অরুনা ওর বুকের কাছে মাথা রেখে শান্তির নিদ্রা জাপন করছে। অরুনা পরীর বুকের কাছের জামা শক্ত করে মুঠিতে ধরে যেন ছারলেই যদি পালিয়ে যায় সেই ভয়ে সর্ব শক্তি দিয়ে আঁকড়ে ধরে পরীর রাত্রিবাস। অভি দুজনার মুখের দিকে তাকাল, পরীর স্নেহময়ি মূর্তি দেখে মন অনাবিল আনন্দে ভরে গেল। পরীর মুখের ওপরে ঝুঁকে পরে গালে একটা ছোট্ট চুমু খেলা আর অরুনার মাথায় কপালে হাত বুলিয়ে দিল। দরজা বন্ধ করে ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে অরুনার রুমে ঢুকে শুয়ে পড়ল অভি।
পরের দিনের বেশির ভাগ সময়ে সবাই চিতকুল ঘুরেই কাটিয়ে দেয়। সকালে খেতে বসে কল্যাণী আর রিতিকা অভিকে প্রশ্ন করে যে কি ভাবে ও এই জায়গার কথা জানে, তাঁর উত্তরে অভি জানায় যে বেশ কিছু বই আর ম্যাপ পড়াশুনা করে ও এই জায়গার কথা জেনেছে। romantic kahini
অরুনার গলায় মৃদু রাগ, “এটাকে সাহসী বলে না বুঝলি, এটা পাগলামি, শুচিদিকে নিয়ে এই রকম একটা জায়গায় আসা। এই জায়গা ত মনে হয় পৃথিবী থেকে বাইরে।”
পরী সবার দিকে হেসে বলে, “আর এই জন্যেই প্রথম রাতে আমাদের ঝগড়া হয়েছিল।”
অভি পরীকে ক্ষেপানোর জন্য বলে, “আরে পরেরদিন সকালে কি হয়েছিল?”
পরী লাজুক হেসে অভিকে আদর করে চাঁটি মারে। ওর মুখের লালিমা দেখে কারুর বুঝতে অসুবিধে হয় না যে সকালের কি ঘটেছিল।
তাও রিতিকা পরীকে ছাড়ে না, জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, কি হয়েছিল পরেরদিন সকাল বেলায়, শুনি।”
পরী অভির দিকে তাকিয়ে নিচু সুরে বলে, “নাও এবারে ম্যাও সামলাও…”
অভি রিতিকার দিকে চোখ টিপে বলে, “ডারলিং, কাল রাতে তুমি যা করছিলে, সেটাই ওর সাথে সেদিন রাতে হয়েছিল।”
রিতিকার গাল লাল হয়ে ওঠে লজ্জায়, খাবার প্লেটের দিকে তাকিয়ে যেন ফাঁক খোঁজে একটু মুখ লুকানোর জন্য।
সকালের খাওয়ার পর্ব শেষে, পরী মেয়েদের নিয়ে বিয়াস নদীর দিকে যায়। ছেলেরা হোটেলের সামনের ফাঁকা জায়গায় বসে চারপাশের পাহাড় দেখে আর সিগারেট টানতে টানতে গল্প করে। হোটেলের সামনে থেকে নদীর তীর বেশ পরিশাক্র দেখা যায়, দূর থেকে লক্ষ্য করে যে মেয়েরা বেশ মজা করছে। সুপ্রতিমদা আর দীপঙ্কর অভিকে পরবর্তী জায়গার কথা জিজ্ঞেস করে। অভি জানায় যে পরবর্তী স্থান, নাকো। আগামিকাল সকাল সকাল ওদের বেড়িয়ে পড়তে হবে তবেই রাতের আগে নাকোতে পৌঁছে যাবে ওরা। মেয়েরা বেশ খানিখন পরে নদীর ধার থেকে ঘুরে হোটেলে ফিরে আসে। romantic kahini
দুপুরের খাওয়ার সময়ে পরী অভিকে বলে, “গ্রীষ্ম কালে পাহাড় আরও সুন্দর হয়ে ওঠে, চারদিক সবুজে ঢাকা, শিতকালের চেয়ে একদম আলাদা সৌন্দর্য। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ যে আমাকে দুই ঋতুতেই এখানে এনেছ।”
অভি, “সব তোমার জন্য হানি, তোমার সেই অদৃশ্য চিঠি না পেলে এখানে কোনদিন আসা হতনা।”
অরুনা ওদের কথাবার্তা শুনে অভিকে জিজ্ঞেস করে, “অদৃশ্য চিঠি? সেটা কি?”
অভি ওকে সেই চিঠির কথা বলে আর এই জায়গার আসার সেই পরিকল্পনার গল্প বলে। অভি মজা করে বলে যে ওর হবু বউয়ের শিখিয়ত্রি না হয়ে গোয়েন্দা হওয়া উচিত।
বিকেলে হোটেলের ম্যানেজার অভিদের জিজ্ঞেস করে যে রাতে বনফায়ার করতে চাই কিনা। বনফায়ারের কথা শুনে পরী আর রিতিকার চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে, এক কথায় সব মেয়েরাই নেচে ওঠে রাতের বনফায়ারের কথা শুনে। রাতে বনফায়ারের চারপাশে গোল করে সবাই বসে, মাঝে কাঠের আগুন জ্বলছে। পরী চেয়ারে বসে, ওর পায়ের কাছে অভি বসে ওর কোলে মাথা রেখে। পরী অভির চুলে আদর করে দেয়। পরীর একপাসে অরুনা অন্য পাশে রিতিকা।
রিতিকার পায়ের কাছে সুপ্রতিমদা বসে ওর কোলে মাথা রেখে। অরুনার দিকে মাথা ঘুরিয়ে তাকায় অভি, অরুনার মুখে হাসি ফুটে উঠেছে, আবার সেই পুরানো অরুনাকে দেখতে পেয়ে অভির মন আনন্দে ভরে ওঠে। অভি নিস্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে আগুনের লাল হলদে আলোয় আলোকিত অরুনার হাসিহাসি মুখের দিকে। পরী অভির দৃষ্টি অনুসরন করে অরুনার দিকে তাকায়। romantic kahini
পরী অভিকে জিজ্ঞেস করে, “অরুনা এখন অনেকটা ভাল আছে। তবে আরও কিছু সময় লাগবে ওর মনের অবস্থা ঠিক হতে, চিন্তা করোনা ধিরে ধিরে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
পরীর কোলের ওপরে মুখ ঘষে বলে, “সত্যি তোমাকে যে কি করে ধন্যবাদ জানাবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
অভির চুলে বিলি কেটে বলে, “আমাকে কেন ধন্যবাদ জানাবে? তোমার কষ্ট কি আমার কষ্ট নয়?”
অভি মুখ তুলে ওর গভীর কালো চোখের দিকে তাকিয়ে বলে, “তাহলে কি আজ রাতে আমরা সেলিব্রেট করছি?”
চুলের মাঝে আঙ্গুল দিয়ে আঁচড়াতে আঁচড়াতে বলে, “না হানি, এখন ওর মানসিক অবস্থা ঠিক নয়। তোমার চেয়ে আমাকে ওর বেশি দরকার, একটু বুঝতে চেষ্টা করো সোনা।”
অরুনা ওদের কথা শুনে ফেলে জিজ্ঞেস করে, “এই তোরা কি বলছিস রে?”
পরী আদর করে ওর গালে চাঁটি মেরে বলে, “কিছু না, তুই আনন্দ কর, আমরা একটু আসছি।”
পরী অভিকে টেনে তুলে হোটেলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে বলে, “গতকাল রাতে, অরুনা পুবালিকে স্বপ্নে দেখে যে ও ডাকছে। ভয়ে আঁতকে ওঠে ও, আর সেইজন্য আর ঘুম আসেনা। কাল অনেক রাত পর্যন্ত আমাকে আঁকড়ে ধরে কেঁদেছিল, আমাকে একদম ছাড়ছিল না। অনেকক্ষণ ধরে ওকে আমি শান্তনা দেই আর বুঝাই, তবে গিয়ে ওর চোখে ঘুম আসে। এমত অবস্থায় কি করে ওকে আমি একা ফেলে দেই বল?” romantic kahini
অভি পরীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে, সারা চেহারায় যেন এক মাতৃময়ি রুপের আলক ছটা বিচ্ছুরিত হয়। রাতে সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে যায়, কারন সকাল সকাল উঠে বেড়িয়ে পড়তে হবে নাকোর দিকে। পরী অরুনাকে নিয়ে ওদের ঘরে ঢুকে যায়। দরজা বন্ধ করার আগে অভির দিকে আদর করে ম্লান হেসে বলে, “ব্যাস আর কিছু দিন হানি। তোমার ওর বেশি জরুরি আমাকে কাছে পাওয়া। আমি জানি তুমি বুঝে নেবে।” অভি বুকের কাছে হাত এনে চেপে ধরে জিজ্ঞেস কর, “তুমি কে? তুমি কোন সময়ে স্নেহময়ি মাতৃ মূর্তি আবার কোন সময়ে আমার প্রেয়সী সুন্দরী। কি করে তুমি এত রুপ ধারন করো?”
পরীর গালে আদর করে অভি, “আই লাভ ইউ।”
পরী ওর ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেয়ে বলে, “মনে আছে তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে যে এই পাহাড়ের মাঝে আমার জন্য একটা কুঁড়ে ঘর বানয়ে দেবে।”
মাথা নাড়ায় অভি, ওর সেসব কথা বেশ ভালো করে মনে আছে।
পরদিন সকাল আট’টার মধ্যে খাওয়া সেরে অভিরা বেড়িয়ে পরে নাকোর উদ্দেশ্যে। গাড়ির চালক সুপ্রতিমদা, পাশে বসে ওর প্রেয়সী, রিতিকা। অভি পরী আর অরুনা পেছনে বসে। একসময়ে রিতিকা সুপ্রতিমদার কল ঘেঁসে বসে গালে আলত করে চুমু খায়।
অভি সেই দেখে রিতিকাকে খেপিয়ে বলে, “রিতু ডার্লিং, সুপ্রতিমদার গিয়ার বদলাতে যেও না।”
সুপ্রতিমদা চেঁচিয়ে ওঠে, “বোকা… চুপচাপ পেছনে বসে থাক।”
গালাগালি শুনে সবার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। পরী ভাবতেই পারেনি ওদের মুখ থেকে এইরকম সব গালাগালি বের হবে। রিতিকার মুখ লাল হয়ে যায় লজ্জায়, সুপ্রতিমদার কাছ থেকে সরে, লজ্জা লুকাতে জানালার বাইরে দেখে। romantic kahini
পোয়ারিতে থামে গাড়িতে তেল ভরানর জন্য। ইনোভা ওদের গাড়ির ঠক সামনে। রেকংপিও পার হবার পরেই পাহাড়ের রঙ বদলাতে শুরু করে। এতক্ষণ দুপাশে সবুজ ঘাসে বাঁ গাছে ঢাকা পাহাড় ছিল, পিওর পরে পাহাড়ের রঙ হয়ে যায় ধুসর। ব্রিজ পার হবার পরেই চারপাশে ন্যাড়া পাহাড়, কোথাও ঝুরঝুরে পাথর রাস্তার ওপরে পরে। সুপ্রতিমদার গাড়ি চালাতে একটু অসুবিধে হচ্ছিল, এবড়খাবর রাস্তার ওপরে গাড়ি যেন ঢেউয়ের মতন দোল খায়। শতদ্রু নদী রাস্তার একপাশ দিয়ে নিজের মনে বয়ে চলে। পরী অভির কাঁধে মাথা রেখে বসে, অভি একহাতে পরীর কোমর জড়িয়ে ধরে থাকে। অরুনা চুপ করে জানালার বাইরে তাকিয়ে ভয়ঙ্কর কঠিন সৌন্দর্য দেখে।
অরুনা কিছু পরে অভির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁরে একটা কথা বলবি আমাকে? পঞ্চাস ক্যান বিয়ার আর পাঁচ বোতল ভদকা এনেছিস। তোরা দুজনে কি সারাটা রাস্তা গলায় ঢালতে ঢালতে যাবি?”
অভি নির্লজ্জের মতন মাথা নাড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ।”
অরুনা বিরক্ত হয়ে ওঠে, “যাচ্ছেতাই মানুষ তোরা…”
সুপ্রতিমদা অরুনা কথা শুনে ফেলে চেঁচিয়ে ওঠে, “আরে, আমি ত বিয়ারের কথা একদম ভুলে গেছিলাম, তোমার কথা শুনে মনে পরে গেল। এবারে ত এক এক ক্যান মারতেই হয়।” অভিও মাথা নাড়ায়, “হ্যাঁ।”
পরী ওকে আদর করে মারতে শুরু করে দেয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা খাব ব্রিজ পৌঁছে যায়। ইনোভা সামনে দাঁড়িয়ে, কল্যাণী আর রানীরা গাড়ি থেকে নেমে চারপাশের পাহাড় দেখছে। একদিক দিয়ে শতদ্রু নদী একদিকে স্পিতি নদী এখানে মিশেছে। রিতিকা ওদের দেখে সুপ্রতিমদাকে গাড়ি দাঁড় করাতে অনুরধ করে। romantic kahini
সুপ্রতিমদা গাড়ি দাঁড় করাতেই গাড়ি থেকে সবাই নেমে পরে। সামনে রাস্তার অবস্থা দেখে সুপ্রতিমদা একটু থমকে যায়। ব্রিজের ওপারে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি, মাথার ওপরে ছাদের মতন ঝুলে আছে পাহাড়, একপাশ দিয়ে বয়ে চলেছে উত্তাল তরঙ্গিণী স্পিতি নদী। ব্রিজের নিচে, স্পিতির আর শতদ্রুর জল মিলেমিশে যেন যুদ্ধে রত। অভি গাড়ির পেছনে গিয়ে দুটি ক্যান বিয়ার নিয়ে একটা সুপ্রতিমদার হাতে ধরিয়ে দেয়। পরী মেয়েদের নিয়ে স্পিতির দিকে হেঁটে নেমে যায়। দুরে দেখা যায়, নাকোর খাড়া রাস্তা। পাহাড়ের গা বেয়ে এঁকে বেঁকে উঠে গেছে। সুপ্রতিমদা পরীর কাছে গিয়ে রাস্তার কথা জিজ্ঞেস করে। দুরে দাঁড়িয়ে অভি পরী কে দেখে, বেশ ভালো ভাবে রাস্তার ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের বর্ণনা দেয়।
সুপ্রতিমদা অভির দিকে তাকিয়ে বলে, “গুরু এই রাস্তায় আমি গাড়ি চালাচ্ছি না, এক নয় তুই না হয় বলবিন্দার কে বল।”
অভি চালকের সিটে বসে পরে। গাড়ি অতি সন্তর্পণে আঁকা বাঁকা চড়াই চরতে শুরু করে। সুপ্রতিমদা অভির পাশে বসে বারেবারে জানালার বাইরের দৃশ দেখে আর থমকে যায়। বুকের মাঝে দুরুদুরু নিয়ে রিতিকা আর অরুনা পরীর হাত চেপে ধরে দম বন্ধ করে বসে থাকে।
সুপ্রতিমদা অভিকে জিজ্ঞেস করে, “এই জায়গা কি করে খুঁজে বের করেছিস তুই? এই জায়গা’ত মনে হয় পৃথিবীর বাইরে।”
নাকো তে ওরা দুই দিন থাকে, সবাই নাকোতে বেশ আনন্দ করে। শুধু অভির রাত কাটে সিগারেট আর বিয়ারের ক্যান নিয়ে, ইচ্ছে থাকলেও অরুনার মুখ দেখে পরীর কাছে যেতে পারেনা। romantic kahini
অভিরা নয় জন ছাড়া নাকোতে কোন ভারতীয় পর্যটকের দেখা পাওয়া যায়নি, বেশির ভাগ পর্যটক বিদেশি। কিছু ভারতীয় ছিল তারা বাইকে করে লাহুল স্পিতি ঘুরতে বেড়িয়েছিল।
একদিন বিকেল বেলায়, অভিরা সবাই মিলে নাকোর বৌদ্ধ মঠের মাঠে বসে সবাই সূর্যাস্ত দেখছিল। পরী ওর পাশে কাঁধে মাথা রেখে চুপচাপ বসে থাকে, আনমনা হয়ে যায় দুজনেই, সূর্যাস্তের লাল কিরন ওদের যখন স্নান করিয়ে দেয়। পরী ফিসফিস করে ওর কানে মনে করিয়ে দেয় সেই রাতের উপহারের কথা। সেই স্মৃতির রোমন্থনে অভির গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, সুমধুর সেই স্মৃতি, পরীকে জড়িয়ে ধরে সারা মুখে তপ্ত চুম্বন এঁকে দেয়।
নাকোর শেষ রাতে, অভি আর সুপ্রতিমদা আকাশ দেখতে বের হয়, হাতে ভদকার বোতল, ভেবেছিল দুরে হেলিপ্যাডের কাছে গিয়ে, দুজনে মিলে একটু নিরিবিলিতে সুখে পান করবে। ঠিক সেইসময়ে রিতিকা দৌড়াতে দৌড়াতে ওদের সাথে এসে যোগ দেয়। অভিকে জিজ্ঞেস করে যে সুপ্রতিমদাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে, অভি আকাশের দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে, আকাশ গঙ্গা দেখাতে নিয়ে যাচ্ছে। মেঘহীন, দূষণহীন স্বচ্ছ আকাশে লক্ষ কোটি তারার সমাবেশ, আকাশগঙ্গা তারামন্ডল দেখে ওরা অবাক হয়ে যায়।
অভি দেখল যে এর পরে রিতিকাকে নিয়ে গেলে ওদের ভদকা পানে ব্যাঘাত ঘটবে তাই একবার রিতিকাকে ফিরে যেতে অনুরধ করে। রিতিকা জানায় যে সব মেয়েরা ঘুমিয়ে পড়েছে, পরী অরুনাকে নিয়ে অনেক আগেই ঘরে ঢুকে পড়েছে, ওর একা একা কি করবে তাই অগত্যা ওদের সাথে। সুপ্রতিমদা অভির দিকে একটু কটমট করে তাকায়, সেই রাতে বেচারা ভদকা বোতোলেই বন্ধ থেকে যায়। romantic kahini
বৃহস্পতিবার সকাল বেলায় খাওয়াদাওয়া করে অভিরা বেড়িয়ে পরে কাজার উদ্দেশ্যে। গাড়ির চালক আবার সুপ্রতিমদা। নাক থেকে বেড়িয়েই রাস্তা বেশ সুন্দর দেখে সুপ্রতিমদার আর অভির মন খুশিতে ভরে যায়। কিছুদুর গিয়েই আসে মালিং টপ, সমুদ্রতল থেকে বারো হাজার ফুট উচ্চতায়, আশেপাশের পাহাড় যেন ওর নিচে পরে রয়েছে। রাস্তা অতি সঙ্কীর্ণ, সামনে থেকে দুটি বিদেশি পর্যটক সাইকেলে চেপে ওদের দিকে আসে। সুপ্রতিমদা ওদের থামিয়ে সামনের রাস্তার কথা জিজ্ঞেস করে।
রাস্তার অবস্থা মোটামুটি, ওরা ঘুই নামে একটা ছোটো গ্রামে ঘুরতে গেছিল, সেখান থেকে আসছে ওরা। সেই গ্রামটা নাকি অনেক সুন্দর, ঠিক যেন পাহাড়ের কোলে পটে আঁকা ছবির মতন আর মাঝখান থেকে একটা অতি ক্ষুদ্র জলধারা বয়ে চলেছে। সেই শুনে সব মেয়েরা উতফুল্লে চেঁচিয়ে ওঠে যে ওরা ঘুই যাবে। অভি আর সুপ্রতিমদা ম্যাপ খুলে ঘুইয়ের অবস্থান দেখে নেয়।
তারপরে সুপ্রতিমদা জানায়, “আমরা সবাই ঘুই যাবো, তারপরে কাজা।”
সেই কথা শুনে রিতিকা সুপ্রতিমদার ওপরে ঝাঁপিয়ে পরে ঠোঁটে চুমু দিয়ে বলে, “মেরা দিল কা রাজা, অনেক ধন্যবাদ।”
মালিং ছাড়িয়েই কিছু দূর যেতে সামনে রাস্তার ওপরে দিয়ে একটা ছোটো ঝরনা বয়ে যেতে দেখে। সেই দেখে সবাই ভয়ে আঁতকে ওঠে, একপাসে গভীর খাদ, খাড়া হয়ে নিচে নেমে গেছে স্পিতি নদীর তীরে, অন্য পাশে ধুসর পাহাড়ের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে জলধারা। একটাই রাস্তা সামনে। romantic kahini
সুপ্রতিমদা গাড়ি থামিয়ে অভির দিকে তাকিয়ে বলে, “গুরু আমি গাড়ি চালাচ্ছি না, এটা অসম্ভব ব্যাপার। বারো হাজার ফিটের ওপরে রাস্তায় এই জল, তাঁর ওপর দিয়ে গাড়ি? মাথা খারাপ নাকি?”
মেয়েরা গাড়ির ভেতরে ভয়ে চুপ করে বসে। অরুনা আঁতকে ওঠে, “আমি আর আগে যাবো না, তুই আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে চল।”
পরী আদর করে বকুনি দেয় অরুনাকে, “ধুর, এইরকম ভয় পেলে হয় নাকি, আমরা সবাই আছি, তোর সাথে।” অভির দিকে একটু ভয় নিয়ে, কিন্তু মনে প্রবল সাহস নিয়ে তাকিয়ে বলে, “অভি, গাড়ি চালাও।”
বুক দুরদুর করে ওঠে অভির, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। দাঁতে দাঁত পিষে, পরীর দিকে তাকিয়ে মনের শেষ শক্তিটুকু সঞ্চয় করে চালকের সিটে বসে পরে অভি।
রিতিকা আর অরুনা ভয়ে কুঁকড়ে গেছে। রিতিকা বলল, “আমরা গাড়ি থেকে নেমে গেলে ভাল হবে, অন্তত কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে চালাতে পারবে অভি। আমরা পায়ে হেঁটে ঝরনা পার করে নেই, ও সাবধানে গাড়ি চালিয়ে আসুক।”
পেছনে ইনোভার থেকেও সবাই নেমে গেছে। আমজাদ অভির কাছে এসে একবার জিজ্ঞেস করে যে গাড়ি চালাতে পারবে কিনা। মাথা নাড়ায় অভি, গাড়ি চালাবে। বল্বিন্দার আর অভি ছাড়া দুই গাড়ি থেকে সবাই নেমে পায়ে হেঁটে ঝরনা পার করে দাঁড়ায়। romantic kahini
অভির বুকের মাঝে দামামা বাজতে শুরু করে, চোখ বন্ধ করে বুক ভরে এক শ্বাস নিয়ে গাড়ি চালু করে দেয়। গাড়ি প্রথম গিয়ারে নিয়ে, অতি সন্তর্পণে ঝরনার ওপরে নামিয়ে দেয় অভি, কপালের ঘাম নাক বেয়ে নেমে আসে। অবশেষে গাড়ি ঝরনা পার হয়ে যায় আর সবার সবাই দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাঁচে।
পরী দৌড়ে এসে গাড়িতে উঠে অভিকে জড়িয়ে প্রাণপণে ধরে বলে, “আমার সাহসী ছোট্ট রাজকুমার।”
তারপর গাড়ি নিচে নামতে শুরু করে।
অরুনা অভিকে বলে, “অনেক ঘোরা হয়েছে, আমি কোনদিন এখানে আসব না। এটা ঘোরার জায়গা নাকি? কি সাঙ্ঘাতিক আর ভয়ঙ্কর রাস্তা ঘাটরে বাবা। জায়গায় জায়গায় আবার রাস্তার ওপর দিয়েই ঝরনা বয়ে চলেছে।”
রিতিকা সুপ্রতিমদাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “হানি, আমরা হানিমুন করতে এখানে আসব।”
পরী হেসে ওকে জিজ্ঞেস করে, “এখন কি হানিমুন করছ না?”
সবাই পরীর কথা শুনে হেসে ফেলে, রিতিকা লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
কিছুদুর চলার পরে ওরা ঘুই যাবার রাস্তা দেখতে পায়। রাস্তা অতি সঙ্কীর্ণ, একটা গাড়ি যেতে পারে, একপাসে উঁচু খাড়া পাহাড়, অন্য পাশে একটা সরু নামহীন পাহাড়ি নদী, বড় বড় পাথরের ওপর দিয়ে নেচে নেচে এগিয়ে চলেছে মহনার পানে। দুপুর প্রায় একটা নাগাদ ওরা ঘুই পৌঁছে যায়। খুব ছোটো একটি গ্রাম, চারদিকে উঁচু খাড়া পাহারে ঘেরা। romantic kahini
ওদের গাড়ি ঢুকতে দেখে কোথা থেকে একটা ছোটো ছেলে দৌড়ে আসে। অভিদের জিজ্ঞেস করে যে ওরা মামি দেখতে এসেছে কিনা। ছেলেটার কথা শুনে সবাই অবাক, এই রকম এক জন বিরল জায়গায় মামি? সুপ্রতিমদা গাড়ি থেকে নেমে ছেলেটাকে মামির কথা জিজ্ঞেস করাতে জানা যায় যে গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা ছোটো মন্দির আছে। সেখানে এক বৌদ্ধ মুনির মমি রাখা আছে। সেই মমি নাকি ছোঁয় হাজার বছরের পুরান আর প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত। ওদিকে ইনোভা থেকে দীপঙ্কর নেমে এসে সুপ্রতিমদা কে জিজ্ঞেস করে জায়গার ব্যাপারে। সুপ্রতিমদা ওকে মমির ব্যাপারে জানায়। সবাই সেই মমির কথা শুনে টাকে দেখতে উৎসুক হয়ে ওঠে।
গ্রামের শেষ প্রান্তে সেই বৌদ্ধ মুনির মন্দিরে হলুদ আর সাদা সিল্কের কাপরে ঢাকা কাঁচের বাক্সে রাখা মমি। সেই মমি দেখে সবাই বিস্ময়ান্বিত হয়ে যায়। সবাই কিছুক্ষণ ওখানে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আনন্দ নেয়। অভির শরীরে যেন আর শক্তি নেই তাই বল্বিন্দারকে অনুরধ করে গাড়ি চালানর জন্য।
ফিরে যাবার কথা শুনে অরুনা ছাড়া সব মেয়েরা চেঁচিয়ে ওঠে, “এখান থেকে আমরা কোথাও যাব না, আজ রাতে এখানে থাকব।”
দীপঙ্কর আর সুপ্রতিমদা মেয়েদের বুঝাতে চেষ্টা করে যে ঘুই খুবই ছোটো জায়গা, এখানে হোটেল বা থাকার কোন জায়গা নেই, এমনকি এখানে খাবার জায়গাও নেই, সেই মত অবস্থায় এখানে থাকা যেতে পারেনা।
অভিকে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পরী বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে?” বাকিদের দিকে দেখে বলে, “আমরা আজ রাতে এখানে থাকব।”
অভি ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে যে এখানে থাকার বাঁ খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। অভি হতাশা নিয়ে সবার দিকে তাকায়। romantic kahini
কল্যাণী অভিকে কিছু বলতে না পেরে দিপঙ্করের ওপরে চেঁচিয়ে ওঠে, “টেন্ট কেন এনেছ, শুধু দেখানর জন্য?”
দীপঙ্কর অসহায়ের মতন অভির দিকে তাকায়, তাঁবুর ব্যাপার ওর পরিকল্পনায় ছিল না।
অরুনা অভির কাছে এসে মৃদু সুরে বলে, “প্লিস অভি, দেখ সব মেয়েরা থাকতে চাইছে, ওদের কথা ভেবে থেকে যা।”
অরুনার মিষ্টি মুখের কাতর আহবান অভি প্রত্যাখান করতে পারলনা, শেষ পর্যন্ত সবাইকে জানিয়ে দিল যে রাতে ওরা টেন্টে থাকবে। পরী সেই ছোটো ছেলেটাকে দুশো টাকা দিয়ে তাবু খাটানোর জায়গা আর কিছু কাঠের ব্যাবস্থা করতে অনুরধ করে।
সেই ছোটো নদী পার করে একটা সমতল ভুমিতে তাঁবুর জায়গা ঠিক করা হয়। ছেলেরা কোনোরকমে তাবু খাটায়, সারাদিন ওরা ঘুই ঘুরে বেড়ায়। মেয়েরা নদীর সেই হীম শিতল জলে অনেকক্ষণ ধরে মজা করে। রাতের বেলায় তাঁবুর সামনে আগুন জ্বালিয়ে খোলা আকাশের নিচে সবাই বসে গল্প করে। এই রকম ভাবে রাত কাটানোর সবার কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা। অভির জীবনের সব থেকে স্মরণীয় দিন, একদিকে পরীর আনন্দ আর অন্যদিকে ওর দেবী, অরুনার মুখে হাসি, ওর কাছে যেন পৃথিবীর সব খুশি একত্রিত হয়ে গেছে। romantic kahini
আগুনের চারদিকে সবাই মাটিতে বসে। পরীর কোলে হেলান দিয়ে অভি ভদকার গ্লাসে চুমুক দিতে থাকে। ওদের ঠিক সামনে অরুনা বসে। বাকি তিন জোড়া বেশ আনন্দ করছে।
এমন সময়ে রিতিকা বলে, “একটু গান করলে বেশ ভাল হয়, কি বল সবাই?”
ওর কথা শুনে অভি বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার প্রেমিকা দারুন গান গায়, ওই সব থেকে আগে গান গাইবে।”
পরী মাথা নাড়িয়ে বলে ওঠে, “না না, আমি গান গাইতে যাবো না, গ্রামের লোকেরা আমার গান শুনে আমাদের মারতে আসবে।”
কল্যাণী পরীকে বলে, “বেশি দাম দেখাস না, আমি জানি তুই খুব সুন্দর গান গাস।”
অনেক অনুরধ করার পরে পরী অভির দিকে তাকিয়ে গান ধরে,
“এই জীবন ছিল নদীর মতন, গতি হারা দিশা হারা।
এই জীবন ছিল নদীর মতন, গতি হারা দিশা হারা।
ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে, আমি হয়ে গেছি তারা,
ও ও ও আমি হয়ে গেছি তারা… romantic kahini
ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে, আমি হয়ে গেছি তারা,
আগে ছিল শুধু পরিচয়, পরে হল মন বিনিময়,
শুভ লগ্নে হয়ে গেল শুভ পরিণয়
শুভ লগ্নে হয়ে গেল শুভ পরিণয়
আজ যখনি ডাকি জানি তুমি দেবে সারা,
আজ যখনি ডাকি জানি তুমি দেবে সারা।
এই জীবন ছিল নদীর মতন, গতি হারা দিশা হারা।………”
গানের শেষে অভি পরীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে গভীর এক চুম্বন এঁকে দেয়। সবাই গান শুনে আপ্লুত হয়ে যায়।
রিতিকা সুপ্রতিমদার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আমি না শুধু জীবন, নদী, আকাশ, তারা এই শব্ধ গুলো বুঝতে পেরেছি, বাকি গানের কি মানে? যাই গেয়ে থাক না কেন, বড় মিঠে এই গান।”
সুপ্রতিমদা ওকে গানের মানে বুঝিয়ে দিতে, রিতিকা পরীর দিকে দেখে কৃতজ্ঞতায় মাথা নোয়ায়।
পরীর গানের শেষে সবাই অরুনাকে অনুরধ করে গান গাইতে। লাজুক অরুনা মৃদু চেঁচিয়ে ওঠে, “না না না, আমি গান টান জানি না।” সবাই ওর স্বাস্থের কথা জানে তাই অরুনাকে কেউ বিশেষ চাপ দিল না। সুপ্রতিমদা রিতিকাকে গান গাইতে অনুরধ করে।
অরুনা এমন সময়ে অভির দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি গান গাইব।” অভি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করে যে ওর চোখ দুটি চিকচিক করছে। অভি ঠিক বুঝতে পারেনা কি হল, সারাদিন ত ঠিক ছিল অরুনা। romantic kahini
অরুনা গেয়ে ওঠে,
“মেরা চন্দা হ্যায় তু, মেরা সুরজ হ্যায় তু,
ও মেরি আখো কা তারা হ্যায় তু,
জিতি হু ম্যায় ব্যাস তুঝে দেখ কর,
ইস টুটে দিল কা সাহারা হ্যায় তু,
মেরা চন্দা হ্যায় তু, মেরা সুরজ হ্যায় তু…”
গান শুনে অরুনার চোখের চিকচিক দেখে, অভির বুক কেঁপে ওঠে আবেগে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনা অভি, গাল বেয়ে একফোঁটা জল গড়িয়ে পরে। পরী অভিকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চোখের জল মুছিয়ে দেয়।
পরী গালে আলতো করে ঠোঁট চেপে বলে, “ধুর বোকা, তোমরা দুজনো আবেগে যে এত ভেসে যাবে জানতাম না ত।”
রিতিকার বুঝতে দের হয় না যে আবেগের বাতাস আবহাওয়া কে ভারী করে তুলেছে। মনের মধ্যে আনন্দের জোয়ার এনে গেয়ে উঁচু সুরে ওঠে,
“ছোরো সনম কাহে কা গম, হাসতে রহো, খিলতে রহো,
ছোরো সনম কাহে কা গম, হাসতে রহো, খিলতে রহো,
মিট জায়েগা সারা গিলা, হামসে গলে মিলতে রহো,
ছোরো সনম কাহে কা গম, হাসতে রহো, খিলতে রহো, ” romantic kahini
অভি ওর গান শুনে ওর দিকে হেসে বলে, “ডারলিং গলে মিলতে রহো ত বলে দিলে, আমাকে একবার জড়িয়ে ধরবে না।”
রিতিকা ওর দিকে তাকিয়ে হেসে উত্তর দেয়, “শয়তান, তোমাকে কেন জড়িয়ে ধরতে যাব আমি?”
হাঁটুর ওপরে ভর দিয়ে অরুনার কাছে গিয়ে অরুনাকে জড়িয়ে ধরে ওর চোখের জল মুছিয়ে দেয়।
অনেক রাত পর্যন্ত সবাই আনন্দে আর গল্প গুজব করে। রাতে ম্যাগি আর আলু সেদ্ধ খাওয়া হয়। রাতের খাবার পরে, সবাই তাঁবুর মধ্যে ঢুকে পরে নিজের নিজের স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে। অভি আর সুপ্রতিমদা খোলা আকাশের নিচে, নিভু নিভু আগুনের সামনে ভদকা নিয়ে বসে পরে।
পরী ওদের দিকে বিরক্তি ভরে চেঁচিয়ে ওঠে, “তোমার দুটি মাতাল কি সবসময়ে মদে ডুবে থাকবে?”
অভি পরীর দিকে তাকিয়ে মিনতি করে, “বেবি, এই বোতলটা শেষ করেই আসছি।”
অভির কথা শুনে রিতিকা চেঁচিয়ে ওঠে, “তোমরা তোমাদের ওইটা নিজেদের পেছনে ঢুকিয়ে নিও, আমাদের কাছে আর আসতে হবে না।” romantic kahini
রিতিকার মুখে গালাগালি শুনে সবাই হেসে ফেলে। শেষ পর্যন্ত ভদকা শেষ হয় না, অভি একটান মেরে বোতল ফেলে দেয় নদীর জলে।
পরের দিন সকালে উঠতে সবার দেরি হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বেড়িয়ে পরে পরবর্তী স্থানের উদ্দেশ্যে, কাজা। মাঝ পথে ওরা তাবো নামের এক জায়গায় থেমে দুপুরের খাওয়া সেরে নেয়। তাবোতে খুব সুন্দর এক বৌদ্ধদের মঠ আছে যা প্রায় হাজার বছরের পুরানো। কাজা পৌছাতে প্রায় বিকেল হয়ে যায়। হোটেল পেতে ওদের বিশেষ অসুবিধে হয় না। কাজায় যে হোটেলে ওরা ওঠে সেটা বেশ ছোটো কিন্তু খুব সুন্দর, মাঝ খানে একটা ছোটো বাগান আছে।
রাতের খাওয়ার পরে অভি পরীকে জিজ্ঞেস করে যে পরী ওর সাথে রাত কাটাবে কিনা। উত্তরে পরী একটু বিরক্তি প্রকাশ করে বলে, “এত উতলা হচ্ছ কেন বলতো? আমি ত তোমার কাছে সারা জীবন থাকব। ওর মানসিক অবস্থার কথা একটু ভেবে এই কটা দিন সবুর করে যাও।”
অগত্যা অভির চোখের সামনে অরুনার শীতল মুখবয়াব ভেসে ওঠে, কিছু বলতে পারেনা পরীকে। ম্লান হেসে মাথা নাড়িয়ে ঘরে ঢুকে পরে, সিগারেট আর বিয়ারের ক্যান নিয়ে।
এই ভয়ঙ্কর সুন্দর হীম শীতল মরুভুমির মাঝে, কাজা একটি মরুদ্যানের মতন, বড় শহর। এখানে বেশ কিছু দোকান আর হোটেল আছে। আসে পাশে দেখার অনেক ছোটো ছোটো জায়গা আছে। স্পিতি নদীর তীরে কাজা শহর, স্পিতি নদী এখানে অনেক চওড়া, কিন্তু নদিতে বিশেষ জল নেই, ছোটো ছোটো জলধারা বয়ে চলেছে ফাঁকা নদীর মাঝখান থেকে। romantic kahini
পরদিন সকালে উঠে অভিরা কাজা ঘুরতে বের হয়। শহরের বাইরে একটি বৌদ্ধদের মঠ আছে, সেখানে যায় ওরা। সেখান থেকে ওরা যায় কি নামের এক মঠে, বেশ উঁচু উই ঢিপির মতন পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত কি মঠ।
কি মঠে যাওয়ার পথে একটা বৃদ্ধাশ্রম দেখিয়ে পরী অভিকে বলে, “আমরা যখন বুড়ো বুড়ি হয়ে যাব, তখন আমাদের সব কিছু বিক্রি বাটা করে, যত দিন না ভগবান আমাদের আলাদা করে ততদিন এখানে থাকব।”
অভি আদর করে গালে গাল ঘষে উত্তর দেয়, “উম্ম, রানির যা ইচ্ছে তাই হবে।”
রিতিকা সামনের সিটে বসে ওদের কথা শুনে ফেলে। পিছন ফিরে তাকিয়ে পরীকে বলে, “তোমরা দুজনে একদম এক প্রান এক আত্মা। সুপ্রতিম যদি আমাকে একটু ওইরকম করে ভালবাসত।”
বলে, সুপ্রতিমদার গালে আদর করে একটা ছোটো চাঁটি মারে। সুপ্রতিমদা ওর হাতে চুমু খেয়ে নেয়।
কি মঠের পরে, ওরা আরও ওপরে চরতে শুরু করে। এই রাস্তা নাকি, ভারতের সব থেকে উঁচু গ্রাম, কিব্বের পর্যন্ত যায়। কিব্বের সমুদ্রতল থেকে প্রায় চোদ্দ হাজার ফিট উচ্চতায়, একটি ছোটো গ্রাম। সেখানে একটি অতি ছোটো মঠ আছে আর সেই মঠে খুব অল্প সংখ্যক সাধু থাকেন। মঠে ঢুকে দেখে যে একজন বৌদ্ধ সাধু পুজো করছেন আর সেই বৌদ্ধ মন্ত্র সবার মনের মধ্যে এক অনাবিল শান্তির ভাব এনে দেয়। romantic kahini
কিব্বেরে একটি ছোটো হোটেলে অভিরা দুপুরের খাওয়া সেরে নেয়, সারাদিন কিব্বেরে কাটিয়ে বিকেলের দিকে কাজা ফিরে আসে। বিকেলে হোটেলে ফিরে চা খাওয়ার সময়ে অরুনা পরীকে বলে যে ও রাতে একা শুতে পারবে।
অরুনা, “আমার সত্যি খুব খারাপ লাগছে তোমাদের মাঝখানে এসে। আমি ঠিক আছি শুচিদি, আজ রাত থেকে আমি একা শুতে পারব।”
অভি অরুনার কথা শুনে পরীর দিকে ভুরু নাচিয়ে বলে, “বড়ে দিনো কে বাদ, বে বতনোকো ইয়াদ, পরী আয়ি হ্যায় আয়ি হ্যায়, পরী আয়ি হ্যায়।”