bangla panu golpo 2021 choti. দীপালীর রুমে নক করে ঢুকে কাঁচের দরজাটা ভেজিয়ে দিলাম। একটা টেবিলল্যাম্প ছাড়া আর কিছু জ্বলছে না ঘরে, অবিশ্যি তার প্রয়োজনও নেই। ওর ঘরটা অফিসে সবার ঘরের থেকে আলাদা ভাবে বানানো; একটা দেওয়াল পুরো তন্তুকাঁচের। মানে ফাইবার গ্লাস, কিন্তু আজকাল তো ফ্যাশান হয়েছে সব জোর করে বাংলা বলার, তাই। যাইহোক, সে দেওয়াল ভেদ করে বাইরের দিনের আলো যথেষ্ট। দোতলার এই ঘরের বাইরেই একটা পুরনো কিন্তু সতেজ রাধাচূড়া গাছ, এখন ফুল নেই বটে কিন্তু বৃষ্টিধোয়া পাতাগুলোর থেকে সবুজ লেসার ঠিকরে ঘরের ভেতর ম্যাট্রিক্সের সেট তৈরী করেছে। কিন্তু এসি চলছে না বলে একটু ভ্যাপসা।
– “বসুন, ডক্টর।”
দীপালির আজ খুবই প্রফেশনাল মুখের ভাব। অন্যান্য দিন যেমন চুষেখাই-চেটেযাই টাইপের বদন দেখায় তেমন না। টাইট শাদা জামার ছোটো স্লীভ বিরাট কলার, পেটঢাকা চওড়া নীল কাপড়ের বেল্ট (নাকি জামারই অংশ কে জানে) আর ম্যাচিং শাদা বেলবটম। একটু পুরনোগন্ধী স্টাইল; দেখলে হরেকৃষ্ণ, মারিজুয়ানা, বিশাল সানগ্লাস আর হলুদ গীটার মনে পড়ে যায়।
panu golpo 2021
শেষবার যখন এখানে এরকমভাবে এসেছিলাম সেটা মনে পড়ে গেলো। একটু গলাটা ঝেড়ে নিয়ে বললাম, “সব রিপোর্ট কভার করে দিয়েছি।”
– “আই নো। আমার হাত দিয়েই পাস হয়, ডক্টর। এনিওয়ে, সেটা আসল কথা নয়। শ্রীনিবাসন কয়েক দিনের মধ্যে এখানে ভিজিটে আসছে।”
– “তো?”
শ্রীনিবাসন বেসিক্যালি একটা ম্যানেজার। তাকে নিয়ে আমার টেনশন নেই। এটা আমাকে ফোনে কিম্বা মেমো করে দিলেও চলতো, ডেকে পাঠানোর কী দরকার?
কপালে ভাঁজ দেখে দীপালি আবার মুখ খুললো। “উইথ আ গাই নেমড অরিজিৎ টমসন বিশ্বাস।”
অরিজিৎ টমসন বিশ্বাস? বাঙ্গালী খ্রিস্টান। “এগেইন, তো?”
– “ইউ নীড টু টেক কেয়ার অ্যারাউণ্ড দিস ম্যান, ডক্টর। হি ইজ নট আওয়ার কোলীগ। একজন আউটসাইডার, যে কিনা একটা সিকিওর ল্যাবের ভেতরে ঢুকে ঘোরাঘুরি করবার অনুমতি পেয়েছে বসের কাছ থেকে।” panu golpo 2021
আমার কপালে দাগটা আরও গভীর হোলো। “অ্যান্ড হোয়াট ইজ দিস ইনট্রুডার ডুইং হিয়ার?”
– “অফিশিয়ালি? শ্রীনিবাসনের ভাষায়,” দীপালি দুহাতের দুটো করে আঙ্গুলে হাওয়া খিমচে দিচ্ছে, “জাস্ট আ কিউরিয়াস ফ্রেন্ড, ‘আ গেস্ট’ ইন দ্য ল্যাব, ফর আ ‘কেমিস্ট্রি লেসন’।”
– “ওয়েল, ইফ হি নীডস আ লেকচার, হি উইল গেট আ লেকচার। আমি কলেজের বইগুলো ঝেড়েঝুড়ে রাখবো।”
– “সো কাইন্ড অফ ইউ।” ওর মুখ হাসলো চোখ হাসলো না। “হাউএভার, আই ডু মাই হোমওয়ার্ক সিরিয়াসলি, অ্যান্ড আর্লি। দিস গাই, এর জব কী জানেন? ওয়ান অফ দ্য ম্যানেজারস ইন বেল্লিসীমা। এগজ্যাক্ট ডেজিগনেশন জানি না, তবে মোস্ট প্রবাবলি কিউ-এ।”
ভ্যাপসা গরমটা বেশ অস্বস্তিকর এ ঘরে। মেয়েটা আছে কী করে। “বেল্লিসীমার কিউএএম এখানে কী করছে? কর্পোরেট এসপিওনাজ? হেঃ!”
– “অ্যাম আই লাফিং?”
– “না। দুঃখিত। সো, হোয়াট ইজ দিস?”
– “আপনার কী মনে হয়, ডক্টর। হোয়াটস দ্য ওয়র্স্ট কেস সীনারিও? কখন একটা কোম্পানির ম্যানেজার অন্য কোম্পানির নাড়িভুঁড়ি ভিজিট করে?”
ভাবতে চেষ্টা করলাম। এসব ব্যাপারে আমার এক্সপিরিয়েন্স নেই কোনোরকম। “কোনোকিছু, আমমম, জয়েন্ট ভেঞ্চার? কোলাবরেশন?” panu golpo 2021
– “ট্রাই টেকওভার।”
– “ট-টেকওভার? মানে, মানে, ইউ মীন টু সে – ”
– “দিস ইজ হাউ ইট লুকস ফ্রম মাই পয়েন্ট অফ ভিউ, ডক্টর। আমরা রিয়েলি ইউজফুল কোনো রেজাল্ট অনেকদিন দিতে পারিনি। নো বস ক্যান টলারেট দ্যাট। কিন্তু আপনি, এবং বাই এক্সটেনশন আপনার কোলীগস আর ন্যাশনালী নোওন, শ্রীনিবাসন আপনাকে সিম্পলি ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে না। যেদিন সেটা করবে পরের দিনই শেয়ারমার্কেটে মুখ থুবড়ে পড়বে গ্রীনস্কাই, আপনি জানেন না আপনার মাথার দাম কত।
কিন্তু আমাদের এই ডিভিশন ফিনান্সে কালো ছায়া ফেলছে। শুধু আশা দিয়ে, নামডাক দিয়ে কোম্পানী চলে না। সো, শ্রীনিবাসন সেটাই করছে যেটা একমাত্র পন্থা – ঝেড়ে ফেলা আমাদের। এমনিতেও আপনার ওপর জেনিংসের অনেকদিনের নজর। তো এইজন্য চুপচাপ একটা ইমপ্রেশন ভিজিট করিয়ে আমাদের হ্যাণ্ডওভার করে দেবে। বা, নামকাওয়াস্তে একটা পার্টনারশিপ রাখবে।”
অ্যাম শিওর এর মধ্যে পার্সোনাল প্রফিটও রয়েছে। মে বি নতুন এই ডিভিশনে পার্টনারশিপ? বড়ো শেয়ার? জেনিংসের কচি কচি মেয়েগুলোর হোয়াইট অ্যাস? কুড বি এনিথিং।
– “এতোটা জানবার রাইট নেই আমার, এমনকী আপনাকে এসব বলাটাও আমার পক্ষে আনপ্রফেশনাল। আমি জাস্ট…” দীপালী ঝুঁকে এলো টেবিলের ওপর। “লুক, আই ডোন্ট লাইক দিস, ইউ ডোন্ট লাইক দিস। আই ক্যান সী দ্যাট, দীপ! আমি জানি আমাদের মধ্যে রিসেন্টলি প্রচুর নেগেটিভিটি এসেছে, কিন্তু – কমন এনিমি, দীপ। এ প্যাঁচ থেকে মুক্তি চাও তো আমাদের একসাথে কাজ করতেই হবে। হোয়াট সে ইউ?” panu golpo 2021
আমি ভুরূ কুঁচকে চুপ করে আছি। ওর নিজের প্যাঁচটা বোঝার চেষ্টা করছি। এ মাগীকে আমি চিনি না? নিজের স্বার্থ সিদ্ধ না হলে এ তো এক গ্লাস জলও খাওয়াবে না। ওর লাভটা কোথায় এতে। টেকওভার যদি হয় ওর কী বিগড়াবে। নিজে যথেষ্ট এফিশিয়েন্ট এমপ্লয়ী। বেল্লিসীমার কোনো কারণ নেই ওকে তাড়ানোর। যা চাপ শুধু আমারই। ওর শুধু কার্ডটা পাল্টাবে। আর চেকের অঙ্কটাও, কারণ প্রফেসর জেনিংস প্রকৃত ভদ্রলোক; ওই শ্রীনিবাসনের মতো চশমখোর না এটা জানি। তবে ওর প্রবলেম কোথায়?
প্রশ্নটা নিশ্চয় মুখে ফুটে উঠেছিলো, কারণ দীপালির এবার ভুরূ কোঁচকানোর পালা। “দীপ, বিলীভ মি। বেল্লিসীমায় যাওয়ার আমার কোনো ইচ্ছে নেই। ইটস পার্সোনাল, ব্যস তার বেশী কিছু বলতে রাজি নই। কিন্তু আমাকে ট্রিপল মাইনে দিলেও আমি জেনিংসের আণ্ডারে কাজ করবো না। ট্রাস্ট মি!”
ট্রাস্ট হার? রিয়েলি?
– “তুমি যেতে চাও বেল্লিসীমায়? তুমি জানো আমাদের চেয়ে দশগুণ কর্পোরেট ওরা? কী মনে করো, এই সুখের কাজ আর থাকবে? তোমাকে দশদিনের ডেডলাইন দিয়ে জেনিংস বলবে অমুক জিনিসটা বানাতে হবে। বিলীভ মি, আই নো দ্য ম্যান। দশদিন পরে তুমি যখন বলবে, এটা অসম্ভব, কিম্বা নিদেনপক্ষে আরেকটু সময় দিন, তোমাকে সোজা বদলি করে দেবে হয়তো ইন্দোনেশিয়ার অজগ্রামে ওদের ট্যাবলেট কারখানায়। সময় চাই, নাও এখন মশলা মেশানো সুপারভাইজ করো আর কারখানার এঁদো ল্যাবে বসে রাজাউজির মারো, অফুরন্ত সময়। ব্যস ওখানেই তোমার ক্যারিয়ারের ইতি। সংসারের কথা নাই বা বললাম। ইউ ওয়ান্ট দিস? ডু ইউ?! টক, ড্যাম ইট!!” panu golpo 2021
ধমক খেয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। “তা আমরাই বা করবো কী? রাজায় রাজায় যুদ্ধ হোক সন্ধি হোক, আমরা উলুখড় করবোটা কী? কিছু প্ল্যান-ফ্যান আছে নাকি ফাঁকা আওয়াজ? তোমার ফাঁকা পুসির মতো?”
– “ডোন্ট ইউ ডেয়ার প্যাট্রোনাইজ মি, মিস্টার! তোমার লীশ আমার হাতে। আমি বিস্কুট দেখাবো আর তুমি ল্যাজ নাড়বে, গেট ইট? না হলে তোমার কপালে পোলিস কেস ঝুলছে। কী করেছো ভুলে গেছো? আমাকে রেপ করে দিব্যি ঘুরে বেড়ানো হচ্ছে, সব জ্বালিয়ে দেবো! দেশে আইনকানুন বলে কি কিছু নেই?”
– “এতো দিন পরে? আই ডোন্ট থিংক সো, ডার্লিং। দেশে আইনকানুন বলে কি কিছু নেই!”
জোঁকের মুখে নুন। কটমট করে বৃথাই চোখের দৃষ্টিতে আমাকে ঝলসে দেবার চেষ্টা করছে। ওরে পাগল, সে রামও নেই সে অযোধ্যাও নেই। একগাল হেসে বললাম, “খুলে বলো তো খুকি। আসল জ্বালাটা কোথায়?”
মুখ ঘুরিয়ে নিলো দীপালি। ক্লান্ত শ্বাস ছেড়ে হেলান দিয়ে বসলো। “আই কান্ট সে, দীপ। ইটস রিয়েলি পার্সোনাল। বাট আই নীড দিস, দীপ। প্লীজ হেল্প মি! আই নীড ইয়োর হেল্প, দীপ। প্লীজ। তুমি কি চাও এ বদল হোক? আমার কথা ভুলে যাও, জাস্ট আনসার দ্যাট?” panu golpo 2021
দোনামোনা করে স্বীকার করতে হোলো। “না।”
– “দেন হেল্প মি!” দীপালি পা ঠুকলো মেঝেতে। “হেল্প ইয়োরসেলফ।”
– “ডাজ ইট ম্যাটার? কী করবে সেটাই তো বলোনি এখনো।”
– “তুমি জানতে চাও আমার প্ল্যান কী? দেন ইউ’ল এগ্রি?”
– “যদি ভালো প্ল্যান হয়, হোয়াই নট।”
– “ওক-কে। দেখো, এই মুভটা, অ্যাস ফার অ্যাস আই আণ্ডারস্ট্যান্ড, পুরোটাই ডিপেন্ড করছে ওই কালাসাহেবের ওপর। সরি, আই মীন এ টি বিশ্বাস। আই থিংক, শ্রীনিবাসন জেনিংসকে আমাদের কাজ নিয়ে অনেক কিছু ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বলেছে। জেনিংস সাবধানী মানুষ, লুকস বিফোর হি লীপস। এজন্যই বিশ্বাসকে পাঠিয়েছে ভেরিফাই করতে কতোটা রূপকথা। ওর রিপ্লাই ডিপেন্ড করবে বিশ্বাসের রিপোর্টের ওপর। উইথ মি সো ফার?”
– “সো, পুরো ডীলটাই বিশ্বাসের আঙ্গুলে ঝুলছে – সে চাইলেই দিনকে রাত করতে পারে।”
– “রাইট ইউ আর! সো অল ইউ নীড টু ডু ইজ টু গিভ হিম আ ব্যাড ইমপ্রেশন। রিয়েল ব্যাড!”
– “এই তোমার প্ল্যান? আর শ্রীনিবাসন কী তারপর আমার দাড়িতে আখের গুড় মাখিয়ে চুমু খাবে? ইউ এক্সপেক্ট মি টু ব্যাল্যান্স মাই ক্যারীয়ার অন দিস!”
– “না। আমি এমনটা এক্সপেক্ট করি নি, জাস্ট দেখছিলাম তুমি কতোটা সিরিয়াস। না, আমার রিয়েল প্ল্যান অন্য।”
– “ওহ রিয়েলি? সাচ সাসপেন্স! এই প্লীজ অমন কোরো না, আমার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে যে।”
– “ইউ আর আ রিয়্যাল জোকার, ডক্টর গুপ্ত। লুক, আমার কাছে এতো কম ইনফরমেশন এই মুহুর্তে যে সলিড কোনো অ্যাকশন প্ল্যান এক্ষুণি খাড়া করা সম্ভব না। কিন্তু আমার বেসিক আইডিয়া হোলো ব্ল্যাকমেল। টু ফোরস হিম ইনটু সাম ব্যাড থিংস। এরপর আমরা তার প্রমাণ দিয়ে ওর রিপোর্টটা কিল করবো। গেট ইট?” panu golpo 2021
একটু ভাবলাম। “কিন্তু ডার্লিং, এ সবই তো ডিপেন্ড করছে এ টি বি-র কোনো দূর্বলতার ওপর। ডু ইউ নো এনি? এখুনি তো বললে তোমার হাতে এনাফ ইনফরমেশন নেই লোকটার সম্বন্ধে। এতোটা কনফিডেন্স আসছে কোথা থেকে?”
– “ওহ, মাই ডিয়ার ডক্টর।” প্রথমবার দীপালির মুখে আসল হাসি দেখা গেলো। “আমার হাতে তো অলরেডি একটা এক্সট্রিমলি ভ্যালুয়েবল ইনফো আছেই। গেস হোয়াট?”
– “এখন গেসিং গেম খেলার মুড নেই, দীপালি। ইনফোটা কী?”
দীপালির চোখদুটো সাপের চোখের মতো চকচক করে উঠলো। “হি – ইজ – আ – ম্যান!”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভুরুদুটো কপালে উঠে গেলো। ডান হাতটা সামনে বাড়িয়ে দিয়েছি। “ডীল!”
******************************
সন্ধ্যেবেলা। বাড়ির পথে যেতে যেতে আজকের বিশেষ খবরটাই মাথায় ঘুরছিলো।
দীপালির আইডিয়াটা, ভেঙ্গে না বললেও আঁচ করতে অসুবিধা হয়নি। কিছু কিছু অতিসফল অভিনেত্রীর মতো ওর একটা অমোঘ টান আছে। রেখা জী নাকি একবার নেশা করে গর্বভরে বলেছিলেন, ‘আমার সামনে সুস্থসবল কোনো পুরুষ আধঘণ্টার বেশী নিজেকে সামলে রাখতে পারবে না। চ্যালেঞ্জ!’ জানি না এটা সত্যি কী না, কিন্তু দীপালি চাইলে ওই একই কথা বলতে পারে। panu golpo 2021
যতদূর বুঝছি, ওর প্ল্যান হোলো বিশ্বাসের বশীকরণ। ফাঁকা ল্যাবে দীপালি ওই চামেলি ফিগার নিয়ে পোজ দিয়ে দাঁড়ালে এ টি বি আর ‘মেয়া কুলপা’ বলে পার পাবে না। ইন ফ্যাক্ট আমার ভরসা আছে খুব মন দিয়ে প্রার্থনা করলে যীসাস নিজেও মর্ত্যে অবতরণ করতে পারেন, মাইনাস ল্যাঙট। আমার রোলটা এতে কী? ক্যামেরাম্যান, আবার কি। তারপর অবিশ্যি আমি কোনো জরুরী কাজে হঠাৎ ল্যাবে ফিরে আসবো, হঠাৎ দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলবো। কান্নাকাটির কাজটা দীপালিই করবে, যতক্ষণ বিশ্বাস নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে সময় নেয়। এতে দীপালির ওপর থেকে সন্দেহটা সরে যাবে।
আমি অবিশ্যি লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের প্ল্যানিং-এর কথোপকথনটাও রেকর্ড করে রাখবো, যাতে বাই চান্স আমার কিছু হলে সে মাগীও পার না পায়। তুমি চলো ডালে ডালে…
বাড়ি ঢুকে ফ্রেশ হয়ে জলখাবার করছি, দেখি অনু আমাকে মাপছে সাবধানে। “কী, কিছু বলবে?”
– “না, সেদিন আমাদের মধ্যে যে কথা হয়েছিলো সেটাই ভাবছিলাম।”
– “হুম। কী ভাবছিলে একটু আজ্ঞা হোক।”
অনু, দেখলাম একটু অস্বস্তির মধ্যে আছে। ঠিক খোলামনে কথাটা শুরু করতে পারছে না। আমার খাওয়া হয়ে গিয়েছিল, চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে ওর পাশে গিয়ে বসলাম। মুখে কিছু না বলে শুধু এক হাতে ওর হাতটা ধরে রেখে, কাপে চুমুক দিতে দিতে অপেক্ষা করছি। জানি সময় হলে ও সহজ হবে নিজেই। panu golpo 2021
– “দেখো, আমরা দুজনেই একটু বারমুখি হয়ে পড়েছি, না? এটাই তো আমাদের মধ্যে সমস্যা?”
বাইরে আবার গুঁড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ‘বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে ছেলেবেলার গান।’ ব্রততীর আবৃত্তিটা কেন জানি মাথায় খেলে গেলো এখন। অনেকদিন শুনি নি।
– “একটা গান চালাই, অনু? অনেকদিন গান শুনি নি আমরা একসাথে বসে।”
একটু পাতলা হাসি ভেসে গেলো ওর মুখের ওপর দিয়ে। বোধহয় শেষবার যখন আমরা একসাথে গান শুনেছিলাম তার স্মৃতি মনে পড়েছে ওর। “ইন্দ্রাণী সেন?”
– “আমার মন, তোমার বুকপকেটের ধন।”
উঠে গিয়ে সিডি প্লেয়ারটার ওপর থেকে কাপড়টা সরিয়ে একটু ঝেড়েমুছে নিলাম। একটা দারুণ অফারে বোস-এর এই সিসটেম-টা কিনেছিলাম অনেক খরচা করে। কিন্তু শুনবার সময় পাই না, দামী জিনিসটা কোণায় পড়ে থাকে অবজ্ঞায়। সিডিটা বেছে লোড করে চালিয়ে দিলাম। বেছে বেছে অনুর প্রিয় ট্র্যাকটাই ছেড়েছি। আহ বোসের কোয়ালিটিই আলাদা। সেতারের এক একটা টঙ্কারে ঘরের বাতাস ভাইব্রেট করে উঠছে। panu golpo 2021
ইন্দ্রাণীর রোমান্টিক সুরেলা গলা ফুটে উঠতেই অনুর সামনে এসে, বাম হাতটা পিছনে রেখে ডান হাতটা সামনে বাড়িয়ে খুব নাকউঁচু স্টাইলের সাথে বললাম, “মে আই হ্যাভ দিস ডান্স, মেদামোয়াসল!”
অনুর মুখ খুশিতে আলো, বয়স যেন কমে গেছে পাঁচবছর। কিন্তু খেলাটা জানে, মুখে আনন্দ প্রকাশ করলে হবে না। আমার স্টাইলের সাথে তাল রেখে চলতে হবে। শিরদাঁড়া সোজা রেখে উঠে দাঁড়ালো, রাণীর মতো ভঙ্গি। পিঠ সোজা, পা টাইট, পেট টেনে ভেতরে, কাঁধ পিছনে, দুহাত পেটের সামনে আলতো করে রাখা একটার ওপর আরেকটা।
ডান হাতটা নেকী ঢঙ্গে একটু বাড়িয়ে ধরলো। “বাট অফ কোর্স।”
আমি স্টিফ হাতে মিলিটারি ভঙ্গিতে ওর হাতটা আলগোছে ধরে, শুধুমাত্র মাথাটা নামিয়ে একবার নিশ্বাস ফেললাম সে হাতের পিঠে। সরস্বতীর বর দেবার মতো মুখ করে একটু সিরিয়াস মুচকি পুরস্কার দিলো ও। তারপর দুজনে একদম সমান মাপে পা ফেলে ফেলে ড্রয়িং রুমের ঠিক মধ্যিখানে এসে দাঁড়ালাম। ঘুরে মুখোমুখি হলাম। আমার চোখে প্রশ্রয়, অনুর চোখে কল্পতরু।
– ‘…এই সুরে, কাছে দূরে, জলে স্থলে বাজায়…’
যেহেতু গানটা একটা ওয়াল্টজ এবং ধীর লয়ের, রোমান্টিক নাচই চলবে একমাত্র। বিশেষত এই পায়রার খোপে পিরুয়েট মারলে কিছু না কিছু ভেঙ্গেচুরে একশা হবে। আমার একটা হাত ওর কোমরে রেখে টেনে আনলাম কাছে যতক্ষণ না পেটে পেট ঠেকছে। অনু কিন্তু নিজের মডেস্টি রেখেছে, দেহ সামান্য পিছনে হেলিয়ে যাতে বুক না ঠেকে। ওর হাতগুলো আমার কাঁধে উঠে একই সাথে সংযোগও রেখেছে আবার আমার অ্যাগ্রেসিভ ভাবও ঠেকিয়ে রেখেছে। অন্য হাতটা আমি সাবধানে জড়িয়ে নিলাম ওর পিঠে এমনভাবে যাতে হাতটা থাকে ব্লাউজে, খোলা ত্বক স্পর্শ না হয়। panu golpo 2021
– ‘…দিগন্তে কার কালো আঁখি…’
আমরা তালে তাল মিলিয়ে পা ফেলছি। ঘুরে ঘুরে। দুলে দুলে। অনেকদিন পরে প্রচুর স্টেপ ভুল হয়ে যাচ্ছে। তা হয় হোক। ভুল থেকে অনু হেসে ফেলছে, ও আমার চাইতে ভালো জানে। ইন ফ্যাক্ট, আমাকে বিদেশী নাচের শিক্ষা ওই দিয়েছিলো। একদিন অনেক রমণীয় সন্ধ্যা কাটিয়েছি ভুল করে ওর পা মাড়িয়ে ফেলে। মিষ্টি বকুনি, দুষ্টু চুমো আর দেবভোগ্য মিউজিক। কেন ফেলে এলাম সে সময়।
– ‘…সেই সুরে বাজে মনে অকারণে ভুলে যাওয়া গানের বাণী / ভোলা দিনের কাঁদন…’
সারা গান জুড়ে চোখ থেকে চোখ সরেনি, মন থেকে মন। বহুদিন পর এ আত্মিক সঙ্গম খুব ভালো লাগছে আমার।
আমাদের।
গান পালটে গেছে। বন, জ্যোৎস্না আর বসন্তের মাতাল বাতাস নিয়ে সুমধুর অনুযোগ করছেন ইন্দ্রাণী। আমরা খেলা ভুলে ধীরে ধীরে অন্তরঙ্গ হয়ে পড়ছি। অনুর হাত আমার গলা জড়িয়ে ধরছে। কপালে কপাল, বুকে বুক ঠেকে যাচ্ছে নিয়ম ভেঙ্গে। panu golpo 2021
– ‘…রইনু পড়ে ঘরের মাঝে এই নিরালায়…’
গান থেমে গেছে কখন। দুটো মাত্রই গান প্রোগ্রাম করে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা সরে যাইনি। কাঁধে মাথা রেখে দুলতে দুলতে অনু প্রশ্ন করলে, “এখন বলি কথাটা?”
– “বলো।”
– “আমরা যদি আমাদের এই… বাইরের চাহিদা ঘরে মিটিয়ে নিতে পারি, তো কেমন হয়?”
– “সে কী করে হয় অনু। আমরা যতোই খোলা মনের হই না কেন, বাইরের কাউকে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে মেনে নেবো কেমন করে, বিশেষতঃ নিজের ঘরে?”
– “যদি… যদি সে নিজের মানুষ হয়?”
– “আমি কনফিউজড।”
– “ধরো, তুমি ডিম ভালোবাসো, আমি পাঁউরূটি। আমরা আলাদা আলাদা খেতে পারি, কিন্তু একসাথে টোস্ট বানিয়েও খেতে পারি। তাই না?”
ওর মাথাটা টেনে তুলে আনলাম। “আইডিয়া তো ভালো, বৌ, কিন্তু তেমন টোষ্ট পাই কোথা। এমন মানুষ যাকে আমারও ভালো লাগে, তোমারও ভালো লাগে, এবং সর্বোপরি যে আমাদের দুজনকেই ভালোবাসে। স্পেকস একটু হাই হয়ে গেলো না?” panu golpo 2021
– “আমার ওপর ভরসা রাখো?” আমার চোখে চোখ রেখে বললো অনু। উত্তরে একটা লম্বা চুমু দিলাম।
– “তবে আমার ওপর এটা ছেড়ে দাও।”
– “দিলাম। কিন্তু বাজী ধরে বলতে পারি এ তোমার নিষ্ফল প্রচেষ্টা, এমন লোক কেউ নেই।”
– “হারলে কী দেবে?”
– “কী দেবো?… আচ্ছা, সেক্সের সময় তুমি যেমন আমার হাতে নিজেকে সঁপে দাও, আমি তেমন একদিন নিজেকে তুলে দেবো তোমার সম্পূর্ণ অধিকারে। চলবে?”
খুশীতে ঝিলমিল করে উঠেছে অনুর চোখ। মাথাটা টেনে নিয়ে আমার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো সে।
******************************
Man.. Do post the next episode… Theme gelen kano? Its a brilliant one.
Theme gelen j, we want to continue
Hmm, porer porbogulu kokhon pabo???
Opekkhay achi….