choti stoy 2021 রুপকথা নয় – 2

bangla choti stoy 2021. দেওয়ালের ঘড়িতে দেখলাম নটা বাজে-বাজে। এরমধ্যেই দরজা বন্ধ করে দিয়েছে হিজলতলি। বরেনদার কথাগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ফিরছি। সুনসান নির্জন পথ,মাঠের মধ্যে দিয়ে গেলে পথ সংক্ষিপ্ত হয়। মনে হল কে যেন ডাকছে?

থমকে দাঁড়িয়ে দেখলাম আবছা অন্ধকারে দাঁড়িয়ে মলিনাবৌদি।

–এতরাতে তুমি এখানে?

–কার কথা ভাবতেছো? তখন থেকে ডাকতেছি শুনতে পাওনা?

–কি বলছিলে বলো?

–আমার একখান কাজ কইরা দিবা?

আমাকে দেখলেই সবার কাজের কথা মনে পড়ে। বিরক্ত হয়ে বললাম,কি কাজ?

choti stoy 2021

এদিক-ওদিক বার কয়েক দেখে কাপড়টা হাঁটু পর্যন্ত তুলে ভিতর থেকে একটা কাপড়ের পুটুলি এগিয়ে দিয়ে বলল, মনা এইটা তুমার কাছে রাখবা? পরে এক সময় চাইয়া নিমু।

–কি আছে এতে?

–ম্যালা কথা পরে শুইনো। যারে তারে ত বিশ্বাস কইরা দেওন যায়না।

মলিনাবৌদির কাছ থেকে পুটুলিটা নিলাম,আধ কিলোর মত ভারী হবে। আমাকে দেখলে কি সাধুপুরুষ মনে হয়? সবাই আমাকে হাবাগোবা মনে করে জানতাম।

মাকে সঙ্গে করে বাবাকে নিয়ে গেলাম ডাক্তার সেনের চেম্বারে। ভাল করে পরীক্ষা করে ডাক্তার সেন বললেন,এমনিতে চিন্তার কিছু নেই।এই টেস্টগুলো ভালো জায়গা থেকে করিয়ে আনবেন। বাবাকে নিয়ে কলকাতায় গিয়ে টেস্টগুলো করিয়ে হিজলতলিতে ফিরে শুনলাম, কলকাতা থেকে পুলিশ এসেছিল রমেশদাকে সঙ্গে নিয়ে। রমেশদার কোমরে দড়ী বাধা ছিল।বাড়ী সার্চ করে কিছু পায়নি। পাড়ার অনেকে ছিল সেখানে কেলোও নাকি ছিল। মলিনাবৌদি খুব কান্নাকাটি করেছে। লোক বলাবলি করছে রমেশদা নাকি সোনা চুরি করেছে। শিরদাঁড়ার মধ্যে দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল। choti stoy 2021

সন্ধ্যেবেলা রিপোর্ট নিয়ে বেরলাম ডাক্তার সেনের চেম্বারে যাবো বলে। মলিনা বৌদির বাড়ী পেরোতে গিয়ে কানে এল উত্তেজিত কথাবার্তা। পুলিশ আসার পর মলিনাবৌদির সঙ্গে কথা হয়নি। কৌতূহল বশত উকি দিয়ে দেখলাম কেলোর সঙ্গে কি নিয়ে বচসা হচ্ছে।

–দ্যাখো বউদি বেশি গাড়চালাকি করবেনা। মাল গুলো কোথায় সরালে সত্যি করে বলো।

বউদি দমবার পাত্রি নয় গলা উঁচিয়ে বলে, এই হারামি এটা ভদ্রলোকের বাড়ী একদম খিস্তি করবিনা। মাল থাকলে পুলিশ ছাইড়া দিত?

–ও ভাল কথায় কাজ হবেনা দেখছি–।

–কি করবি রে তুই ?তোর মত দুই পুয়ার মস্তান ম্যালা দেখছি।

–তবেরে হারামজাদি!

কে যেন আমাকে বলল তুমি না পুরুষমানুষ! তেড়ে যাবার আগেই আমি ঢুকে বললাম, খবরদার বলছি এটা ভদ্রলোকের পাড়া! choti stoy 2021

আমাকে দেখে কেলো ভুত দেখার মত চমকে উঠল। হা করে কিছুক্ষণ দেখে বলল, তুমি ভদ্রলোকের ছেলে এসব ঝামেলায় এসোনা,তুমি যাও।

–না আমি যাবনা।আমিও উত্তর দিলাম।

–দ্যাখো বউদি কাজটা ভাল করলে না। ঠিক আছে আজ না হোক কাল রমেশদা তো ছাড়া পাবে তখন ফয়সলা হবে।

কেলো গজগজ করতে করতে চলে গেল। মলিনাবৌদি এতক্ষণ অবাক হয়ে আমাকে দেখছিল।

–ঠাকুর-পো তোমার এই ব্যাপারে আহন ঠিক হয়নাই। এরা ডাকাইত এগো অসাইধ্য কিছু নাই।

–কি নিয়ে গোলমাল?

–তোমার দাদায় নিকি বলছে অরে টাকা দিতে। choti stoy 2021

–তোমার জিনিসটা ফেরত নেবে না?

–তোমার কাছে থাকা সেনা আমার কাছেই থাকা।

–কি আছে ওতে?

–ওমা তুমি দ্যাখো নাই? আচমকা জড়িয়ে ধরে চুমু খেল।

–কি হচ্ছে কি কেউ যদি দেখে?

–ঘরের মইধ্যে কেডা দেখবো? বৌদি তার দেওররে সোহাগ করে তাতে কার বাপের কি?

এখানে আর থাকা সমীচীন হবে না। তা ছাড়া এতক্ষণে ডাক্তার সেন রুগী দেখা শুরু করে দিয়েছেন মনে হয়।

ডাক্তার সেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলেন রিপোর্টগুলো।তারপর আমার দিকে তাকালেন মুখ গম্ভীর। choti stoy 2021

–তোমার বাবা কি অফিস থেকে চিকিৎসার খরচ পান?

–আমি ঠিক বলতে পারবো না। কেন ডাক্তার বাবু খুব খারাপ কিছু দেখলেন?

–হুম একটু ক্রিটিক্যাল–রোগটার নাম নিউমোকোনিয়াসিস–লাং এ এ্যাফেক্ট করে।দিন দিন পলিউশন যেভাবে বাড়ছে তাতে তুমি-আমি এখনো এই রোগে আক্রান্ত হই নি সেটাই বিস্ময়।

চেম্বারের দরজায় উকি দিয়ে দময়ন্তী বলল, হয়ে গেলে উপরে আসবে।

–তুই ওকে চিনিস নাকি? ডাক্তার সেন বলেন।

–বাহ, কেন চিনবো না? একসঙ্গে পড়তাম।

–আগে জানলে তোমার কাছ থেকে ফিস নিতাম না। কি করো তুমি? choti stoy 2021

–পড়ছি।

–হা-হা-হা। পড়বে তো বটেই। যাও বা-দিকে সিঁড়ি আছে।

সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে বসার ঘর।দময়ন্তী একটা সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে। আমাকে দেখে বলল,এস।

এতকাছে সামনা সামনি আগে ওকে দেখিনি। আটপৌরে সাজগোজ এখনকার মেয়েদের মত নয়। মজা করে জিজ্ঞেস করি,তোমার গলায় স্টেথো কোথায়?

খিল খিল করে হেসে ওঠে দময়ন্তী সারাঘরে যেন একরাশ ফুল ছড়িয়ে দিয়ে বলল, আমি ডাক্তার নাকি? ডাক্তার সেনের কাছে কেন এসেছিলে? জানলা দিয়ে দেখলাম তুমি ঢুকছো…।

–বাবার জন্য।

–কি হয়েছে ওর?

–নিউকোনিয়াস না কি যেন…। choti stoy 2021

–নিউমোকোনিয়াস। দময়ন্তীর চোখে ছায়া ঘনালো।ডাক্তার সেন কি বলল?

–পলিউশন থেকে হয়।ওষুধ লিখে দিলেন।

ঠোটে ঠোট চেপে কয়েক মুহুর্ত ভেবে বলল, শুনলাম ব্রজ বোষ্টমি ছেড়ে এখন বরেনদার চেলা হয়েছো?

–আমি কারো চেলা নই।

–রাগ করছ কেন? মুখ ভেঙ্গিয়ে বলে,ব্রজো বোষ্টমি তোমাকে বলত না,আয় বেটা?

–না আমাকে বোলতো গোসাই। বোজোদিকে আমার ভাল লাগতো।

–গোসাই? জানো ব্রজ বোষ্টমি রেপড হয়েছিল?

–শুনেছি। choti stoy 2021

–কে করতে পারে বলে তোমার মনে হয়?

–তুমি উকিল না ডাক্তার? খালি জেরা করছো?

আবার সেই খিলখিল করে হাসি যে হাসিতে সব মালিন্য দূর হয়ে যায়।

মিসেস সেন চা নিয়ে ঢুকলেন। দময়ন্তী জিজ্ঞেস করে,কিছু খাবে?

–কিছু দরকার নেই।

দময়ন্তী আলাপ করিয়ে দিলেই আমার মা মিসেস মনোরমা সেন। আর ও মনোজ মোহন সোম। একসঙ্গে পড়তাম। ভীষণ ডাঁট ডেকে না আনলে আসেনা।

তাকিয়ে দেখলাম টকটকে ফরসা রঙ একটু ভারি চেহারা চওড়া মেরুন পাড়ের হলুদ জমির একটা শাড়ি পরা সিঁথিতে জ্বল জ্বল করছে সিন্দূর রেখা। বয়স আমার মায়ের মত। আমি উঠে প্রণাম করলাম। choti stoy 2021

–কলকাতা থেকে মিষ্টি এনেছি ওকে দাও।

আপত্তি করতে যাবো কিন্তু দময়ন্তীর চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে পারলাম না। মিসেস সেন চলে যাবার পর জিজ্ঞেস করি, আমাকে ডেকেছো কেন বললে নাতো?

–আমার ইচ্ছে হল তাই।

মিসেস সেন রসগোল্লা নিয়ে ঢুকলেন। দময়ন্তী জিজ্ঞেস করে,ডাক্তারবাবুর জন্য রেখেছো?

–হ্যাঁ আছে তোমরা খাও।মিসেস সেন চলে গেলেন।

–তুমি বাবাকে ডাক্তার সেন বলছো কেন?

–কারণ উনি ডাক্তার কারো বাবা নয়।

গভীর অভিমানের সুর শুনতে পেলাম। পারবারিক ব্যাপার অল্প পরিচয়ে নাক গলানো সমীচীন হবেনা। দময়ন্তীর সঙ্গে কথা বলে মনটা ফুরফুরে হবার কথা কিন্তু বাবার কথা ভেবে একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ী ফিরলাম। choti stoy 2021

পরীক্ষার জন্য লাইব্রেরিতে যাওয়া হয়নি। ওষুধের জন্য খরচ প্রভাব ফেলেছে সংসারে। দাদার সঙ্গে অনেক কষ্টে যোগাযোগ করেছিলাম। খুব দুঃখ করলেও দাদার পক্ষে এ সময় আসা অসম্ভব,চেষ্টা করছে যে করেই হোক টাকা পাঠাবার। মনটা ভাল নেই সন্ধ্যেবেলা ভাবলাম লাইব্রেরিতে ঘুরে আসি। পথে অনুদির সঙ্গে দেখা জিজ্ঞেস করল,হ্যাঁরে মনু তোর বাবা কেমন আছেন?

–ঐএক রকম।

–মেশোমশায়ের কথা তোর দাদা জানে?

–ফোন করে বলেছি।

–তোর পরীক্ষা কেমন হল?

–হল এক রকম।

–দরকার হলে বলিস।আসি রে–।

অনুরাধাদি সম্ভবত স্কুল থেকে ফিরছিল। বাবার খোঁজখবর নিল ভাল লাগল। লাইব্রেরিতে ঢুকতে বরেনদা বললেন, কিরে কোথায় ছিলি এতদিন? তোর বাবা অসুস্থ বলিস নিতো? choti stoy 2021

–পরীক্ষা ছিল।

–ডাক্তার বাবুর মেয়ের কাছে শুনলাম মনিদার শরীর ভাল নেই।

–কে দময়ন্তী?

–ডাক্তারি পড়লেও সাহিত্যের প্রতি বেশ ঝোঁক প্রায়ই বই নিয়ে যায়।

একটা বই নিয়ে লাইব্রেরি হতে ফিরছি একটা সাইকেল রিক্সা ঘ্যাঁচ করে পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে।রিক্সায় বসেছিলেন কল্যাণ ঘোষ জিজ্ঞেস করলেন,তুমি মনিদার ছেলে না?

কমরেড কল্যাণ ঘোষ যার অনুগ্রহ বা নিগ্রহ অঞ্চলে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন তিনি আমাকে দেখে রিক্সা থামিয়ে আলাপ করছেন ভেবে অবাক লাগে।

–হ্যাঁ আমি মনোজ।

–কি করো?

–বি এ পরীক্ষা দিলাম। choti stoy 2021

–বাঃ বাঃ বেশ বেশ। বাপ-মাকে দেখো ডানা গজাতে দাদার মত উড়ে যেওনা। একদিন এসো পার্টি অফিসে কথা আছে।

ইঙ্গিত পেয়ে রিক্সা চলতে শুরু করে। পিছনে বাইক নিয়ে কেলো আমাকে আড়চোখে দেখে রিক্সাকে অনুসরণ করে।

বাসায় ফিরতেই মা উত্তেজিত ভাবে বলে,মনু একবার ডাক্তারকে খবর দে তোর বাবা কেমন করছে।

ডাক্তার সেন হাসপাতালে রেফার করলেন। দময়ন্তী বলল, তুমি ন্যাশনালে নিয়ে এসো,আমি থাকবো।

অনেক ধকল করে বাবাকে নিয়ে ন্যাশনালে পৌছালাম, দময়ন্তী আগেই ব্যাবস্থা করেছিল ভর্তি করতে অসুবিধে হল না।
পরের দিন মাকে নিয়ে গেলাম হাসপাতালে,মাকে দেখে বাবার মুখে হাসি ফোটে। জিজ্ঞেস করেন,কেমন আছো?
–এ সময় যেমন থাকার। উদাসীন গলায় মা বলে। বাবার হাত চেপে ধরে নিচু হয়ে মা জিজ্ঞেস করে, তুমি কিছু বলবে?
বাবা আড়চোখে আমাকে দেখলেন। মনে হল বাবা কিছু বলতে চান।আমি একটু নিচু হলাম,তোকে অনেক গালমন্দ করেছি মাকে দেখিস। choti stoy 2021

–ও আবার কি কথা? মা বলে।
বাবা চোখ বুজে হাসলেন,তারপর চোখ খুলে বললেন,এবার যাও অনেকদূর যেতে হবে।
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে অবাক হলাম দময়ন্তীকে দেখে। সাত সকালে দময়ন্তী আমাদের বাড়িতে কি মনে করে?
–এসো।

–না তুমি আমার সঙ্গে চলো।
–কোথায়?
মা হয়তো অনুমান করেছে কিছু একটা আমাকে বলল, মনু তুই যা।
ভূতগ্রস্তের মত দময়ন্তীকে অনুসরণ করি। হাসপাতালে পৌঁছে বুঝতে পারি কি সর্বোনাশ হয়ে গেছে সাদা কাপড়ে ঢেকে রেখেছে বাবাকে। দময়ন্তী আমার সঙ্গে ছিল সারাক্ষণ আশপাশে তাকিয়ে দেখি দময়ন্তী নেই। নিজেকে ভীষণ একাকী বোধ করি।

একটু আড়ালে গিয়ে নিজেকে সামলাতে পারিনা ফুঁপিয়ে কেদে ফেললাম। কে যেন একটা রুমাল এগিয়ে দিল তাকিয়ে দেখলাম দময়ন্তী।
–ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেদো নাতো–কথায় কথায় কান্না পছন্দ করিনা।
কান্না থেমে যায়। অবাক হয়ে ভাবি কি বলছে কি বাবা মারা গেলে কাদবো না? ‘তোমার পছন্দ-অপছন্দে কি এসে যায়’ কথাটা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারিনা। রুপাইয়ের পাড়ে বাবাকে দাহ করা হল।বেচে থাকলে বোঝা যায়না। একজন যে এতখানি শূন্যতা উপহার দিতে পারে জানা ছিলনা। choti stoy 2021

দুটো ভাই আমরা ,দাদার দিনরাত্রি সময়টুকু আজ আমাদের থেকে আলাদা।বাবার শরীর ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল,চিতায় জল ঢেলে পিছনে না তাকিয়ে বেরিয়ে গেলাম শ্মশান ছেড়ে। দাদার বন্ধু সুগতদা আমার সঙ্গে ছিলেন ছায়ার মত সারাক্ষণ।বাবার অফিস-কলিগ কেউ কেউ এসেছিলেন।তাদের কাছে শুনলাম,মণিদা ছিলেন অন্য রকম। মা কাঁদেনি বোবা দৃষ্টি মেলে কি যেন ভাবছে যেন ডুবে আছে কোন অচিন জগতে। অফিস কলিগদের সাহায্য মায়ের পেনশন ধার্য হল সাড়ে-ছ হাজার টাকা।এই খড়কুটো আমাদের কাছে সাত রাজার ধন মানিক। দাদার পাঠানো টাকা আসেনি। কদিন পর কল্যাণ ঘোষ এসেছিলেন।সঙ্গে ছিল শিবে আর কেলো।

আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন,মণিদা ছিলেন অজাত শত্রু, আজীবন সংগ্রামী। তারপর কেলোকে ইশারা করতে শিবে কাঁচকলার ছড়া আর চাল নামিয়ে রাখল। আমার দিকে ফিরে বললেন, আজ আসিরে। কাজ মিটে গেলে একবার আসিস পার্টি অফিসে।আসি বউদি। তারপর মোটরবাইক ফটফটিয়ে সবাই চলে গেল।জীবনের উপর দিয়ে এতবড় একটা ঝড় বয়ে গেল মাকে দেখলে মনেই হয়না। নির্বিকারভাবে ডুবে আছে দৈনন্দিন কাজের ব্যস্ততায়। বরেনদার কথা মনে পড়ল ভাল-মন্দ সব ঘটনাকে সহজভাবে দেখবি,কোন কিছুই আকস্মিক নয়। স্বাভাবিক নিয়মে ঘটে। পরশুদিন ঘাট কাজ উঠোনে ত্রিপল দিয়ে চালা করা হয়েছে। choti stoy 2021

মা বলল, মনা, লিস্ট মিলিয়ে সবাইকে বলবি,কেউ যেন বাদ না যায়। বাড়ী বাড়ি ঘুরে কার্ড বিলি শেষ করেছি খান কয়েক কার্ড বাকি। কলকাতায় গিয়ে বাবার অফিসেও নেমতন্ন সেরে এসেছি। দময়ন্তীর সঙ্গে পথে দেখা,কিছু বলার আগেই বলল, মনু আমাকে কার্ড দিতে হবেনা, আমি যাবনা।
খুব খারাপ লাগল বললাম, খুব বিরাট কিছু আয়োজন করিনি কিন্তু যতটুকু করছি আন্তরিকভাবেই করছি।
–রাগ কোরনা, এরকম অবস্থায় কারো বাড়ী গিয়ে একপেট খাওয়া আমার ভাল লাগে না। মাসীমাকে বোলো পরে একদিন যাবো।

–সে তুমি যা ভাল বোঝো করবে।
অবশিষ্ট কার্ডগুলোয় চোখ বোলাতে দেখি বিজয়া। ওহো ছেড়ে এসেছি বিজয়ামাসী মানে মায়ের দুরসম্পর্কের মামাতো বোন। যোগাযোগ তেমন নেই।মার কাছে গল্প শুনেছি মহিলা খাণ্ডারনি টাইপ।আবার পিছন দিকে যেতে হল। বেড়া দিয়ে ঘেরা দোচালা টিনের বাড়ি। বেড়ার দরজা ঠেলে ঢুকতে গিয়ে কানে এল দুই মহিলার গলা। একটি বাজখাই আর একটি শান্ত। choti stoy 2021

বাজখাইঃ ফের মুখে মুখে চোপা? যমের অরুচি বাজা মাগি–মর মর।
শান্তঃ মরার বয়স তো আপনার ভরা যৌবন আমার কোন দুঃখে মরতে যাবো আমি?
বাজখাইঃ তাহলে আশনাই করতে সুবিধে খানকি মাগি কোথাকার–।
শান্তঃ সকাল বেলা মুখ খারাপ করবেন না বলে দিচ্ছি।

বাজখাইঃ কেনরে তোর ভয়ে?
বিজয়ামাসির ছেলে অতুলদার বড়বাজারে কাপড়ের দোকান আছে বলে ভাল ঘরে বিয়ে দিয়েছিল। পরে জানাজানি হয় নিজের দোকান নয় কাপড়ের দোকানের মাইনে করা কর্মচারি। তাই নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। বৌদির ভাইরা ষ্ণডাগণ্ডা বলেছিল হেপো রোগীটাকে মেরে বোনের আবার বিয়ে দেবে।অতুলদার বুকের হাড়পাঁজরা বের করা ব্লাডারের মত ফুলে আছে পেট খাটাখাটনি করলে ফ্যস ফ্যস হাঁপাতে থাকে।

ভিতরে ঢুকবো কিনা ভাবছি নাকি ফিরে যাবো? মায়ের আদেশ সবাইকে কার্ড দিবি তোর বাবার মঙ্গলের কথা মনে রাখবি বাবা।গলা খাঁকারি দিয়ে হাঁক দিলাম, অতুলদা-আ—।
ভিতরে বচসা থেমে গেল।বিজয়ামাসি কর্কশ গলায় বলেন,ক্যারা ভর দুপুরবেলা চিল্লাচিল্লি করে?
–আমি হিজলতিলির মনা, হেমের ছেলে। choti stoy 2021

মাসী বেরিয়ে এসে আমাকে আপাদ মস্তক দেখে বলল, কে মরল রে?
–তোমাকে বলিনি মণিমেশোর কথা? অতুলদা বেরিয়ে এসে বলে। কলকাতা যাবে বলে তৈরি হয়ে এসেছে।
–অ।কবে মল্লো রমণি?
দরজার আড়াল থেকে একটা মুখ সরে গেল। ডাগর চোখ মেলে আমাকে দেখছিল। অতুলদা বলল, চলিরে মনা ট্রেনের সময় হয়ে গেছে। তুই এবার পরীক্ষা দিয়েছিস না?

–হ্যাঁ ,যেও অতুলদা মা বারবার করে বলে দিয়েছে।
–হ্যা-হ্যা তুই বস আমি আসি।
অতুদা চলে গেল। মাসিকে বললাম, আমি আর বসবো না অনেক কাজ পড়ে আছে।
–হ্যাঁরে হেমের আর একটা ছেলে কি যেন নাম? সে কোথায়?

–সরোজ বিদেশে থাকে আসার অসুবিধে আছে।আসি–তোমরা যেও।
বাড়ী থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমেছি কানে এল,ঠাকুর-পো। বেড়ার ধারে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে অতুলদার বউ রেবতী। সত্যি ভরা যৌবন পানের মত মুখাকৃতি ঢলঢলে চোখ। এগিয়ে গিয়ে বললাম, মাসিকে নিয়ে আসা চাই কিন্তু বউদি।
–তোমার মাসির কথা জানিনা। তুমি যখন বলেছ আমি নিশ্চয়ই যাবো। choti stoy 2021

বাড়ি ফিরে মার মুখে শুনলাম, দময়ন্তী এসেছিল একটু আগে। এক কাপ চা ছাড়া কিছু খায়নি। অনেক্ষন ছিল মায়ের সঙ্গে গল্প করেছে। মা খুব খুশি,অত বড় ঘরের মেয়ে একফোঁটা দেমাক নেই। খুটিয়ে খুটিয়ে জিজ্ঞেস করছিল কিভাবে কি করছি। বড় লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে। দময়ন্তী এসেছিল? অদ্ভুত লাগে ওর আচরণ। সবাই ওকে ভাল বলে তাহলে বাবা-মার সঙ্গে অমন আচরণ করে কেন?কি ছটফটে জলি মেয়ে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই মনের মধ্যে প্রতিনিয়ত চলছে ভাঙ্গাচোরা। আত্মীয়স্বজন আসতে শুরু করেছে।রেবতী বৌদিকে নিয়ে বিজয়া মাসিও এসে পড়েছে। অতুলদা কলকাতায় গেছে সন্ধ্যেবেলা আসবে।

দুহাতের অনামিকায় কুশাঙ্গুরীয় পরে পুরোহিত মশায়ের সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণ করছি। রান্না ঘরের দায়িত্ব সামলাচ্ছে রেবতী বউদি।একফাকে আমাকে কালো চা দিয়ে গেছে।মা অতিথি আপ্যায়ন করছে। সুগতদা-রিনাবোউদি অনুদি আশুস্যর পাড়ার অনেকেই এসেছেন।বাবার অফিসের কলিগরা অবেলা আসবে। পিণ্ডদানের সময় পুরোহিত জিজ্ঞেস করেন,সাত পুরুষের নাম জানা আছে?
মা এসে বলল, চার পুরুষ জানা আছে।

–ব্যস ব্যস ওতেই হবে। যথা নামে দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি।
খাওয়া দাওয়া সারতে সারতে বেশ রাত হল। হ্যাজাক এনে রাখা হয়েছিল বিদ্যুতে ভরসা নেই। পরদিন দুপুর বেলা বিজয়া মাসি ফেরার তোড়জোড় করছেন মা বলল, বিজুদি রেবাকে কদিন আমার কাছে রেখে যাও।কতকাজ পড়ে আছে একা-একা–।আগে তো কোনদিন একা থাকিনি।তোমার অসুবিধে হবে? choti stoy 2021

–নাহ অসুবিধের কি আছে।তবে ঘরে তোর আইবুড়ো দামড়া আছে,একটু চোখে-চোখে রাখিস। বউমার আবার হাড়ীমারা অভ্যেস আছে।
মা একটু ইতস্তত করে কি বলবে বুঝতে পারেনা। এইধরনের আলাপে অভ্যস্ত নয়।বিজয়া মাসি বলেনি বিষের পুটুলি নিয়ে কদিন থাক বুঝতে পারবি কি জ্বালায় জ্বলছি।তোরা কেবল আমার দোষ দেখিস।

রুপকথা নয় – 1

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল / 5. মোট ভোটঃ

কেও এখনো ভোট দেয় নি

Leave a Comment