chati golpo অসম বয়সের বসন্ত – 2

chati golpo. রুপা আর বাকিরা চলে গিয়েছে লাঞ্চ করে। জয়দেব কৌশিক আর আকর্ষ তিনজনে এক সাথে স্মোক করছে। এমন সময় কৌশিক বলে উঠলো,
“বস এসে তো পড়েছো  কিন্তু দেখে। ”
এই কথার কোনো মানে বুঝে উঠতে পারলো না আকর্ষ, তাই জিজ্ঞেস করলো,
“মানে বুঝলাম না?”

অসম বয়সের বসন্ত – 1

কৌশিক আবার বললো,
“মানে হলো আগে তুমি একটা জায়গায় টীম লিডার ছিলে কিন্তু এখন নেই। আর আমাদের টীম লিডার অনেক স্ট্রিক্ট। তিনি কাজে একটুও গাফলতি পছন্দ করেন না। তার সব সময় কাজ ঠিক হওয়া চাই। আর তিনি ফাঁকিবাজি সহ্য করেন না। এখানে এসেছো ভালো ভাবে কাজ করতে হবে কিন্তু।”

chati golpo

আকর্ষ এই কথায় হেসে দিলো বললো,
“ঠিক আছে।”
আকর্ষ কৌতূহল থেকেই জিজ্ঞেস করে বসলো,
“আচ্ছা ম্যাম কি এমনি সব সময় এতো কম কথা বলে?”
জয়দেব বললো.

“কম কথা বলে এমনটা বলবো না। ম্যাম রুপার সাথে বাকি কথা বলে। কিন্তু আমাদের সাথে যতটুকু দরকার ততটুকুই বলবে। খুব বেশিও বলবে না, খুব কম ও না।”
“ওহ আই সি। ”
এই সব কথা বলতে বলতে দেখলো সময় শেষ হাতে থাকা সিগারেটও তাই আর দেরি না করে নিজেদের ফ্লোরে গেলো আর কাজে মন দিলো। chati golpo

ঘড়িতে সময় তখন ৩টা বেজে ৩০ মিনিট। লাঞ্চটাইম শেষ হয়েছে অনেক আগেই। নিজের কেবিনে বসেই লাঞ্চ সেরেছে নায়নী। বাইরে খুব বেশি একটা বের হয় না দরকার না পড়লে। কাজ করতে করতে চেয়ারে হেলান দ্যয়ে ভাবছে, ৩৫ বছরের জীবনে অনেক কিছুই দেখেছে নায়নী। ৩৫ বছরে নিজেকে ভালো মেইনটেইন করেছে, ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির নায়নিকে আর যাই বলুক খাটো তো আর বলা যায় না।

ফর্সা সুন্দর দেখতে নায়নীর শরীরের প্রতিটা ভাঁজেই আছে কামের ছোঁয়া। ৩৬এর বক্ষ যুগল নিয়ে আর ওর গুরু নিতম্ব নিয়ে যখন ও হেটে যায় তখন ছোট থেকে বড়ো সবাই একবার হলেও তাকায় অনেকে এইটা এনজয় করলে করলেও নায়নী এটা এনজয় করে না। ঘৃণা হয় নিজের শরীরের প্রতি তাই যতটুকু পাড়া যায় নিজেকে ঢেকে চলে। কিন্তু নায়নী যতই সৌন্দর্য লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করুক, সেটা তো আর চাইলেও ঢেকে রাখা যায় না। chati golpo

তাই এইসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা আগেই বাদ দিয়েছে। নায়নী খেয়াল করেছে, যে কোনো ছেলে হোক বা মেয়ে একটি বার হলেও তার দেহলে খুঁটিয়ে দেখেসে বা বলতে গেলে  তার শরীরকে গিলে খেয়েছে প্রথম প্রথম এটা খুব খারাপ লাগলেও এখন সেটা সয়ে গেছে। কিন্তু আজকের পরিস্থিতি পুরো ভিন্ন। আজকে এমন একজনের সাথে পরিচয় হয়েসে, যে তার দিকে খারাপ ভাবে তাকায়নি অন্য সবার মতো গিলে খাওয়ার চেষ্টা করেননি, বা তাকে এমপ্রেস করারও চেষ্টা করেননি।

যা নায়নীর কাছে বড্ডো অদ্ভুত লেগেছে। নায়নী মনে করতো সব পুরুষ মানুষ এক সবাই শুধু শরীর চায় কিন্তু নায়নী কিছু মানুষ চিনে যারা শরীর চায় না। এইসব ভাবছিলো আর মধ্যে ল্যান্ডফোনে একটা কল আসে,
“হ্যালো নায়নী স্পিকিং।”
“হ্যালো নায়নী আমি সৌমিত্র রায় বলছি তুমি একটু আমার কেবিনে আসো তো”
“জ্বী। আসছি স্যার।” chati golpo

এই বলে নিজের ল্যাপটপ বন্ধ করে সৌমিত্র রায়ের সাথে দেখা করার জন্য বের হলো, আর তার টিম কেমন কাজ করছে সেটাও দেখার একটিবার সেখানে ঢু মারলো।সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত। নতুন টীম এর সদস্য মনে হয় কাজের দিকে একটু বেশি মনোজোগি । অন্য কোনো দিকে দেখার সময় খুব বেশি নেই তার। তাই আর কাওকে ডিস্ট্রাব না করে  সৌমিত্র রায়ের কেবিনের দরজা ধাক্কা দিয়ে বললো
“মে আই কাম ইন স্যার?”

সৌমিত্র রায় একবার দেখে বললো,
“বেশ কাম ইন।”
নায়নী ভেতরে গিয়ে বসলো,
নায়নী ভেতরে বসার পর নায়নীকে জিজ্ঞেস করলো,
“কেমন দেখলেই তোমার টীম মেম্বার?” chati golpo

“জ্বী ভালো আগে কাজ করার এক্সপেরিয়েন্সও আছে।”
“হুমম তা তো আছেই আরেকটা মজার ব্যাপার কি জানো?”
“কি স্যার? ”
“ও কিন্তু তোমার মতো একজন টীম লিডার ছিলো ওর আগের কোম্পানিতে।”
“জ্বী স্যার দেখেসি।”

” বাহ্ তাহলে তো হলোই আচ্ছা তোমার যদি কোনো সম্যসা হয় আমাকে জানাবে।”
“আচ্ছা স্যার আমি আসি তাহলে।”
“হ্যা এসো।”
নায়নীর মনে প্রশ্নের দানা বেঁধেছে, কিন্তু এখন এই সবে মন দিলে চলবে না। তাই নিজের কেবিনে গেলো আর আকর্ষকে আসতে বললো. chati golpo

নায়নীর কেবিনে,
আকর্ষ যখন জানতে পারলো নায়নী ডাকছে তখন অনেকটা অবাক হলো অফিসে আওয়ার্ শেষ হতে বেশি সময় নেই এই টিমে ডাকলো। স্ট্রেঞ্জ। টকো নিজের টীম লিডার গেছে তাই আর না করতে পারলো না।  কেবিনের সামনে গিয়ে  বললো,
“আসবো ম্যাম।”

“জ্বী আসুন না।”
আকর্ষ গিয়ে বসলো চেয়ারে। নায়নী প্রশ্ন করলো,
“কেমন লাগছে মিস্টার আকর্ষ আমাদের এই খানে।”
“জ্বী ম্যাম ভালো লাগছে।” chati golpo

“ঠিক আছে। আমি আপনাকে কিছু কথা বলি, আমি কাজে আপনাকে পুরো হেল্প করবো, আমি চেষ্টা করবো আপনার কাজ যেন ভালো হয় আপনার  কোনো সমস্যা হলে জানেবেন। আর আমি চাই আপনি আপনার পুরো ডেডিকেশন দিয়ে কাজ করেন। আমি কি বুঝাতে পড়েছি।”
“জ্বী ম্যাম আমি বুঝতে পেরেছি।”
“তাহলে ঠিক আছে আপনি আজকের মতো আসতে পারেন।”

“জ্বী ম্যাম।”
“ওহ আরেকটা কথা কালকে আমাদের আরেকটা কোম্পানির সাথে মিটিং আছে। একটু তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবেন। আমি আশা করি আপনি লেট্ করবেন না।”
“আচ্ছা। আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো।”
এই বলে নায়নীর কেবিন থেকে বেরিয়ে আসলো আকর্ষ। chati golpo

নায়নী আকর্ষ এর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো, আকর্ষ এর বয়স কতো যেন হ্যা ২৭। কিন্তু দেখে বুঝা যাবে না মনে হবে আরো কম। লম্বা ডার্ক স্ক্রিনটোনের হলেও খুব রাফ এন্ড টাফ দেখতে। পেটানো শরীর। মুখে একটা রুক্ষ ভাব আছে, ছেলেটা যখন মুচকি হাসি দেয় তখন মনে হয় তার সাথে ওর চোখ ও হাসে। গলার স্বরে প্রকাশ পায় গম্ভীরতা। অনেকটা রহস্যময় মানুষ লাগলো ওকে।

দেখতে দেখতে প্রথম দিনের অফিস আওয়ার্স শেষ আকর্ষ এর। নতুন জায়গা নতুন মানুষ নতুন পরিবেশ সব মিলিয়ে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে আকর্ষ এর। বেঙ্গালুরু থেকে এসেছে আজকে ৮ দিন। সাত দিন বাড়িতে থাকার পরেই ৮দিনের দিন অফিসে জয়েন করেছে আকর্ষ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলো, সূর্য পশ্চিমের আকাশে ঢোলে পরেছে। আর কিছু সময় পর যে সন্ধ্যা হয়ে যাবে সেটা ভালোই বুঝা যাচ্ছে। chati golpo

তাই নিজের ব্যাগ গুছিয়ে ছিলো। এমন সময় কৌশিক আর জয়দেব আসলো ওর কাছে। কৌশিক বললো
“বাড়িতে কি কোনো কাজ আছে আজকে?”
“নাহ তো কেন?”
“চলো তাহলে আমাদের সাথে সময় কাটাবে তুমি আমাদের নতুন টীমমেম্বার তুমি আসার উপলক্ষে একটু ঘুরে আশা যাক।”

আকর্ষ ও না করতে পারলো না। তাই ওদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলো। তারপর সবাই নিজের কাজ আর ডেস্ক গুছিয়ে বের হতে লাগলো। আকর্ষ বললো তোমরা অফিসের সামনে গিয়ে দাড়াও আমি আসছি।  এই বলে আকর্ষ নামতে লাগলো।  কৌশিক জয়দেব আর রুপা নিচে নেমে গেলো আর ওরা নিজেদের মধ্যেই আড্ডা দিতে লেগে গেলো আর হাসাহাসি করতে লাগলো। chati golpo

আর মধ্যেই দেখলো নায়নী আসছে তাই দেখে ওরা একটু চুপ হয়ে গেলো। সবাইকে এক সাথে দেখে বললো,
“সবাই  এক সাথে যে?”
“আসলে ম্যাম আকর্ষ নতুন এসেছে তো তাই ওর জন্য ছোট্ট একটা পার্টির আয়োজন করেছিলাম আর কি।”
রুপা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো,
“ম্যাম আপনিও চলুন না আমাদের সাথে।”

এই কথা শুনে নায়নী হেসে দিলো, আর বললো,
” হা হা কি যে বলোনা। আমার কি ঐ বয়স আছে তোমাদের সাথে পার্টি করার। তোমরা যাও। ”
তাও ওরা জোড় করতে লাগলো। এমন সময় ওদের পেছনে শোনা গেলো মোটরসাইকেলের একটা জোরালো আওয়াজ। সবাই আওয়াজ লক্ষ্য করে দেখলো কেও একজন একটা মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে ওরা সবাই মনে করলো হয়তো যাওয়ার জন্য রাস্তা চাচ্ছে তাই ওরা রাস্তা দিলো। chati golpo

এইটা দেখে আকর্ষ বুঝলো না কি হলো তাই আকর্ষ নিজের হেলমেট খুলে ফেললো। যখন দেখলো আর কেও না, এইটা আকর্ষ সবাই তখন আকর্ষের পাশে গেলো। সবাই একটু অবাক হলো, কারণ এতো দামি মোটরসাইকেল সচরাচর দেখার যায় না। জয়দেব সাথে বলে উঠলো, এইটা “Kawasaki Ninja ZX-4R না?”
আকর্ষ শুধু বললো,
“হ্যা।”

তখন কৌশিক বললো,
“চলো তাহলে দেরি  না করাই ভালো।”
সবাই এক সাথে বলে উঠলো হ্যা। যখন রুপা নায়নীকে ডাকতে যাবে  তখন দেখে নায়নী রাস্তায় গিয়ে একেবারে ট্যাক্সি ঠিক করে ফেলেছে। তখন রুপা তাড়াতাড়ি করে কাছে গিয়ে বললো,
“দিদি চলো না আমাদের সাথে।” chati golpo

নায়নী শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
“যাবো কিন্তু আজকে না আরেকদিন। আজকে তোরা এনজয় কর ”
এই বলে একবার আকর্ষের দিকে তাকিয়ে নায়নী চলে গেলো। আকর্ষ বললো,
“তাহলে তোমরা সবাই ট্যাক্সি ঠিক করে উঠে পড়ো আমি তোমাদের সাথে আসছি।”

কৌশিক বললো,
“ঠিক আছে তুমি আমাদেরর পিছনে আসো।”
এই বলে ওরা ট্যাক্সি ঠিক করে  উঠে পড়লো। আর   আকর্ষ পেছনে পেছনে আসতে লাগলো।

ট্যাক্সি চলছে নিজের আপন গতিতে।  আকাশে তাকালে দেখার যায় পশ্চিমের আকাশ লাল হয়ে গেছে সূর্য যে আর বেশিক্ষন নেই সেটা বোঝা যায়। পাখিরাও ঘরে ফিরতে শুরু করেছে নিজেদেড় ডানা ঝাপ্টে। গাড়ির জানালার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে নায়নী ভাবছে, নিজেকে এখন আর একটা মানুষ মনে হয় না। মনে হয় এক যন্ত্র। যার বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে সব আছে। কথাটা কি আসলেই সত্যি? সত্যি বলতে গেলে না। chati golpo

নায়নী এখন একা। নায়নীর মা বাবা গত হয়েছে অনেক আগেই এক ভাই আছে ও ওর কাজের জন্য থাকে দিল্লি। বয়সে বড়ো হলেও বোনের কথায় উঠে বসে। ঐ ভাইটা ছাড়া আর কেও নেই। রাত হলে নিজেকে একা লাগে। ঢুকরে কাঁদতে ইচ্ছা করে নায়নীর। নায়নীর টাকা পয়সা বাড়ি থাকলেও ভালোবাসার একটা মানুষ নেই। যে ওকে আগলে রাখবে। শাসন করবে নিজের মতো করে দেখে রাখবে।

অন্যদিকে ট্যাক্সির পিছনে পিছনে আসছে আকর্ষ। কৌশিক তখন ড্রাইভারের সাথে বসে আছে। কৌশিক পেছন ঘুরে বললো,
“আচ্ছা, জয়দেব আমাকে একটা কথা বলতো?”
“কি?”
“আকর্ষের বাইকটা তো অনেক দামি?” chati golpo

“হ্যা অনেক দামি। সুপাইবাইক রে ভাই।”
“ইসস কতো সুন্দর বাইকটা।”
“হ্যা রে ভাই অনেক সুন্দর।”
“টাকা হলে আমিও একটা কিনবো।”
এইসব  বলছিলো জয়দেব আর কৌশিক। আর রুপা  দেখসে আকর্ষকে। রুপার এই প্রথম কোনো ছেলেকে দেখে তারপর তার থেকে মুখে ফেরাতে কষ্ট হচ্ছে।

ট্যাক্সি ঘরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেসে। সারাদিন  কম ধকল যায়না তাই আগে ঘরে এসেই  অফিসের জামা কাপড় খুলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে এসে পিঙ্ক কালারের  নাইটি পরে নিলো। রাতে এইটাইমে নাইটি পরে থাকে নায়নী। চা করবে এর জন্য পানি গরম দিয়েছে। কিন্তু চায়ের পানি গরম দিয়ে অপেক্ষা করছিলো এর  মধ্যেই একটা ফোন আসলো নায়নীর ফোনে। ফোন কানে নিয়ে,
হ্যালো বলতেই। chati golpo

“তুই আমাকে ভুলে গেছিস।”
এই কথা শুনে অবাকের সর্বোচ্চ সীমানায় পৌঁছে গেলো। নায়নী ফোন তোলার সময় খেয়াল করে দেখেনি কে? ফোনের স্ক্রিনে ভেসে থাকা নাম আর কারো না। নায়নীর বান্ধবী রাখির। রাখি আর নায়নী ২ জনে এক স্কুল ও এক কলেজ থেকেই পড়াশোনা শেষ করেছে। এমন কিছু নেই যে ২ জন ২ জনের ব্যাপারে জানে না।

একেবারে বেস্টফ্রেইন্ড যাকে বলে তারা সেটাই। নায়নী আবার ফোন কানে নিয়ে বললো,
“জ্বী আপনি কে? আমি আপনাকে চিনতে পারছি না।”
“এক্টিং বন্ধ কর।”
“তাহলে তুই ও এইটা বলা বন্ধ কর যে আমি তোকে ভুলে গেছি।”
“আমি তো ঐটা মজা করেছি।” chati golpo

“হ্যা বুঝেছি বল কেমন আছিস?”
“আমি ভালো আছি তুই কেমন আছিস?”
“এইতো যেভাবে দেখেছিলি।”
“অফিস থেকে কখন এসেছিস?”
“এই মাত্র অফিস থেকে এসেই ফ্রেশ হলাম আর এর মধ্যেই তুই ফোন দিলি।”

“আমাকে একটু ফোন দিতে পারিস তো?”
“চাইরে কিন্তু সময় করে উঠতে পারি না, কিন্তু তুই তো দিতো পারিস।”
“জানিস তো আমার ছেলেটা আর স্বামীকে সামলাতে সামলাতে সময় চলে যায়।”
“তা রণ কেমন আছে?”
রণ হলো রাখির ছেলে। বয়স বেশি না। রণ খুব ভক্ত নায়নীর। নায়নী বলতে পাগল রণ। chati golpo

“রণ আমাকে পাগল করে মারলো। একটুও পড়তে চায় না।”
“বাচ্চা মানুষ একটু বড়ো হোক।”
“হুমম। তা এইভাবে আর কতদিন নায়নী? এইভাবে কি সুখে থাকা যায় ”
“কেন কি হলো? আমি তো দিব্বি সুখে আছি।”
“তুই বাইরের দুনিয়াকে বুঝাতে পারিস এই কথা বলে কিন্তু আমাকে বুঝাতে পারবি না।”

“আমি ভালো আছি তুই বেশি চিন্তা করছিস।”
“নায়নী কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না সেই ঘটনার ঘটে গেছে আজকে অনেক দিন তুই এইভানে নিজেকে শেষ করে দিস না। তোর একটা জীবন আছে সেটাকে বাঁচতে শেখ। ভেবে দেখ একবার ”
“ঠিক আছে বাবা আমি ভেবে দেখবো।” chati golpo

“নায়নী তুই যাই বলিস বয়স বাড়ছে কিছু দিন পরেই আমরা ৪০ এর ঘরে পা দেবো শরীর আমাদের সাথ ছেড়ে দিবে তখন আর কিছু করার থাকবে না।”
“হুমম বুঝেছি। আমি ভেবে দেখবো।”
“আচ্ছা আজকে রাখছি।”

“ভালো থাকিস।”
“তুই ও ভালো থাকিস।”
এই বলে কল কেটে দেয় নায়নী।

কৌশিকদেড় ট্যাক্সির সাথে  আসতে  আসতে চলে আসলো বিধাননগরের, সেক্টর পাঁচের, ২৫ নম্বর রোডে The Brewhive বারে।ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে আর আকর্ষ নিজের বাইক পার্ক করে ঢুকে পড়লো বারে। বারটা দেখতে খুব সুন্দর। ভেতরে ঢুকেই দেখতে পেলো মানুষ আসছে রাত আরেকটু বাড়লে হয়তো আরো লক আসবে। ওরা বসে পড়লো  টেবিলে সেখানে ওরা নিজেদের জন্য কিছু ড্রিঙ্কস অর্ডার করলো। chati golpo

কৌশিক আর জয়দেব ড্রিংক অর্ডার করলেও আকর্ষ খেলো না। আর রুপা ড্রিংক করে না। তাই ওরা নিজেরাই খেতে লাগলো। আর আড্ডা দিতে লাগলো। আকর্ষকে বুঝাতে লাগলো কে কেমন অফিসে। অফিসের ভেতর কিরকম অফিস পলিটিক্স চলে। কে ভালো কে খারাপ এই গুলো। মাঝে মাঝে জয়দেব সবাইকে নিয়ে কিছু জোকস বলছিলো আর ওরা সবাই হেসে শেষ।

আকর্ষের যে প্রথম দিন হিসেবে খুব খারাপ লাগছে সেটাও না, তার আগের অফিসের থেকে এখানে অনেক বেশি ভালো লাগছে, কারণ আকর্ষ যখন বেঙ্গালুরু গিয়েছিল তখন আকর্ষ পুরো একা ছিল, নতুন জায়গা নতুন পরিবেশ নতুন মানুষ  সব কিছুই নতুন কিন্তু কি করবে আর পেটের তাড়নায় যেতেই হয়েসিলো। আস্তে আস্তে সেখানে আকর্ষ অভ্যস্ত হয়ে যায়। নিজেকে মানিয়ে নেয়। chati golpo

বেঙ্গালুরুতে সব থাকলেও মন খুলে কথার মতো একজন মানুষ ছিলো না বা বলতে গেলে বাঙালি ছিলো না তার থাকলেও কম, এইসব কারণে একা লাগতো কিন্তু আজকে থেকে আর লাগবে না। এইসব ভাবছিলো আর রুপা বলে উঠে,
“কি হয়েছে কি ভাবছো?”
“নাহ কিছু না।”

এমন সময় কৌশিক বলে উঠলো,
“সামনের মেয়েটা কিন্তু গিলে খাচ্ছে তোমাকে আকর্ষ।”
এটা বলে জোরে জোরে হেসে দিলো, কৌশিক।
ওর কথা লক্ষ্য করে সবাই তাকায় সামনের টেবিলে। দেখলো একটা মেয়ে সাথে সাথে অন্য দিকে তাকালো, মেয়েটির ভাব দেখেই বুঝা যাচ্ছে এই মেয়েটিই তাকিয়ে ছিলো। কৌশিক এটা নিয়ে মজা নিতে লাগলো। chati golpo

তারপর আড্ডা দেখতে সময় অনেক গড়িয়ে গেলো মানুষ ও ভরে গেছে বারে। একটু পর চলেই যাবে তাই ওরা ডিসিশন নিলো ওরা ট্রুথ আর ডেয়ার খেলবে যাই কথা সেই কাজ  আকর্ষের ব্যাগে একটা বোতল ছিলো সেটা নিয়ে খেলতে শুরু করলো। ঘুরালো জয়দেব বোতল থামলো কৌশিকের দিকে, জয়দেব বললো,
“বল কি নিবি?”
“আমি ট্রুথ নিবো।”

জয়দেব বললো তাহলে আমি জিজ্ঞেস করি বলে বললো
“তুই অফিসের কাউকে কি পছন্দ করিস?”
এই কথা শুনে কৌশিকের মাথায় হাত, কি বলবে এখন। কৌশিক যে অফিসার একজনকে পছন্দ করে সেটা কেউ জানে না। আর কৌশিক জানাতেও চায় না। কিন্তু কি করবে ফেঁসে গেসে,
তাই বললো,
“হ্যা।” chati golpo

সবাই ওর দিকে হা করে তাকালো। কৌশিক তাই তাড়াতাড়ি করে বললো,
“এখন আমি ঘুরাবো।”
এই বলে বোতল ঘুরিয়ে দিলো, দেখলো এইবার রুপা,
কৌশিক  জিজ্ঞেস করলো,
“ট্রুথ না ডেয়ার?”
“ট্রুথ।”

“তাহলে বল তোর কি বয়ফ্রেইন্ড আছে?”
“নাহ।”
এইবার রুপা বোতল ঘুরালো, এইবার হলো আকর্ষের পালা, জয়দেব দিবে এইবার,
“ট্রুথ না ডেয়ার?”
“ডেয়ার।” chati golpo

জয়দেব আর কৌশিক নিজেদের দিকে তাকালো,
আর হাসলো। আকর্ষ বুঝলো কিছু তো করবে ওরা।
জয়দেব  ডেয়ার দিলো,
” তোমার সামনের টেবিলে বসে যে মেয়েটা আছে তার নাম্বার এনে দিতে হবে।”
আকর্ষ তো পরে গেলো বিপদে কারণ  আকর্ষ নিজে গিয়ে কারো সাথে কথা বলে না কিন্তু আজ এই ডেয়ারের চক্করে বলতে হবে কি করার।

“ঠিক আছে।” বলে উঠে পড়লো টেবিল থেকে মেয়েটার কাছে গিয়ে বললো,
” এক্সকিউজ মি আমি আকর্ষ।  আমার সাথে আপনার কিছু কথা ছিল। ”
মেয়েটি চেয়ার থেকে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে বলল, “হাই আমি কুহু বলুন আপনার কি কথা আছে?”
আকর্ষ একটু ইতস্ত  করছে বুঝা যাচ্ছে,
তাই মেয়েটি বলল,
” সব ঠিক আছে  কি? ” chati golpo

“হ্যা আমি কি আপনার নাম্বার পেতে পারি ?”
কুহু সাথে সাথে হ্যা বলে দিলো মনে হয় এইটার জন্যই বসে ছিলো ও।  আর আকর্ষকে নাম্বার দিয়ে দিলো।  আকর্ষ বললো,
“থ্যাংক ইউ আমি আপনাকে সময় করে ফোন দিবো।”
“ওকে।”

পরে কথা হবে এই বলে আকর্ষ চলে আসলো।
এবার জয়দেবের পালা,
” ট্রুথ না ডেয়ার।
জয়দেব ডিয়ার নিলো। কৌশিক বলল
” তুই মাথায় পানি গ্লাস নিবি আর জামাল কুদু গানে নাচবি। ” chati golpo

কৌশিক ডান্স কর্নারে গিয়ে বলল জামাল কুদু গান বাজাতে। যখনই গান স্টার্ট হলো  জয়দেব মাথায় গ্লাস রেখে নাচতে শুরু করলো। আর তাই দেখে সবাই অনেক হাসলো ভিডিও করলো মজা নিলো। এইভাবে ঘড়িতে বেজে গেলো রাত্রি নয়টা। কোথায় দিয়ে সময় চলে গিয়েসে সেটার হিসাব নেই। তাই ওরা আর দেরি না করে ক্লাব থেকে বের হলো।

জয়দেবের আর কৌশিক রুপার জন্য ট্যাক্সি করে দিল, আর এর মধ্যেই আকর্ষ পার্কিংলট থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির। রুপা ওদের bye বলে ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো। আকর্ষ থাকে বেহালার দিকে তাই আকর্ষ ওদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলো।

ফ্রিজ খুলে দেখলো কাজের মাসি আজকে রান্না করে গিয়েছে। রুটিটা বানিয়ে নিতে হবে তরকারি আর ডাল রান্না করে গিয়েছে। বানাতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু খেতে হবে। একা মানুষ খাবে কতই বা ইচ্ছে থাকবে। তাও খেতে হবে। তাই নায়নী কিছু রুটি বানানোর জন্য গেলো। রুটি বানাতে বানাতে ভাবতেই লাগলো আজকে যদি তার সব ঠিক থাকতো তার যদি একটা পরিবার থাকতো তাহলেও তার ঘরটা থাকতো পরিপূর্ণ। chati golpo

রান্নার তাগাদা থাকতো কিন্তু পরিবার নেই রান্নার তাগাদা নেই। রাখির বিয়ে হয়েসে নায়নীর পরে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজকে নায়নী এই একাকিত্বে ভুগছে। মাঝে মাঝে নায়নীরও ইচ্ছে হয় পার্টিতে যেতে রুপাদের সাথে মজা করতে কিন্তু বয়সের জন্য নিজেকে আটকে রাখতে হয়। আজকে যখন অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ভেবেছিলো রুপার সাথে যাবে।

কিন্তু যখন আকর্ষ আসলো তখন কেন যেন নিজের ভেতর জড়তা ভরে কাপড়ে বসলো। হাজারো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে পারলো না। সাদা শার্ট কালো প্যান্ট ইন করা কাঁধে একটা ব্যাগ ঝুলানো।  দেখে নিজের ভেতর এক অচেনা অনুভূতি মাথা চারা দিয়ে উঠলো। নায়নী এইসব নিয়ে আর ভাবতেই চায় না। তাই সেখানে ওদের রেখেই প্রস্থান করলো

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল / 5. মোট ভোটঃ

কেও এখনো ভোট দেয় নি

Leave a Comment