bangla golpo 2022 মন – 7 by nandanadas

bangla golpo 2022 choti. সেদিন আমি রাতে নীচে যাইনি। মন টা ভালো হয়ে গেছিল আরো। পড়াশোনা করছিলাম। পরিবেশন করার ইচ্ছে ছিল না। মনে হচ্ছিল, আমি গেলেই ঝামেলা হবে। যাও বা সব চুপচাপ আছে, গেলেই মেজদি কাঁদবে, বড়দি কাঁদবে। বাবা রেগে যাবে। আমিও রেগে যাব। কি দরকার? আমি বেশ ভাল আছি। আর কোনকালেই তেমন ভাবে তো আমি পরিবারের সাথে মিলে মিশে থাকিনি। কিন্তু অবাক করে দিয়ে শুনলাম বড়দি বলছে ভাই কে,
–     ভাই যা তো ছোড়দি কে ডেকে নিয়ে আয়। খাবার গুলো দিয়ে দিক সবাই কে।

[সমস্ত পর্ব
মন – 6 by nandanadas]

ভাবলাম বাবাহ। এতো সুখ ও কপালে ছিল। আমাকে ডাকতে হল না। আমি নিজেই গেলাম। আমি অর্জুন আর ভাই মিলে সবাই কে খাবার দিলাম। আমার মা কে দেখলাম বেশ খুশী। কাকিও। কই বাবা তো চুপচাপ খেয়ে নিল। বড়দি মেজদি সবাই চুপচাপ খেয়ে নিল। নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। কিন্তু আমাকে নিয়ে কোন আলোচনা নেই। ভাবলাম যাক তাহলে নালিশ হয় নি। কিন্তু সেদিন থেকে বড়দি একটু বদলে গেল। আমাকে ডেকে ডেকে কথা বলত। ভাল কিছু হলে, আমি শুনতে পেতাম মা কে বলতে,

bangla golpo 2022

–  ছোটর জন্য তুলে রেখে দাও। ওর তো ঠিক নেই কখন খাবে। মন মর্জি খাওয়া ওর।
বা বলত
–      মা বলতে পারো না ওকে ন্যাড়া হয়ে না থেকে, একটু চুল টা বাড়াতে। কি সুন্দরী ও।
মা ও বলত,

–     তুই বল, আমাকে বলতে বলছিস কেন? আমি আর তোর কাকি ওকে সারা দিন বলি। ও শোনে নাকি কারোর কথা?
জানি হয়ত বলতে পারে না আমাকে। আসলে কোন দিন ই তো সুসম্পর্ক ছিল না। আজকে বুঝতে পেরেছে, সেদিনে আমি ওর ছেলেকে বাঁচিয়েছিলাম পুকুর থেকে। তাই একটু মায়া দয়া হয় আমার উপরে। আমি ওসব ভাবি না। আমি সেদিনেও কিছু স্পেশাল করিনি, আজকেও কিছু করিনি। আমার যা মনে হয়েছে আমি করেছি। আর সেটা করব ও। bangla golpo 2022

যেদিন ঠাকুর বিসর্জন হলো, সেদিন দিদি আমাকে আলাদা করে অর্জুন কে দেখতে বলল। বলল যেন ও পুকুর ধারে না যায়। আমার খারাপ লাগে নি সেটা। সবাই কে ছেড়ে দিয়ে আমাকে ওর দেখাশোনার যোগ্য মনে করেছে, এই অনেক। অর্জুন আমার সাথেই ছিল সারাক্ষণ বিজয়ার সময়ে। বাজী ফাটাল খুব। আনন্দ করল খুব। এই ফাঁকে আমার ভাই টাও আমার কাছা কাছি চলে এল। শুধু আমার ছোড়দি টাই নেই। বাকি সব আছে। ইশ একবার দেখা হলে বলতাম
– দিদি এসে দেখ, সবাই কত বদলে গেছে।

হুশ ফিরতেই দেখলাম, ছেলে স্কেট নিয়ে খেলছে। আমার সামনে ওর বই খোলা। পড়ার থেকে খেলায় বেশী মন। আমার মেয়ে কিন্তু নির্লিপ্ত ভাবে পড়ে চলেছে। উফ এই ছেলেকে নিয়ে আমি আর পারি না। আর বাপ হয়েছে দেখ, সারা দিন কাজ। বুঝবে, ছেলে মেয়ে গরু হয়ে থাকবে সারা জীবন। আমার আর কি? মনে মনে গজ গজ করতে করতে ছেলেকে চেঁচিয়ে বললাম,
–     কি রে মানু পড়বি না?

আমার ছেলে মুখের উপরে বলে দিল, ও পড়বে না। আমি সামনে হাত জোর করে বললাম
– হে মহারাজ, এই এ থেকে জেড অব্দি পড়ে আমাকে ধন্য করুন। bangla golpo 2022

ব্যস মহারাজ খুশী। বাপ কা বেটা। অনুরোধে কাজ হয়। জোর করলে মার খাবে তবু করবে না সেই কাজ। স্কেট রেখে দিয়ে, আমার কোলে বসে, খানিক চেঁচিয়ে পড়ে নিয়ে, এ থেকে জেড অব্দি ঝড় ঝড় করে মুখস্ত বলে দিয়ে, খাট থেকে নেমে হাওয়া। পরক্ষনেই দেখলাম, স্কেট সাইকেল টা নিয়ে এঘর ওঘর করতে শুরু করল। আর আমি মেয়ে কে নিয়ে শুরু করলাম। ওর এখন ক্লাস থ্রী। মেয়েকে পড়া দেখিয়ে দিয়ে, ওদের বাপ কে ফোন করলাম।

–     কি গো কখন আসবে?
–     কেন। একটু ব্যস্ত আছি।
–     দুটো কে পেটে ভরে দিয়ে এখন উনি ব্যস্ত। আচ্ছা বাপ হয়েছ বাপু।

–     ওই দেখ। আচ্ছা আসছি। নীচেই তো আছি। গুণ্ডা টা কে পাঠিয়ে দাও এখানে।
–     গুড বয়। পাঠাচ্ছি। খবরদার ওকে যেন লনে ছেড়ে দেবে না বলে দিলাম।
–     আরে না রে বাবা আমার কাছে থাকবে। bangla golpo 2022

রাতে আমাকে বেশ করে চিবিয়ে খাবার পরে, আমার বুকের উপড়ে শুয়ে শুয়ে বর বলল

–     কি ব্যাপার বলত, গত কয়েক দিন , তোমাকে অন্যমনস্ক দেখেছি একটু
–     হুম
–     কেন?
–     কত পুরোন কথা মনে পড়ছে আমার।

–     এতো দিন বাদে?
–     হুম। আচ্ছা মা তোমাকে ফোন করে নি এ কদিনে?
–     হ্যাঁ রোজ ই করে? তোমার কথা জিজ্ঞাসা করে। পুঁচকে দুটর কথা জিজ্ঞাসা করে।
–     উম্মম্মম্ম। জানো আমার না খুব যেতে ইচ্ছে করে বাড়ি। কিন্তু… bangla golpo 2022

–     কিন্তু কি, তুমি যেতেই পার।
–     আর তুমি?
–     না আমি যাব না।
–     তবে আমিও না
–     এটা তোমার বাড়াবাড়ি।

–     হোক। তবুও না। তুমি তোমার বাড়ি যাও না কেন?
–     কারন ওখানে তোমাকে অপমান করবে তাই।
–     ঠিক, সেই রকম  যেখানে তুমি যাবে না সেখানে আমিও যাব না। আমি বলে, স্বর্গেও যাব না তোমাকে ছাড়া। এই একী একী, কি করছ, ছেলে মেয়ে ঘুমোচ্ছে কিন্তু বলে দিলাম। ওদের ঘুম যদি ভেঙ্গেছে না!!!!! bangla golpo 2022

জানি না আমি ওকে উত্তেজিত করার মতন কি বললাম। উফ এই ভাবে আমাকে ঠেসে ধরার কি মানে? এই রে মনে হচ্ছে আজকে রাতে আমাকে আরেকবার সব ধুতে হবে। আমার শাড়ি ব্লাউজ সব টেনে খুলে দিয়ে আমাকে বুকের নিচে পেষা শুরু করতে বেশি সময় নিল না আমার বর।

কলেজ থেকে বের হলাম টপার হয়েই। সেই বছরেই ভর্তি হয়ে গেলাম আমি এম এস সি তে। কমপ্লিটের পরে পি এইচ ডি র জন্য খড়গপুর চলে গেলাম। মাঝের তিন বছর না বাড়ি না কারর সাথে আমি যোগাযোগ রাখিনি। শুধু জানতাম আমার ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে বাংলার সব থেকে ভালো কলেজ থেকে। বাস এই টুকুই। খুব বেশী মনেও নেই এই সময় টা আমার। শুধু মনে পরে, টপার হবার সৌজন্যে, আমি গোল্ড মেডেল নিতে ডায়াসে উঠছি। সামান্য কিছু স্পিচ। ব্যস আর কিছু মনে পরে না আমার।

বেশিদিন লাগত না  আমার পি এইচ ডি করতে। আমার এম এস সি র সময়েই আমি পেপার বানিয়ে রেখেছিলাম। পিরিওডিক টেবল এর উপরে কিছু রিসার্চ আমার করাই ছিল। এলিমেন্ট দের আরো কত টা এলিগ্যান্টলি পিরিয়ডাইজড করা যায় যায় নিয়েই কিছু রিসার্চ। বিশেষ করে গ্রুপ ডি এলিমেন্ট দের নিয়ে। ভেবেছিলাম সেইটা সাবমিট করে দেব। bangla golpo 2022

আমি যখন এম এস সি পড়ি তখন কার কাজ ছিল এটা আমার। কিন্তু খড়গপুরে যাওয়া টা আমার জীবনের যে সব থেকে বড় টার্নিং পয়েন্ট হবে আমি সেটা ভাবিনি কোন দিন। রিসার্চ করা আমার শুধু প্রয়োজন ই ছিল না স্বপ্ন ও ছিল। আর সেটা করতে গিয়েই আমারি জীবন আমার সাথেই পাল্লা দিয়ে আমার জীবন নিয়ে রিসার্চ করল।

আমার স্বপ্ন ছিল খড়গপুর থেকে রিসার্চ করব আর খুব জান প্রাণ লড়িয়ে দেব, যাতে ওখানে কোন জব অফার আসে। অবশ্যই টিচিং জব। হয়েও গেছিল আমার। ওই দুই বছরে, দুটো ফান্ডামেন্টাল থিয়োরি আমার পেপারের সাথে জূড়ে গেছিল। আরো একটা ছিল, কিন্তু সেটা আমি রেখে দিয়েছিলাম, ভবিষ্যতে কোন ছাত্র/ছাত্রী চাইলে সেটার উপরে গবেষণা করতে বলব। সেখানেও তো আমার নাম থাকবে।

কিন্তু ভাবি এক আর হয় এক। সমস্যা বলব না, বলতে পারি, জীবনের মহার্ঘ্য দুটো বছর আমি কাটিয়েছিলাম ওখানে। কিন্তু সেই দুটো বছর আমার জীবনের সর্বস্ব কেড়ে নিল বড় আদর করে। bangla golpo 2022

আমি ল্যাব থেকে ফিরছিলাম আমার রুম এ। দেরী হয়ে গেছিল অনেক। প্রায় দশ টা বাজবে তখন রাত। ইন্সটিটিউটের ঠিক বাইরেই ছিল আমার ফ্ল্যাট। আমি তখন রিসার্চের জন্য রোজগার ভালই করি। ভালো স্টাইপেন্ড পাই। অর্থের কোন সমস্যা ছিল না। তাছাড়া অনেকের সাথে থাকা আমার কোন কালেই পোষায় নি। তাই নিজেই থাকতাম আলাদা ভাবে।

ইন্সটিটিউটের গেটের বাইরেই একটা বিড়ি সিগারেট, দরকারি, অদরকারী সমস্ত রকম জিনিস পাওয়া যায় এমন একটা দোকান ছিল। দোকান টা সারা রাতই খোলা থাকত। গেটের বাইরে, দুপাশে দুটো আলো জ্বলছিল। গাছ আছে কিছু। স্বাভাবিক গাছের তলা গুলো অন্ধকার থাকবে। আর সেই অন্ধকারে অনেক সময়ে ছেলেরা সিগারেট ছাড়াও অনেক কিছু খায়। মেয়েরাও থাকে ওই দলে। আমি রোজ ই দোকানের সামনে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকি। মনে করি কিছু নিয়ে আবার দরকার আছে কিনা। মনে পরলে কিনে নিই। সেদিনেও দাঁড়িয়েছিলাম গেটের বাইরে কিছুক্ষন।

সেদিনে না দাঁড়ালে, কি জানি, হয়তো জীবন টা অন্য দিকে মোড় নিত। কিম্বা নিত না। কিন্তু সেদিনের দাঁড়ানো টা যে আমার জীবনের মোক্ষম একটা পয়েন্ট এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই আমার। bangla golpo 2022

দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে, ভাবছিলাম আমি কি কিনব আর এদিক ওদিক চাইছিলাম। সেই রকম ভাবেই চোখ এদিক ওদিক ঘোরাতে ঘোরাতে, মনে হলো ওই অন্ধকারে একটা দলে, আমি অর্জুন কে দেখলাম। ওরকম লম্বা তো সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু মনে হলো ওর কি ইঞ্জিনিয়ারীং পড়ার বয়েস হয়ে গেল? এই তো কবে শুনলাম টেন্থ দেবে। ও নয় মনে হয়। আবার ভাবছি নাহ এতো ভুল তো দেখব না। ওকে চিনতে পারব না তা কি করে হয়? লাস্ট বার যখন ওকে দেখেছিলাম, ওর মুখ টা মনে করার চেস্টা করলাম। আর সাথে সাথেই চোখে ভেসে উঠল ওর হাসি মুখ টা, মায় গালে ওঠা একটা ছোট্ট পিম্পল অব্দি। আর আমি ওকে ভুল করব?

আমি ওকে হাঁ হয়ে দেখছিলাম। ফ্ল্যাশ ব্যাকের মতন সব মাথায় রিকল্ড হয়ে গেল। মার খাওয়া। পুকুর থেকে বাঁচানো। সন্ধ্যে বেলার ওর মায়ের সাথে ঝগড়া আর রাতে ওকে জড়িয়ে ধরে কান্না ও। রোজ সকালে উঠে হরলিক্স খাওয়া, দৌড়তে যাওয়া, সব কিছু।

আমি ফিরে গেলাম ওই জটলার কাছে। চার পাঁচ টা ছেলে রয়েছে। ওদের মধ্যে পিছনে বসে রয়েছে ও। মনের সুখে সিগারেট এ টান দিচ্ছে। আমি তো জানতাম ই না ও এখানে পড়ে। আমি গেটের ভিতরে চলে এলাম। কিকবক্সিং করতাম আমি তখন। মাথায় একটা ফেটি কিম্বা ক্যাপ আমার থাকত। তখনো ন্যাড়া মাথা আমার। সেদিনে মাথায় একটা ফেটি ছিল আমার সেটা খুলে ক্যাপ টা পরে নিলাম আমি। তখন ক্যাম্পাস এ ফুটবল ও খেলি ছেলেদের সাথে। সমস্যা হয় না। পাল্লা দিয়ে খেলতেও পারি। bangla golpo 2022

ও আমাকে দেখতে পায় নি তখনো, অন্ধকার তো রাস্তা টা। আর দোকানের সামনে আলো জ্বলছে। সব থেকে লম্বা সুঠাম চেহারা ওর। দূর থেকে ওকে চেনা যায়। ডাকব? নাহ সিগারেট খাচ্ছে। যদি লজ্জায় পড়ে যায়। কিন্তু ওর সাথে কথা না বলে কি ভাবে থাকব। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি, বাবাহ সেই ছোট ছেলে টা এখন সিগারেট ও খাচ্ছে। অপেক্ষা করলাম কিছুক্ষন। ওদের সিগারেট খাওয়া হয়ে গেলে ওকে ডাকলাম।

আমাকে দেখে বেশ অবাক হলো এতে কোন সন্দেহ নেই। চোখে অবাক হবার সাথে একটা খুশীর ঝলক। আনন্দ পেয়েছে সেটা ওর চোখে মুখে পরিষ্কার। ওর বন্ধু গুলো একটু অবাক। ও পরিচয় করিয়ে দিল আমাকে ওদের সাথে।

–     আমার মিমি।
মাসী বা ছোট মাসী বলল না। ও ওদের বন্ধু দের বিদেয় দিয়ে আমার সাথে হাঁটতে লাগল। বললাম
–     কোন স্ট্রিম এ আছিস
–     মেক। তুমি এখানে? bangla golpo 2022

–     পি এইচ ডি
–     বাহ। কোন হোস্টেল এ আছ?
–     আমি হস্টেল এ থাকি না। ওই যে আমার ফ্ল্যাট।
বলে আঙ্গুল তুলে আমি আমার ফ্ল্যাটের দিকে দেখালাম।

আমি জানি এখন ওদের সিঙ্গেল রুম নয়। ওকে বলে দিলাম, আমার সিঙ্গেল রুম ফ্ল্যাট এবং যথেষ্ট ভাল। ভিতরে সব কিছু ব্যবস্থা আছে। ওর অসুবিধা হলে যেন চলে আসে আমার রুম এ। আমার ভাই ওর বন্ধু। ও বলল আমার ভাই মানে, তুহিন এর সাথে ওর কথা খুব হয়। প্রায় ই ফোন করে একে অপর কে। ওকে দেখে যেন আমি বিহবল হয়ে গেছি। কেমন আছে সব ঠিক ঠাক আছে কিনা, কোনটার পরে কি জিজ্ঞাসা করব খেই হারিয়ে ফেলছিলাম। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, টাকা পয়সা আছে কিনা। ও সাড়া দিল না। আমি বললাম

–     কেন বাবার কাছ থেকে নিস না?
–     দিত আগে। কিন্তু এখন কমিয়ে দিয়েছে।
–     কেন?
–     জেনে গেছে আমি স্মোক করি। bangla golpo 2022

–     কটা খাস দিনে?
–     বেশী খাই না। হয়ত চার পাঁচটা হয়ে যায়। কিন্তু মায়ের ধারনা আমি অনেক খাই।
–     ড্রিঙ্ক করিস না তো?

–     নাহ এখনো অব্দি করিনি। তবে ইচ্ছে আছে
–     তবে রে দুষ্টু।
–     না না এখন না চাকরী বাকরী পেলে করব।

আমি জানি ও মিথ্যে বলে না। ওর জীবন দর্শন টা খুব সিম্পল। কিছু করলে লুকোয় না। আর নিজের করা কোন কাজ মেনে নিতে পিছুপা হয় না। আর কিছুই বেশি বাড়াবাড়ি করে না ও। আমি বললাম
–     খেলা ধুলা করছিস?
–     হুম , তবে আর ফুটবল খেলি না. bangla golpo 2022

–     তবে?
–     বক্সিং করি
–     তাই? আমিও কিক বক্সিং করি। একদিন চলে আয় রিং এ।

–     তুমি পারবে না আমার সাথে
–     ভারী তোর ক্ষমতা।
–     ঠিক আছে দেখো।

কিছুক্ষন গল্প করে আমি চলে এলাম আমার ফ্ল্যাট এ। নিজের পড়াশোনা নিয়ে মত্ত হয়ে গেলাম। তখনো নর্ম্যাল আর ভীষন ক্যাসুয়াল ছিলাম । রোজ ই গেটের বাইরে ওকে দেখি। খানিক গল্প করি আর চলে আসি নিজের ফ্ল্যাট এ। একদিন ওকে দেখলাম জিম এ। সকালে। আমি সাধারনত যেতাম খুব সকালে। আর ও হয়ত একটু পরে। সেদিনে আমার লেট হয়েছিল আর দেখা হলো। দেখলাম বক্সিং গ্লাভস পরে বসে আছে। আমার হয়ে গেছিল ওয়ার্ক আউট। ওর জন্য বসে গেলাম কিছুক্ষন। তারপরে ও বেরোলে দুজনে মিলে কচুরী তরকারি খেয়ে যে যার দিকে হাঁটা। bangla golpo 2022

বড় হয়েছে ও। বন্ধু বান্ধব কত কিছু হবে এই সময়ে। আমি চাইতাম না ওকে বেশি দেখা দিতে বা কথা বলতে। হয়তো ও অপছন্দ করে সেটা। হয়ত চায় না মিমি সারাক্ষণ পিছনে ঘুরঘুর করুক। এভয়েড ঠিক না কিন্তু ওই রাস্তা ঘাটে যত টুকু দেখা হতো তত টুকুই হত। এর বেশী আমি আর ট্রাই নিতাম না। সেই রকম ই একদিন দেখা হলো দুপুর বেলায় ও আর একটা বন্ধু। রাহুল। ছেলে টা কলকাতার ছেলে। দুজনাকেই বললাম

–     খেয়েছিস তোরা?
রাহুল বলল
–     হ্যাঁ আমি তো খেয়েছি, কিন্তু অর্জুন কোন দিনেই খায় না।

–     কেন?
অর্জুন ততক্ষনে রাহুল কে থামাতে চাইছে। রাহুল বলে দিল
–     মাসী জানিনা, ওকে আমি কোন দিন ও খাবার শেষ করে উঠতে দেখিনি। bangla golpo 2022

কথা শেষ ও হলো না। অর্জুন ওকে টেনে নিয়ে চলে গেল অন্য ক্লাসে। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম ওখানে। আমি তো চিরকাল ই একটু অন্যরকম। কেউ বলতে না চাইলে জানার কোন ইচ্ছে আমার হয় না। বুঝলাম অর্জুন ওকে কথাটা আমাকে বলতে দেবে না বলেই টেনে নিয়ে চলে গেল। ভাবলাম, বুঝুক গা ওর মা। আমি কি করব। আবার ভাবলাম হস্টেলে না থাকলে এই ব্যাপার গুলো তো ও শিখবে না ও কোন দিন।

হস্টেলে থাকা তো শুধু মজা আর মস্তি না। হস্টেলে থাকা একটা লার্নিং। একটা নিজের উপরে খোঁজ চালানো চার বছর ধরে। এই খোঁজ টাই তাকে স্ট্রং করে পরবর্তী জীবনে। কত কিছু শেখা। নতুন জিনিস এডপ্ট করা। হস্টেলে প্রতিটা মানুষ একা, কিন্তু দেখতে গেলে সবাই একসাথে। এই খোঁজ টা তো ওকেও পেতে হবে। শিখুক। আমি আর বেশি মাথা ঘামাবো না। কিন্তু ও খাওয়া দাওয়া করতে পারছে না, এই ভাবনা টা কে ফেলে দিতে পারলাম না। মনে কোন এক কোনায় রয়ে গেল। bangla golpo 2022

তারপর থেকে দেখা হলে, কোন দোকানে নিয়ে গিয়ে দুজনে খেতাম। বলা ভালো ওকে খাওয়াতাম। চিকেন বেশী করে। ভাবতাম হস্টেল এ যেটা পাচ্ছে না সেটা মাঝে মাঝে পুষিয়ে নিলে ঠিক আছে। জানিনা কেন, আমি যখন ই নিজের ঘরে খেতে বসতাম রাহুলের কথা টা আমার মনে পড়ত। – যে অর্জুন কিছুই খায় না। এই সব মুখ চোরা ছেলের বাইরে না বেরোনোই উচিৎ। ওর মা কিচ্ছু শেখায় নি ওকে।

বুঝতাম না কিছুই। কেন এই ভাবনা। এই আমার সমস্যা। অবসেসড হয়ে পড়ি। ব্যালান্স করতে পারছি না এখনো নিজের ভাবনার সাথে, নিজের মনে সাথে জীবনের। ভাবতাম গত তিন চার বছর তো আমার অর্জুনের কথা মনেও পড়ে নি। এখন ভাবছি কেন। ও তো তখনো এমনি ই ছিল। তখন আমার সমস্যা হয় নি এখন হচ্ছে কেন? ভাবলাম এখানে আমি আছি, ওর মা জানে, ওর কিছু হলে হয়ত ওর মা বলবে ছেলে টা কে দেখতে পারিস নি? সেই ভয়েই কি করছি আমি এমন? হতেও পারে। bangla golpo 2022

এই ভাবে চলল তো কিছু দিন। একদিন সন্ধ্যে বেলায় আমি ওকে দেখলাম না গেটের বাইরে। কিছু মনে হয় নি। ভাবলাম হয়ত আসে নি আজকে। পরের দিন সকালেও ওকে দেখলাম না জিম এ। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম। কি মনে হলো, ও যখন এলো না, ওর হস্টেলে গেলাম খুঁজে পেতে। অনেকক্ষণ পরে একটা ছেলে নেমে বলল,জ্বর এসেছে বেশ। নামতে পারছে না।

–     সেকী, ওষুধ খাচ্ছে না সেটাও খায় নি?
–     কি জানি।

বলে ছেলেটা চলে গেল। আমি আর রিস্ক নিলাম না। নিজেকে আর নর্ম্যাল আর ক্যাসুয়াল রাখতে পারলাম না। একেই খাওয়া দাওয়া করে না। তার পরে জ্বর। ওকে নিয়ে যাব আমার ফ্ল্যাট এ। কি ছেলে রে বাবা। একটু সাবধানে থাকতে হয় তো। এখানে তোর মা আছে? নাহ ওকে নিয়ে যাই, সারিয়ে আবার দিয়ে যাব এখানে। রাহুল কে ডাকলাম। ও এসেই আমাকে ওয়ার্ডেনের কাছে নিয়ে গেল হস্টেল ওয়ার্ডেন কে নিজের পরিচয় দিলাম। আমি যে ওর মাসী হই সেটা বলতেই ওকে ছেড়ে দিল আমার সাথে। রাহুল আর একটা ছেলে ওকে ধরে ধরে নামিয়ে নিয়ে আসতেই, আমি রিকশা করে ওকে আমার ফ্ল্যাট এ নিয়ে এলাম। bangla golpo 2022

বিছানায় শুইয়ে দিতেই জবুথবু হয়ে শুয়ে পড়ল। মনে মনে ভাবলাম ভাগ্যিস নিয়ে এলাম। গা একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। আমার কাছে ছিল প্যারাসিটামল। ওকে একটু গরম চা করে আর দুটো বিস্কুট খাইয়ে, ওষুধ টা গিলিয়ে, বেড়িয়ে পড়লাম, ডাক্তারের খোঁজে। আমাদের জিমের যে ইন্সট্রাক্টার তার একজন বন্ধু ছিল ডাক্তার। তাকে পেলাম, সে এলো আমার সাথে। ওকে চেক করে বলল,

–     সাধারন জ্বর। ভাইরাল। ওষুধ দিচ্ছি ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু একটু ভোগাবে। সাবধানে রাখতে হবে।

ডাক্তার কে বিদায় দিয়ে, টাকা পয়সা মিটিয়ে, ওষুধ গুলো কিনলাম।একটা থার্মোমিটার কিনলাম। কিছু ফল কিনলাম। বেশ কিছু ডিম নিয়ে নিলাম। আর চিকেন কিনলাম। হয়ে যাবে আশা করি। বাড়িতে এসে দেখি, জ্বর টা কমেনি। আমি ওকে পাউরুটি আর ডিম সিদ্দ খাইয়ে, ওষুধ দিয়ে শুইয়ে দিলাম। প্যারাসিটামল আগেই দিয়ে রেখেছিলাম আমি। bangla golpo 2022

ভাবলাম পরের ছেলে, ওর বাড়িতে খবর দিয়ে দেওয়াই ভাল? তারপরে ভাবলাম, ওর মা চলে আসবে। ওকে নিয়ে যাবে। এই অবস্থায় মুভ না করানোই ভাল।  দেখি কাল অব্দি না কমলে খবর তো দিতেই হবে। আমি রান্না করে নিলাম। খুব যে ভাল করতে পারি সেই নিয়ে কোন বিশ্বাস আমার ছিল না। কেউ তো শিখিয়ে দেয় নি রান্না আমাকে। আর আমার রান্না কেউ খায় ও নি আজ পর্যন্ত। যে, ভালো কি মন্দ কিছু জানব। খুব হালকা চিকেন আলুর ঝোল আর ভাত। ওর জন্য একটু উচ্ছে সিদ্দ। জ্বর টা কিছু বাদেই দেখলাম কমে গেল। ওকে বললাম স্নান করতে হবে না তোকে আজকে। কালকে জ্বর টা না এলে স্নান করিস। উত্তরে বলল

–     খিদে পেয়েছে।

খেলো, বলতে নেই অনেক টা ভাত। আমি দেখলাম একে এখন হস্টেলে ছাড়া যাবে না। থাকুক কিছু দিন এখানে। ওর তো কোন কিছু তেই না নেই আর হ্যাঁ ও নেই। বিশেষ করে খাওয়া দাবার ব্যাপারে। উচ্ছে সিদ্দ টাই খেল অনেক টা। দুপুরে খেয়ে দেয়ে আমার ঘরে থাকা একটা দুটো গল্পের বই পড়ল। দুপুরে ফল কেটে দিলাম খেল। আমি চাইছিলাম, তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক ছোঁড়া। bangla golpo 2022

ও একটু ভালো আছে দেখে ওকে বেরোতে মানা করে আমি গেলাম ক্লাস এ। পি এইচ ডির কাজ তখন ফুল ফ্লেজড চলছে আমার। সময় নষ্ট করার সামান্য ও সময় নেই। ফিরে আসছিলাম তাড়াতাড়ি। ভুলে গেছিলাম বাড়িতে অর্জুন আছে। আর ও অসুস্থ। ভাবলাম রান্না করাই আছে। রুটি নিয়ে নি অর্জুনের জন্য। জ্বর গা, ভাত খাওয়া ঠিক হবে না রাতে। রুটি কিনে ঢুকে দেখি, আরো একটা ছেলে এসেছে। রাহুল।

বলল
–     ওই যে মাসী এসে গেছে। এবারে আমি যাই। আর কোন বই লাগলে বলিস দিয়ে যাব।
–     আর বেসিক ইলেক এর নোটস?
–     কালকে সকালে দিয়ে যাব, না হয় মাসীর ডেপ্ট এ দিয়ে আসব মাসীর কাছে। bangla golpo 2022

কিছু খেয়ে যেতে বললাম। খেলো না রাহুল। আমাকে বলল
‘- মাসী ওকে এখানে এনে ভালো করেছ তুমি। আমার চিন্তা হচ্ছিল। থ্যাঙ্ক ইউ।
রাতে খাইয়ে দাইয়ে ওকে বললাম
–      চুপ করে ঘুমোবি। পড়াশোনা দুদিন থাক। আর হ্যাঁ আমি জানি রাহুলের আসার কারনের মধ্যে সিগারেট নিয়ে আসাও একটা কারন। এখন নো স্মোকিং, মনে থাকবে?

কোন কথা বলল না ও। ঘাড় নাড়ল। ওকে শুইয়ে দিলাম মশারী টাঙিয়ে। আর আমি বাইরে ডাইনিং এ আসন পেতে পড়তে বসলাম। মাঝে মাঝেই উঠে দেখে আসছিলাম গায়ে জ্বর আছে নাকি। রাত তখন দুটো, গায়ে হাত দিয়ে বুঝলাম জ্বর টা আসছে। পায়ের পাতাও ঠান্ডা মনে হলো। ওকে তুলে প্যারাসিটামল খাইয়ে দিলাম আমি। ওকে চাপা দিয়ে দিলাম, একটা কম্বল ছিল আমার সেটা দিয়ে । আধ ঘন্টা বসলাম পাশে। দেখলাম একটা সময়ে ঢাকা টা পা দিয়ে ঠেলে সরিয়ে দিল। বুঝলাম ঘামছে ও। জ্বর টা নামছে। bangla golpo 2022

জ্বরের সময়ে করণীয় ব্যাপার গুলো সব আমি জানি। ছোট বেলায় জ্বর আসলে আমার ট্রিট্মেন্ট নিজেই করতাম। ছোড়দি চলে যাবার পরে আমি তো কাউকে বলতাম ও না এই রকম কিছু হলে। মায়ের অতো সময় ছিল না অতো গুলো ছেলে মেয়েকে ধরে ধরে জ্বরের সময়ে কাছে নিয়ে শোবার। আর তাছাড়া, আমি গ্র্যাজুএশন থেকেই একলা থাকি। কাজেই এই ব্যাপার গুলো জানতাম।

আমি ফ্যান টা হালকা চালিয়ে দিয়ে, বাইরে এসে পড়তে বসলাম। জানিনা হয়ত চোখ টা লেগে গেছিল পড়তে পড়তে। চোখ টা খুলল

–     গুড মর্নিং মিমি

তাকিয়ে একলাম সেই এক গাল হাসি আর এক হাতে একটা কাপ অন্য হাতে একটা গ্লাস।

–     গুড মর্নিং। উঠে পরেছিস কেন? দেখি! bangla golpo 2022

বলে কপালে হাত দিতেই বুঝলাম, জ্বর নেই। ঠান্ডা ওর গা। ও বলল

–     জ্বর নেই গো বাবা। জ্বর হলে আমার কোন হুশ থাকে না। মা কে জিজ্ঞাসা কোর বলে দেবে। কিন্তু তোমার না একটাই কাপ, তাই গ্লাসে চা টা আনতে হলো।

আমি ওকে দেখছিলাম। ওর হাত থেকে গ্লাস টা নিতে গেলাম। ও কাপ টা নিতে বলল আমাকে।

–     কেন? কাপে তুই খা
–     না না গ্লাস টা গরম তুমি পারবে না হাতে নিতে।
–     আর তুই খুব পারবি? তুই আমার ছেলে না আমি তোর? দে গ্লাস টা আমাকে।

বলে একবারে ছিনিয়ে নিলাম গ্লাস টা । উফ সত্যি গরম। মেঝেতে রেখে দিলাম গ্লাস টা। ওকে আসন টা এগিয়ে দিলাম আমি। বললাম, খালি মেঝেতে বসিস না। এই আসনে বস। ও বলল,

–     ঘরে চল। এখানে বসার ই বা কি দরকার. bangla golpo 2022

ঘরে গিয়ে মশারী তুলে দুজনে চা খেতে বসলাম। সকাল হচ্ছে আসতে আসতে। বড্ড ভাল লাগছে। জানি না কেন।
সেই দিন টা খুব ব্যস্ত ছিলাম। সেই অবস্থাতেই ফাঁকে ফোঁকরে, স্যার এর স্কুটি টা নিয়ে ওকে দেখে আসছিলাম আমি। রান্না করে দিয়ে এসেছিলাম সকালেই। শুধু ওকে নিয়ে খেয়ে নিতে হতো। জ্বর টা আসে নি। তাও, আমি যাচ্ছিলাম ওষুধের সময় গুলো তেই, খাইয়ে দিয়ে আসছিলাম ওষুধ।

সন্ধ্যে বেলায় ফিরে ওর সাথেই সময় কাটালাম আমি। ওর সাথে গল্প করে। আমার মা দিদিরা বলে ও কথাই বলে না একদম। কই সে রকম না তো। কত কথাই তো বলল, পুটুর পুটুর করে। কম কথা বলে কিন্তু বলছিল কথা। সাবজেক্ট ডেপথ মারাত্মক। কিন্তু জীবন সম্পর্কে বেশী জ্ঞান না থাকলেও, কথা মন্দ বলে না ও। ওকে আমার ছোট থেকেই ভালো লাগত। কিন্তু আজকে যেন নতুন করে একটা ভালো লাগা তৈরি হলো। bangla golpo 2022

এমন নিঃশব্দ ঘুম আমি কারোর দেখিনি। এতো কাছ থেকে ওকে দেখিনিও আগে আমি। ও ঘুমোল আর আমি সারা রাত পড়ার নাম করে লাইট জ্বেলে আমি ওকে দেখলাম। ভগবান ওকে অনেক যত্ন করে তৈরি করেছে। নিখুঁত শরীর। না না, উপর থেকেই দেখছি। লম্বা নাক। পুরুষালী কিন্তু বেশ মিস্টি একটা মুখ। গালে হালকা দাড়ি। হালকা গোঁফের রেখা। পেশীবহুল নয় কিন্তু শক্তিশালী হাত। এই শক্তিশালী হাতের পরিচয় আমি পেয়েছি জিম এ। এদিকে কাত হয়ে, হাত দুটো কে বুকের কাছে জড় করে স্টাইল করে ঘুমোচ্ছে।

কেমন লাগলো গল্পটি ?

ভোট দিতে হার্ট এর ওপর ক্লিক করুন

সার্বিক ফলাফল / 5. মোট ভোটঃ

কেও এখনো ভোট দেয় নি

Leave a Comment